logo ০৪ মে ২০২৫
রাজপথ চাঙ্গা করতে আসছে ছাত্রদলের নতুন কমিটি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২১ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:২২:০৬
image


ঢাকা: বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রাজপথে এই সংগঠনটির টানা ব্যর্থতায় হতাশ দলের হাইকমান্ড। নতুন এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চাঙ্গা করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দলটি এবং এরই অংশ হিসাবে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি করার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। খালেদা জিয়ার গুলশান অফিস ও ছাত্রদল সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি হওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পদের লোভে নিজেদের মতো করে রাজপথে সরব হতে শুরু করেছে। সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদাভাবে শো-ডাইন করে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে।

নতুন করে যে কমিটি হতে যাচ্ছে তাতে সিনিয়রদের স্থান হবে নাকি তুলণামূলক কম সিনিয়রদের নিয়ে আসা হবে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে বর্তমান কমিটিতে পদ পাওয়ার পর যারা রাজপথে আন্দোলন করার চেষ্টা করেছে তাদেরকে মূল্যায়ণ করা হবে বলে জানা গেছে।

সুত্র জানায়, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১০১ সদস্য হওয়ার কথা থাকলেও ২৯১ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটিতে পদ পাওয়ার পর যারা একদিনও রাজপথে নেমে আন্দোলন করেননি ইতিমধ্যে তাদের তালিকা করা হয়েছে।

নতুন কমিটির ক্ষেত্রে ত্যাগীদেরকে মূল্যায়ণ করে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় রাখার চিন্তা রয়েছে বিএনপির হাই কমান্ডের। কমিটিতে পদ পেতে ইতিমধ্যে লবিং তদবির শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশীরা।

সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পদ প্রত্যাশী অনেকেকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে শো-ডাউন করতেও দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পর একত্রিত হওয়ার পরও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের ভিন্ন ভিন্নস্থানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

ছাত্রদলের কর্মীরা জানান, গত কমিটির মতো এবারও যদি ব্যাবসায়ী, সন্তানের পিতা ও অযোগ্যদের স্থান দেয়া হয় তাহলে আবারো আন্দোলনে ব্যর্থতার পরিচয় দিবে ছাত্রদল। এক্ষেত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থী অথবা তুলণামূলক কম সিনিয়রদের দিয়ে কমিটি করলে রাজপথে নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখা সম্ভব হবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে পদপ্রত্যাশী কয়েকজন বলেন, বর্তমান কমিটির যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন এমন কথা তাদের বলার কোন সুযোগ নেই।

ঢাবি হল শাখার পদ প্রত্যাশী কয়েকজন কর্মী জানান, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ছাত্রদলের নেতারা প্রকাশ্যে আসেনি। এর আগে হরতাল অবরোধের ঘোষণা হলে অনেকেই মোবাইল বন্ধ করে রাখতেন। যারা এসব কাজ করেছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও হল কমিটি না হওয়ায় সংগঠনটিতে কর্মী সঙ্কট দেয়া দেয়। ফলে ক্যাম্পাসেও বড় কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি ছাত্রদল। তবে ঢাবির সুপার ফাইভের কমিটি দেয়ার পর বেশ কয়েকবার ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা চালায় নেতাকর্মীরা।

ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিশ্চিত করতে ঢাবির হল কমিটি গঠনের তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দেয়ার পরও এটা নিয়ে নানা নাটকিয়তা দেখা দেয়। পরবর্তীতে ভাগ ভাটোয়ার দ্বন্দ্বে আটকে যায় কমিটি। এজন্য তৃণমূলের কর্মীদের পাশে পায়নি ছাত্রদল। ফলে খালেদা জিয়ার ও ভিডিও বার্তায় তারেক রহমানের ঘোষণার পরও কোন কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, বর্তমান কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলকে গত ৬ ডিসেম্বর উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ এবং ১৭ নভেম্বর দলটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিবকে শান্তিনগরের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তাদের গ্রেফতারের পর সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসিরকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার হন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবেদ। তাকে গ্রেপ্তারের পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সহ-সভাপতি ও ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।

পদ পাওয়ার পর তিনিও মোবাইল ফোন বন্ধ করে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ফলে দিকনির্দেশনার অভাবে রাজপথের আন্দোলন করতে পারেনি তারা।

(ঢাকাটাইমস/ ২০ জানুয়ারি/ এমএম/ এআর/ ঘ.)