ভৈরবসহ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন থানার সার ডিলাররা মোটা দানা ইউরিয়া সার নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। এই জেলার কৃষকদের কাছে আশুগঞ্জ সার কারখানায় উৎপাদিত চিকন দানার ইউরিয়া সারের চাহিদা থাকলেও কারখানাটি প্রায় ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকায় চিকন সার পাচ্ছেন না কৃষকরা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যুতের অভাব পূরণে কারখানায় গ্যাস বন্ধ রাখায় সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বিদেশ থেকে মোটা সার আমদানি করে এখন কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত ছয় জেলার প্রায় ৮০০ ডিলারকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডিলারদের অভিযোগ, বিদেশি মোটা ইউরিয়া সার বস্তায় ওজন কম এবং জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে গেছে। ফলে এসব সার কৃষকরা ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন না। কিশোরগঞ্জ জেলায় শনিবার পর্যন্ত এক হাজার ৬৭৮ মে. টন (৩৩৫৬০ বস্তা) ইউরিয়া অবিক্রীত অবস্থায় মজুদ রয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্র জানায়। জেলা বি এফ এ এর সাধারণ সম্পাদক আবদুল হেকিম জানান, এই জেলার ডিলারদের প্রায় আড়াই কোটি টাকার সার মজুদ পড়ে আছে।
ডিলাররা আরও অভিযোগ করেন, আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে সার সরবরাহে চলছে চাদাঁবাজি। কারখানা থেকে সার সরবরাহ নেয়ার সময় ডিলারদের প্রতিটি ট্রাকে ৫/৬ শ টাকা ঠিকাদারের লোকদেরকে চাঁদা দিতে হয়। মোটা দানার সার সরবরাহ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় গত শনিবার সকালে সার ব্যবসায়ী সংগঠন বি এফ এ ও আশুগঞ্জ ট্রাক মালিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে একটি সভা হয়। এ সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় কারখানাটি চালুর ব্যাপারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জোতিষ্য চন্দ্র রায় জানান, সরকারি সিদ্ধান্তে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। তাই পুনরায় সরকারি নির্দেশে গ্যাস সরবরাহ দিলেই কারখানা চালু হবে। কবে গ্যাস সরবরাহ দেয়া হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে তিনি বলতে পারেননি। উপস্থিত নেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদাবাজির ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলেন সভায় তিনি জানান।
বর্তমানে ওই কারখানায় বিদেশি প্রায় ৭৭ হাজার মে. টন সার মজুদ থাকলেও ৬৩ হাজার মে. টন সারই মোটা দানার। আর ১৪ হাজার মে. টন বিদেশি চিকন দানা সার মোটা দানা সারের নিচে পড়ে রয়েছে বলে ডিলারদের চিকন সার সরবরাহ দেয়া যাচ্ছে না। ফলে কিশোরগঞ্জ জেলাসহ ছয় জেলায়ই গত কয়েক মাস ধরে মোটা সার সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। আশুগঞ্জ সার কারখানাটি চালু হলে এই অঞ্চলের কৃষকরা চিকন সার পাবে।
বি এফ এ কিশোরগঞ্জ জেলার সহসভাপতি শীতল কুমার সাহা বলেন, মোটা সার নিয়ে আমাদের ডিলাররা বিপদে আছেন। কোটি কোটি টাকার সার এ জেলায় মজুদ থাকলেও কৃষকরা সার নিচ্ছেন না। অনেক কৃষক পাশের নরসিংদী বা অন্য কোনো জেলা থেকে চিকন সার আমদানি করে জমিতে ব্যবহার করছে।