logo ১০ মে ২০২৫
রাজপথ দখলের লড়াই: শ্যেনদৃষ্টি ২৫ অক্টোবরে
কিরণ সেখ, ঢাকাটাইমস
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ১২:২৫:৩৩
image


ঢাকা: দেশের সবার দৃষ্টি এখন ২৫ অক্টোবরের দিকে। ওই দিন সরকার ও বিরোধীদল উভয়ই রাজপথ দখলের ঘোষণা দিয়েছে। এমনকি ওই দিন যুদ্ধের কথাও বলা হচ্ছে। যা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক জোটের দুই শিবিরের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হচ্ছে।





২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শেষ দিনের আগের কয়েক মাসও একই রূপ ধারণ করেছিল। দুই দলই তাদের দাবি নিয়ে অনড় ছিল। ওই দিন দুই জোটই রাজধানীসহ সারাদেশে রাজপথে নেমে আসে। যার কারণে সারাদেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। সংঘাতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়। বর্তমানে সেই একই রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দিন যত গড়াচ্ছে  মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।





গত ১৫ সেপ্টেম্বর রংপুরে ১৮ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্তমান সরকারের কার্যক্রম পর্যাবেক্ষণ করা হবে। সরকার যদি দাবি না মানে তাহলে ওই দিন থেকে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি।



এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে নিউমার্কেট থানা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা শহর দখল করে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালানো হবে। নেতাকর্মীদের প্রস্তÍুত থাকার আহবানও জানান তিনি। রাজপথে থেকে বিএনপির সকল কর্মকা- প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।





সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল।



তত্ত্বাবাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করতে প্রয়োজনে তার চেয়েও কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের অধীনে নির্বাচন করলে বিএনপি তাতে অংশ নেবে না। নীরব দর্শকও হয়েও থাকবে না।





২৫ অক্টোবরের আওয়ামী লীগের রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণার বিষয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ আলম লেলিন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, ইতিপূর্বে ১৮ দলীয় জোটের সরকার পতনের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেখেছি। কিন্তু তাদের সেই আল্টিমেটামের কোন ফলাফল দেখতে পাইনি। তাই তাদের কোনো কর্মসূচিতেই আওয়ামী লীগ ভয় পায় না।





তিনি বলেন, হুমকি তারা এর আগেও দিয়েছে, বর্তমানেও দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের হুমকি-ধামকিতে ভীত নয়, এবং ভবিষ্যতেও এর কোন প্রভাব আওয়ামী লীগের ওপর পড়বে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধানের অধীনেই হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগও নেই, পথও নেই।





বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাকিস্তানের আমলে দেশে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো বর্তমানে সেই যুদ্ধই চলছে। বাংলাদেশের জনগণ আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়ার দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র যেভাবে প্রতিহত করেছিলো সেই একইভাবে জনগণ ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রুখে দাঁড়াবে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ২৫ অক্টোবরের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পৃক্ত করতে বাধ্য করা হবে।





প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠার মিছিল নিয়ে রাজপথ দখল করেছিল। তৎকালীন সদ্য বিদায়ী চারদলীয় জোটও রাজপথ দখল করে সমাবেশের ডাক দেয়। দুই দলের রাজপথ দখলের কারণে রাজধানীসহ সারাদেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন রাজধানীতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছিলেন। দুই দলের অনড় অবস্থান এবং ওই সংঘাত পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেনের পথ সুগম করেছিলো।

 



(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/কেএস/এএসএ/জেডএ/১২.২৬ঘ.)