ঢাকা: আবার আলোচনায় জুনায়েদ বাবুনগরী। দীর্ঘ বিরতির পর আবার সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি। সরকারের বিভিন্ন সমালোচনাও করছেন। তবে এখন আর তার বক্তব্যে সরকারের কঠোর সমালোচনা নেই। নেই আন্দোলন-সংগ্রামের হুঙ্কার।
গত শনিবার চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিয়েছেন বাবুনগরী। বক্তব্যে তিনি বলেছেন, আমরা সরকারের বিরুদ্ধে নই। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা নিয়ে আন্দোলন করছি না। তবে আমরা নাস্তিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি।
দাবি আদায়ে বেশ কিছু কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে হেফাজকে ইসলামের পক্ষ থেকে। কিন্তু আগের মতো তার অগ্নিমূর্তি দেখা যাচ্ছে না। অনেকটা নরম হয়ে গেছেন তিনি।কর্মসূচিও দিয়েছেন নরম।
সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের পর প্রকাশ্যে আন্দোলনে আসে হেফাজতে ইসলাম। বিভিন্ন দাবিতে মাঠ গরম করে রাখে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এতে বাবুনগরীর ভূমিকাই বেশি ছিলো বলে জানা যায়। রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে সমাবেশ এবং ঢাকা অবরোধের মতো কর্মসূচি করে ব্যাপক আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম।
শাপলা চত্বরের ঘটনায় বাবুনগরী জেলও খেটেছেন। এরপর জামিনে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতলে থেকেছেন বেশ কিছু দিন।এখন অনেকটা সু্স্থ হয়েছেন তিনি। তবে সরকারের বিভিন্ন দিকের চাপে এবং মামলার কারণে বাবুনগরী চুপসে গেছেন। ব্শে কয়েকমাস কোনও সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি তাকে। তার ঘনিষ্টরা বলছেন, এখন থেকে বিভিন্ন সমাবেশে অংশ নিলেও তিনি আর সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর হতে চান না।এবং কঠোর কোনো কর্মসূচিও দিতে চাইছেন বাবুনগরী।
১৩ দফা দাবি আদায়ে নরম কর্মসূচির মধ্যে আছে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুধী সমাবেশ, ২৫ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা প্রসাশক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্বারকলিপি দেয়া,থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন, পূর্ণাঙ্গ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড গঠন, ১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর সারাদেশে শানে রিসালত সম্মেলন, ১২ থেকে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রামে ইসলামী ওলামা মাশায়েখ জাতীয় সম্মেলন। ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ১৩ দফা দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান হেফাজত নেতারা।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের ২০১ সদস্যের মজলিসে শুরা গঠন করা হয়। এদের থেকে ২৫ জন নেতাদের নিয়েই গঠন করা হয় নীতি নির্ধারণী পরিষদ। পরিষদের আমির থাকছেন হেফাজতের প্রধান আহমদ শাহ্ শফী এবং মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাননি বিএনপির শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ। আরও বাদ পড়েছেন চট্টগ্রামের আলোচিত নেতা মাওলানা রুহি। এই নেতার সঙ্গেও বিএনপি-জামায়াত জোটের ঘনিষ্ট সম্পর্ক আছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের প্রচার বিভাগের প্রধান আহলুল্লাহ ওয়াসেল। তিনি দাবি করেন, এরআগেও তাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে ছিলো না। কিন্তু কেন সরকার পদত্যাগের দাবি তুলেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার নাস্তিক-মুরতাদদের পক্ষ নেওয়ায় এবং আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ায় আমরা সরকারের পদত্যাগ চেয়েছিলাম। হেফাজতে ইসলাম এ দাবিতে এখনও অনঢ় আছে বলে দাবি করেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/এমএম/…ঘ.)