logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় যথার্থ হয়েছে: আসাদুজ্জামান খান
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ২১:০৩:৪৩
image


তিনি ঢাকা-১২ আসনের এমপি। গত পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য তিনি। এই আওয়ামী লীগ নেতা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি তার মুখোমুখি হয়েছিলেন ঢাকাটাইমস। কথা বলেছেন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়সহ নানা বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

ঢাকাটাইমস: সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় আপনার ভালো ভাবমূর্তি রয়েছে। মন্ত্রী হিসেবে এই ভাবমূর্তি কতটুকু বজায় রাখতে পারবেন?

আসাদুজ্জামান খান: আমার ওপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমি চেষ্টা করব সঠিকভাবে তা পালন করতে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

ঢাকাটাইমস: ইতিপূর্বে যারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক আলোচনা ছিল। নিজেকে এ থেকে কতটা দূরে রাখতে পারবেন বলে মনে করছেন?

আসাদুজ্জামান খান: কে কেমন করেছে তা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তবে আমি চেষ্টা করব এসব থেকে দূরে থাকতে।

ঢাকাটাইমস: দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক একজন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

আসাদুজ্জামান খান: আমরা যতটুকু জানি এবং যতটুকু শুনেছি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অবশ্য এখনও এর বিচার শেষ হয়নি। তদন্ত হচ্ছে। আমার মনে হয়, বাবর সাহেব ওই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত না থাকলে ওই ঘটনা ঘটত না। তিনি মূলত অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িত হয়ে গিয়েছিলেন। একইভাবে দশ ট্রাক অস্ত্র পাচারের ঘটনার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এমনটি হওয়াই উচিত হয়েছে। আমি বলব, দশ ট্রাক অস্ত্রমামলার রায় যথার্থ হয়েছে।

ঢাকাটাইমস: বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন কর্মসূচিতে ক’দিন আগেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। ভবিষ্যতে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কী পদক্ষেপ নেবেন?

আসাদুজ্জামান খান: যারা আইন মানে না, সংবিধান মানে না তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। কারণ, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যারা জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করতে চায় তাদের প্রতিহত করাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা হলে তারা তো বসে থাকবে না।

ঢাকাটাইমস: পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক সময় মনে করা হয় এসবের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে এই জায়গা থেকে তুলে আনতে আপনার ভূমিকা কী থাকবে?

আসাদুজ্জামান খান: আমাদের পুলিশ এখন খুব ভালো কাজ করছে। যেখানে যাবেন সেখানেই তা দেখবেন। পুলিশের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ খুবই নগণ্য। কিছু পুলিশ সদস্যের ঘাটতি ছিল। এই শূন্যস্থান পূরণ হয়ে গেলে পুলিশের কার্যক্রম আরো গতি পাবে। আরো সুশৃঙ্খল ও সংগঠিত হবে। তখন আর ঘুষ গ্রহণের কথাও শোনা যাবে না।

ঢাকাটাইমস: ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু ও তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের বিষয়টি গত সরকারের সময় তদন্ত হয়েছে। কিন্তু সে প্রেক্ষিতে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি-না তা জানা যায়নি।

আসাদুজ্জামান খান: আমি খুব বেশি দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেইনি। আগে আমাকে বিষয়গুলো জানতে হবে। তারপর এ ব্যাপারে বলতে পারব। তবে যেসব বিষয় তদন্তাধীন আছে সেগুলোর বিচার যথাসময়ে শেষ হবে। এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। মাঝেমধ্যে গুরুত্ব বিবেচনায় অনেক ঘটনার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হয়।  

ঢাকাটাইমস: আপনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হবেন, এ ব্যাপারে আগে থেকেই কোনো ইঙ্গিত কি ছিল বা এ ব্যাপারে আপনার কোনো প্রস্তুতি ছিল?

আসাদুজ্জামান খান: মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হওয়ার জন্য তো রাজনীতি করিনি। তবে আমি সততার পুরস্কার পেয়েছি বলেই আমার শুভাকাক্সক্ষীরা মনে করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তার মতোই কাজ করতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। তার আস্থা ধরে রাখতে দেশের জন্য কাজ করে যাব।

ঢাকাটাইমস: বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

আসাদুজ্জামান খান: দেশে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যা হচ্ছে না। অভিযানের সময় জামায়াত-শিবিরের লোকজন যৌথবাহিনীর ওপর প্রথম গুলিবর্ষণ করছে। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাচ্ছে। এটাকে কোনোভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যা বলা যাবে না।

ঢাকাটাইমস: মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ...

আসাদুজ্জামান খান: বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে আমরা বিশ্বাসী নই। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নই আসে না।

ঢাকাটাইমস: বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের গুমের অভিযোগ তুলছে। আসলে কী হচ্ছে?

আসাদুজ্জামান খান: বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা ভাবছে, আমরা শত শত মানুষ গুম করেছি। কিন্তু তা নয়। আসলে গ্রেপ্তার করতে গেলেই এরা বাড়িছাড়া হচ্ছে, পালিয়ে যাচ্ছে, আত্মগোপন করছে। তবে যে পর্যন্ত সব অপরাধী গ্রেপ্তার না হবে, সে পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।