logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
বেকার সমস্যা সমাধানকে বেশি গুরুত্ব দেব
অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, এফআরসিএস। সংসদ সদস্য, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ)।
২২ জানুয়ারি, ২০১৪ ১২:১২:৫৪
image


ঢাকা: অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক। একইসঙ্গে হলি ফ্যামেলি ও রেসক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের পরিচালক। তাছাড়া তিনি স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সন্ধানীর জাতীয় চক্ষুদান সমিতিরও মহাসচিব তিনি। অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাতের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

ঢাকাটাইমস: নতুন সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জের কথা বলা হচ্ছে। আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?

ডা. মিল্লাত: আমাদের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা যেসব কথা বলেন তা আমার কাছে গুজবের মতো মনে হয়। যে কোনো সরকারের সামনেই চ্যালেঞ্জ থাকে। এই সরকারের সামনেও থাকবে। দেশকে ভালোভাবে চালানোটাও একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্যই তো সরকার। আওয়ামী লীগ নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তহাতে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন বলে বিশ্বাস করি। বিগত সময়ে তিনি এর প্রমাণ রেখেছেন।

ঢাকাটাইমস: বিগত সরকারের কার্যক্রমকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

ডা. মিল্লাত: বিগত পাঁচ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও যে পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে তা অন্য যে কোনো দেশের জন্য ঈর্ষণীয়। বন্ধ কল-কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের দামও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিরাজগঞ্জে আমার বাবার নামে একটি স্কুল আছে। আগে টাকা দিয়ে মার্চ মাসেও স্কুলের জন্য বই পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন বছরের শুরুতেই ৩০ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ৩০ হাজার টাকায় মানুষ বিদেশ যেতে পারছে। আগে ভিটেমাটি বিক্রি করে মানুষ বিদেশ যেত। এখন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

ঢাকাটাইমস: একদিকে চিকিৎসক, অন্যদিকে এমপি। কোনটাকে বড় করে দেখছেন?

ডা. মিল্লাত: চিকিৎসা করা আমার পেশা। কিন্তু রাজনীতি কারো পেশা হতে পারে না। রাজনীতিককেও তার পরিবারের ভরণপোষণ করতে হয়। এজন্য তাকে আয় করতে হয় বা আয়ের উৎস থাকে। আমিও আমার পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য যতটুকু পারি পেশাকে ঠিক রাখব। রাজনীতি এবং পেশা দুটোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

প্রত্যেকটি মানুষের উচিত বুঝেশুনে কথা বলা। বিএনপি চেয়ারপার্সন যেসব কথা বলেছেন তা নেহায়েত হাস্যকর। কারণ, জনগণ পাশে আছে বলেই আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় যেতে পেরেছে। জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আড়াল করার জন্য এবং দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতেই বেগম খালেদা জিয়া এসব বলছেন।

২৯ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। ওইদিন কালোপতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।

২৯ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সনের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচির মতো এটিও ভেস্তে যাবে। কারণ, বিএনপি নেত্রীর ডাকে অতীতে কেউ সাড়া দেয়নি। এবারও দেবে না বলেই মনে করি।

ঢাকাটাইমস: জনগণের কাছে আপনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কী ছিল।

ডা. মিল্লাত: সিরাজগঞ্জে সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী ভাঙন। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা। শিল্পপার্কের মাধ্যমে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন। মাদক এবং সন্ত্রাস কঠোর হাতে দমন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি। সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালকে ১০০ থেকে ২৫০ বেডে উন্নীত করে সিরাজগঞ্জবাসীর জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। সিরাজগঞ্জে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করা হয়েছে। আগামীতে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি সরকারের রয়েছে তা বাস্তবায়নেও কাজ করব।

ঢাকাটাইমস: নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আপনার পরিকল্পনা কী।

ডা. মিল্লাত: অবশ্যই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আগামী পাঁচ বছরে এগুলো পূরণ করব। এরচেয়ে বেশি করার চেষ্টা করব।

ঢাকাটাইমস: কোন কোন খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন?

ডা. মিল্লাত: উত্তরবঙ্গে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও নিরক্ষরদের মধ্যে বেকার সমস্যা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এই সমস্যা সমাধানকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। বেকারদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য সুযোগ করে দেয়া হবে। পাশাপাশি নদী ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণও অগ্রাধিকার পাবে।

ঢাকাটাইমস: সিরাজগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের তা-বে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে আপনি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?

ডা. মিল্লাত: সিরাজগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের তা-বে ২৩টি বাড়ি ভাঙা হয়েছিল। এসব ভাঙা ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে ৫৩ লাখ টাকা অনুদান নিয়েছি। এই টাকা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি।

ঢাকাটাইমস:স্থানীয় পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীদের দূরে রেখে অতীতে সংসদ সদস্যরা সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। আপনি কী করবেন?

ডা. মিল্লাত:বিলেত থেকে ফিরে পাঁচ বছর আগে যখন সিরাজগঞ্জে রাজনীতি শুরু করি তখন থেকেই আওয়ামী লীগকে সব সময় সঙ্গে রেখেছি। তারাও আমাকে সঙ্গে রেখেছেন। পার্টি থেকে আমি কখনো বিচ্ছিন্ন হব না। পাঁচ বছর পরই তার প্রমাণ পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ার/এআর/  ঘ.)