logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
বিএনপির কথা বলার অধিকার নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ১৮:২৯:১১
image


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এর আগেও তিনি গতবছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। দশম জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাথে।

নিচে পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:


ঢাকাটাইমস: ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিরোধীদল জাল ভোট ও প্রহসনের নির্বাচন বলছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: বিরোধীদল জাল ভোটের অভিযোগ করবে, প্রহসনের নির্বাচন বলবে, এসব বলাটা খুবই স্বাভাবিক। তবে নির্বাচনে না গিয়ে এসব কথা বলা অনর্থক। জগণের সামনে কিছু একটা বলতে হবে তাই তারা এসব কথা বলছে।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদলের বক্তব্যকে আপনি কি অযৌক্তিক মনে করেন?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: নির্বাচনে যেহেতু বিরোধীদল অংশ নেয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার প্রাথমিক অধিকার তাদের নেই। নির্বাচন সরকার যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে করবে। বিরোধীদলের তো চিন্তার কোন কারণ নেই। নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের কথা বলার অধিকার থাকতো। তখন সমালোচনা করা যেতো। কিন্তু তারা শুরু থেকেই  নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা করেছে। মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে এজন্য সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচনের আগে একশ’র বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে কথা বলা বেমানান।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তাহলে কি ভিত্তিহীন?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: বর্তমানে মিডিয়া অনেক শক্তিশালী। এজন্য কারো পক্ষে নির্বাচনে কারচুপি করা সম্ভব নয়। প্রহসনের নির্বাচনেরও কোন সুযোগ নেই। মিডিয়ার অগ্রণী ভূমিকার কারণে বর্তমানে এসব করা সম্ভব নয়। বিরোধীদল নির্বাচনে গেলে অনেক  সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। বিশ্ববিদ্যালয়েও বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকরা নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা তা করতে দেইনি।

ঢাকাঢাইমস: বিরোধীদল ছাড়া নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: এতকিছুর পরও নির্বাচন সম্পূর্ণ সার্থক হয়েছে বলে মনে করি। নির্বাচনটা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জও ছিল বটে। যেহেতু তারা বানচালের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ আসেনি, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি- এসব কথা বলে কোন লাভ নেই।

ঢাকাটাইমস: অনেকেই বলছেন দশম জাতীয় নির্বাচন ছিল নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। আপনি কি তাই মনে করেন?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: নির্বাচন নিয়ম রক্ষা ছিল নাকি আনুষ্ঠানিকতা ছিল তা বলতে পাপরবো না। যারা রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষণ করেন তারা বিষয়টি নিয়ে ভালো বলতে পারবেন।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচনের পর গঠিত সরকারের স্থায়িত্ব কতদিন হতে পারে বলে মনে করেন?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার টিকে থাকবে কিনা এটা বলা মুশকিল। এটা রাজনীতি বিশ্লেষকরা ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি মনে করি এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

ঢাকা টাইমস: বিশ্ব মিডিয়াও নির্বাচন নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছে। আপনার মত কি?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: বিশ্ব মিডিয়া নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করেছে এটা সত্য। তবে বর্তমান সময়ে নানা উপায়ে অনেক মিডিয়াকেই ম্যানেজ করা সম্ভব। লবিং ও টাকা পয়সার মাধ্যমে অনেক কিছুই করা যায়। যারা নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করছে ইরাকে আক্রমনের সময় তাদের মুখ বন্ধ ছিল। লাদেনকে যখন মেরে ফেলা হয়েছিল তখন তারা কোথায় ছিল। লিবিয়া আক্রমনের সময় কোথায় ছিল। বিশ্ব মিডিয়া কি বলে না বলে এ ব্যাপারে অনেকের ধারণাই স্পষ্ট।

ঢাকাটাইমস: তারেক রহমান সমঝোতায় না গিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা বলছেন। তার এরকম ঘোষণায় কি সহিংসতা আরো বাড়বে?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: বিএনপির মূল সমস্যা হলো তারেক রহমান ও জামায়াতে ইসলামী। অনেকেই বলছেন তারেক জিয়ার কারণে চলমান সমস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত কথোপকথোনে তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তারেক জিয়ার জন্যই বিএনপির ভরাডুবি হয়েছে। দেশের জনগণের কাছে তার কথার গুরুত্ব নেই।

ঢাকাটাইমস: দশম সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা একাদশ সংসদ নিয়ে আলোচনার কথা বলছেন। আলোচনা হলেও কতটুকু ফলপ্রসূ হবে?

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ: সমঝোতার জন্য একাদশ সংসদ নিয়ে শেখ হাসিনা আলোচনার কথা বলেছেন। তবে এই আলোচনায় কোন সমাধান হবে কিনা রাজনীতিবিদরা ভালো বলতে পারবেন।

অনুলিখন: মানিক মোহাম্মদ