logo ০৪ মে ২০২৫
পাবলিক ভার্সিটিতে ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা বঞ্চিত
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
৩০ জানুয়ারি, ২০১৪ ১০:৩৯:৫৯
image


ঢাকা: দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৮০ শতাংশই আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এক হিসেবে দেখা গেছে, দেশের ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ ভাগ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। আর বাকি ৬৮ ভাগ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধার বাইরে অবস্থান করছে। তারা মেস কিংবা বাসা ভাড়া করে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।  ফলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে করতে বেগ পেতে হচ্ছে অনেক মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত পরিবারের সন্তানদের।

এদিকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি শুরু হয়ে গেছে। খুব শিগগিরই ক্লাশও শুরু হবে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসব শিক্ষার্থীরা কোথায় কীভাবে থাকবে সে চিন্তা এখনই পেয়ে বসেছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের। শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি পরিশোধের পর বাসা ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এসব অতিরিক্ত অর্থ যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবার। অনেক গরিব পরিবার তাদের সন্তান ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পর খরচ যোগাতে না পেরে তাদের সন্তানদের এলাকার কোন কলেজে ভর্তি করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর গাড়ি ভাড়া বাবদ কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। সবমিলিয়ে এক হ-য-ব-র-ল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে আবাসন খাতে।

এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও আবাসন সংকট চরমে। ৩২ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ ভাগ আবাসান সুবিধা পাচ্ছেন। আর বাকি ৭৫ ভাগই আবাসিক সুবিধার বাইরে অবস্থান করছেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৬ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। বাকি ৮৪ ভাগই আবাসন সুবিধা বঞ্চিত। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারিদের মধ্যে ১৯ শতাংশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। আর বাকি ৭৯ ভাগই আবাসন সুবিধা বঞ্চিত থাকছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের। তাদের মাত্র ১২ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। আবাসন সুবিধা বঞ্চিত থাকছে বাকি ৮৮ ভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১টি হল রয়েছে।  শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৭ হাজার ১০১ জন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। মোট শিক্ষার্থীর ৫৭ ভাগ। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক আছেন ১ হাজার ৪৪২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৬৮৮জন। শতকরা ৩৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭টি হল রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৬ জন। এদের মধ্যে ৭ হাজার ৬৩৮ জন শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে। মোট শিক্ষার্থীর ২৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ১ হাজার ১২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ২৫৮জন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়  ১৩টি হল। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫ হাজার ৯৩ জন। এরমধ্যে ৪ হাজার ৯০০ জন আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে।  মোট শিক্ষার্থীর ৯৬ ভাগ আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক আছেন ৪৫৪ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ২৫৫ জন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হল সংখ্যা ৮টি। মোট শিক্ষার্থী ৮ হাজার ৬৫৫ জন। এরমধ্যে ২ হাজার ৮৬২ জন আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে। শতকরা ৩৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন ২৮৫ জন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হল সংখ্যা ১০টি। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২ হাজার ৫২১ জন। ৪ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে। মোট শিক্ষার্থীর শতকরা ১৯ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় ৯২৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১২৫ জন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হল ১২টি। মোট শিক্ষার্থী ১৪ হাজার ১ ৭৪ জন। এরমধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৬ হাজার ১৭৪ জন। মোট শিক্ষার্থীর শতকরা ৪৪ শতাংশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন ৫৫২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ২৫৩ জন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল ৬টি। মোট শিক্ষার্থী ১১ হাজার ৬৯৫ জন। এরমধ্যে ২ হাজার ৪৭০ জন শিক্ষার্থী  আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। মোট শিক্ষার্থীর শতকরা ২১ শতাংশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন ৩১২ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন ৬৭ জন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ৫টি। মোট শিক্ষার্থী ৭ হাজার ৭০৪ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ২ হাজার ৯৪ জন। শতকরা ২৭ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক আছেন ২৭৭ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১৪ জন শিক্ষক।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হল ৩টি। মোট শিক্ষার্থী ৪ হাজার ৭৫২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ১৯৮ জন। শতকরা ২৫ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩০০ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১১ জন শিক্ষক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ১৪৫ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ২৭৭ জন। শতকরা ২৪ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংখ্যা ৪৩৪ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে মাত্র পাঁচ জন শিক্ষক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হল তিনটি। মোট শিক্ষার্থী ৭৯৩ জন। আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে সবাই। অর্থাৎ শতভাগ আবাসন সুবিধা আছে এখানে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষক রয়েছে ১০৯ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৪৮ জন।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল সংখ্যা ৪টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ৭০২ জন। আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ১৭১ জন। শতকরা ৪৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ১৪০ জন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে ৪৮ জন আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন। মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ৫টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ৫৭৪ জন। আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৫৫৯ জন। শতকরা ২১ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন ৫০ জন। তাদের মধ্যে কেউ আবাসিক সুবিধা পান না।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল সংখ্যা ৬টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ২৯৭ জন। আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ৯৩৮ জন। শতকরা ৮৪ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ১৬৫ জন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৯১ জন।

