ঢাকা: গত পাঁচ বছরই ডা: দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চাঁদপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত এই সাংসদের আয় গত পাচ বছরে বেড়েছে ১৪ গুণেরও বেশি। এবারও তিনি বিনাপ্রতিদ্ধন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পথে। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা পরখ করে দেখা যায় ২০০৮ সালে তার আয় দেখানো হয় পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে সাড়ে ৮৪ লাখ টাকা।
গত পাঁচ বছরে সাবেক এই মন্ত্রীর মোট আয় বেড়েছে ৮৪ লাখ ৫২ হাজার ১৫১ টাকা। বর্তমানে নিজের নামে ৩৩ লাখ টাকার ১০ কাঠা জমি ও ৯ লাখ টাকার স্বর্ণসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে মোট ১ কোটি টাকার উপরে।
জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে ডা. দীপু মনির পেশা থেকে বছরে ৩ লাখ টাকা আয় দেখানো হয় এবং অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে নগদ ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগে বার্ষিক আয় ছিল ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
নবম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি হয়েই পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রীর চেয়ারে বসার সুযোগ হয় তার। সেই সুবাদেই তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ইতিমধ্যে তার বিদেশ ভ্রমন একটি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বলেও খবর এসেছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীপুমনির মতো চাঁদপুর জেলার সকল প্রার্থীই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৪ জনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।
অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে তার স্বামীর সম্পদ বেড়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং সাথে যুক্ত হয়েছে একটি ডব্লিউডিভি গাড়ি। বর্তমানে তার স্বামীর মোট ৯৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে।
তবে এবার পেশা হিসেবে ডা. দীপু মনির কোন আয় উল্লেখ করা হয় নি। এবার তার আয় দেখানো হয়েছে শুধু মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত পারিতোষিক ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। আগে ব্যাংকে তাদের কোন টাকা না থাকলেও পাঁচ বছর পরে এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে আছে ১৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৮ টাকা। শেয়ার ও বন্ডে স্বামী-স্ত্রী কারো নামে কোন বিনিয়োগ না থাকলেও সঞ্চয়পত্রে নিজের নামে আছে ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৩ টাকা।
অন্যদিকে স্থাবর সম্পদের মধ্যে পাঁচ বছরে তার নিজের নামে ৩৩ লাখ টাকা দামে ১০ কাঠা অকৃষি জমি যুক্ত হয়েছে। তার অস্থাবর সম্পদ নগদ কমেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে নিজের নামে নগদ আছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৫ বছরে তার মোট আয় বেড়েছে ৮৪ লাখ ৫২ হাজার ১৫১ টাকা।
অন্যদিকে অস্থাবর সম্পদ তার স্বামীর নামে আগে ছিল ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে তা কমে দাড়িয়েছে ৪ লাখ টাকা।
২০১২-১৩ অর্থ বছরের আয়কর রিটার্ন তথ্য অনুযায়ী স্বামীর নামে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা আছে।
বর্তমানে শেয়ার ও বন্ডে সঞ্চয়পত্রে স্বামীর নামে কিছু উল্লেখ নেই। নিজের নামে বাস, ট্রাক, মটরগাড়ি ও মটরসাইকেল ইত্যাদির বিবরনীতে ২০০৮ সালের ন্যায় মাত্র ১ লাখ টাকা উল্লেখ থাকলেও স্বামীর নামে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ‘ডব্লিউডিভি’।
নিজ নামে আগে মাত্র ১ লাখ টাকার স্বর্নের স্থলে এখন স্বর্ন আছে ৯ লাখ টাকার। তবে আগে স্বামীর নামে ৫০ হাজার টাকার স্বর্ন থাকলেও এবার ঘরটি ফাঁকা রয়েছে। আসবাবপত্র নিজ নামে আগে ছিল ৫০ হাজার টাকা। এখন তার ™দ্বিগুন হয়ে ১ লাখ টাকা হলেও স্বামীর নামে ৫০ হাজার টাকা অপরিবর্তিত আছে।
এছাড়াও অন্যান্য হিসেবে স্বামীর নামে আছে আরো ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আর স্বামীর নামের আগের ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা অকৃষি জমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করে একই দামে এবার দুটি ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার দায়-দেনার ঘরে লেখা হয়েছে প্রযোজ্য নয়।
স্থাবর-অস্থাবর সব মিলিয়ে শুধু দিপু মনির নামেই রয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ২ হাজার ১৫১ টাকার সম্পদ এবং স্বামীর নামে রয়েছে ৯৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকার সম্পদ।
(ঢাকাটাইমস/ ২৮ ডিসেম্বর/ বিআই/ এআর/ ঘ.)