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল ৪টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ৪৪৭ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা পাচ্ছে ২ হাজার ৩৭৯ জন। শতকরা ৯৭ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হচ্ছেন ১৪০ জন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৭১ জন। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল ৫টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ৬২৮ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৬০৪ জন। শতকরা ২৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন ১১৮ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৭২ জন। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ৬টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ৫৯৪ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ৬৪৯ জন। শতকরা ৬৪ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক আছেন ১১২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ২৮ জন শিক্ষক।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ৬টি। মোট শিক্ষার্থী ২ হ্জাার ৯৩৬ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ৫২১ জন। শতকরা ৫২ ভাগ আাবাসিক সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক আছেন ১৪৮ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৭৬ জন। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল ৫টি। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ২ হাজার ২৭০ জন। আবাসন সুবিধা পাচ্ছে ৮৬৬ জন। শতকরা ৩৮ শতাংশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক আছেন ১১৭ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৭২ জন শিক্ষক। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৭৬২ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৮৭৮ জন। শতকরা ৫০ শতাংশ  আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছে ৫৫ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৩৫ জন শিক্ষক।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কোনো হল নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষার্থী ১৮ হাজার ৬৩৬ জন। এদের মধ্যে কেউ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে না। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৩১৩ জন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১২ জন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল ৩টি। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৭৬৪ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৭৯৮ জন। শতকরা ২৯ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ১০৮ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ৩৪ জন শিক্ষক।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ৩ হাজার ১৫০জন। এদের মধ্যে মোট আবাসন সুবিধা পাচ্ছে ২৬৪ জন। শতকরা ৮ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ১২৯ জন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ২৩ জন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ৭৯৯ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৫২৭ জন। শতকরা ৬৬ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৫৩ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১৭ জন শিক্ষক।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হল সংখ্যা ৫টি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৫৮০ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ১ হাজার ৮১ জন। শতকরা ৬৮ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৯৫ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ২৭ জন শিক্ষক। যশোর  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৮৪৩ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা পাচ্ছে ৪৩১ জন। শতকরা ২৩ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৬১ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন ১৭ জন শিক্ষক। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালে হল ২টি। মোট শিক্ষার্থী ৬৭৬ জন। এদের মধ্যে আাবাসিক সুবিধা পাচ্ছে মাত্র ৫০ জন। শতকরা ৭ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক ৩৭ জন। এদের মধ্যে আবাসন সুবিধা কেউ পাচ্ছেন না।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে হল নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ হাজার ৪৮৮ জন। শিক্ষক রয়েছেন ৯২ জন। শিক্ষকরাও আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন না। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল একটি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৬১০ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৯৭ জন। এদের সবাই ছাত্রী। শতকরা ৬ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এখানে ছাত্রদের কোনো আবাসন সুবিধা নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৬৯ জন। শিক্ষকরাও আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হল কোনো হল নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ৬৯০ জন। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষক রয়েছেন ২৮ জন। তারাও আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হল তিনটি। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৩৯১ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৬৭৫ জন। শতকরা ৫০ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রয়েছেন ৩২ জন। এদের মধ্যে ৩১জনই আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কোনো হল নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ১০০ জন। এ বিশ্ববিদ্যালয় মোট শিক্ষক রয়েছেন ৩৬ জন। তারাও আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন না। ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয় মোট হল সংখ্যা ১৬৩টি। মোট শিক্ষার্থী ১ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৮ জন। এদের মধ্যে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে ৬৩ হাজার ৬০৫ জন। শতকরা ৩২ ভাগ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে। মোট শিক্ষক রয়েছেন ৮ হাজার ৩৯১ জন। আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন ২ হাজার ৬৪৫ জন।  

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য পরিবহন বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি বছর ব্যয় হয় কোটি কোটি টাকা। এ সব টাকা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে প্রতি বছর অনায়াসে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি হল নির্মাণ করা সম্ভব। সুষ্ঠু কোন পরিকল্পনা না থাকায় হল নির্মাণ করা তো দূরের কথা দিন দিন অনাবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আবাসন সমস্যায় শঙ্কিত অভিভাবকরা জানান, ছেলে-মেয়েদের স্কুল কলেজের গ-ি পার করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্যও যদি পিতামাতারা তাদের সন্তানদের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকতে হয় তাহলে সরকারের দায়িত্ববোধ কতটুকু। শিক্ষিত জাতি গঠনে শিক্ষার সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে যদি একজন শিক্ষার্থীকে থাকার জায়গা খুঁজতে ব্যস্ত থাকতে হয় তাহলে শিক্ষিত জাতি গঠনে আমরা কিভাবে এগিয়ে যাব। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পরিহার করে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে এনে আবাসনের নিশ্চয়তা দিতে সরকার ব্যর্থ হলে মেধা সম্পদ কাজে লাগানো কখনোই সম্ভব হবে না। জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে থাকতে হবে মাথা নীচু করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আবাসন সংকট আছে। এটা এড়ানো সম্ভব নয়। কারণ প্রতিবছর যে হারে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় সেহিসেবে আসন খালি হয় না। ফলে সিট সংকট থেকেই যায়। এ থেকে উত্তরণের জন্য নতুন হল তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষকদেরও একই সমস্যা।

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঢাকাটাইমস টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত। তাই এই সীমিত সম্পদ দিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর অভাব পুরণ করা সম্ভব হয় না। এ জন্য দরকার শিক্ষাখাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা। শিক্ষার্থী সংখ্যা যে হারে বাড়ছে সে হারে হল তৈরি হচ্ছে না। ফলে এ সংকট দিন দিন বাড়ছে। এরপরেও আমরা চেষ্টা করছি সংকট সমাধানের।

(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/এমএম/টিএ)