সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের বিষয়ে বিএনপির ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে কমিটি পুনর্গঠনের ঘোষণাও দিয়েছেন। বলা হচ্ছে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজধানী ঢাকায় বিএনপির আন্দোলন জমে উঠেনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতা, মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব, পরবর্তী আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অর্থ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কিরণ সেখ
ঢাকাটাইমস: ঢাকা মহানগর বিএনপিকে পুনর্গঠনের জন্য বিশেষ কমিটির পাশাপাশি ঢাকার ৪৯টি থানায় নতুন কমিটি গঠনের কথা ছিল। এ পর্যন্ত কয়টি কমিটি গঠন করা হয়েছে?
আবদুস সালাম: ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটিকে পুনর্গঠনের জন্য চেয়ারপার্সন একটি বিশেষ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সেই কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি মুক্তি পেলেই কমিটি গঠনের সার্বিক কার্যক্রম শুরু হবে। ঢাকার ৪৯টি থানার একটি কমিটিও এখন পর্যন্ত গঠন করা হয়নি। বিশেষ কমিটি গঠনের পরই এর কাজ শুরু হবে।
ঢাকাটাইমস: সাদেক হোসেন খোকা ও আপনিসহ আরো কয়েকজনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঢাকায় নেতৃত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল কিন্তু আপনারা তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি, কেন?
আবদুস সালাম: সরকারসহ বিএনপির অনেকেই বলছে ঢাকা মহানগর বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে থেকে যারা এ কথা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনে কতটা ভূমিকা রেখেছেন? শুধু মহানগরের নয়, কেন্দ্রীয় নেতারাও ব্যর্থ। ব্যর্থতার দায়ভার মহানগরের হলে তারচেয়ে বেশি ব্যর্থতা বহন করতে হবে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের। আমি মনে করি, ঢাকা মহানগর বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফল হয়েছে। কারণ, সরকারের আজ্ঞাবহ সশস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোকাবিলা করে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আপনারা দেখেছেন গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ঢাকায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ভোটারবিহীন ছিল।
ঢাকাটাইমস: ঢাকা মহানগর কমিটি কি ভেঙে দেয়া হচ্ছে? যদি দেয়া হয় তবে কারা নেতৃত্ব দেবে? নাকি আপনাদেরই রেখে দেয়া হবে?
আবদুস সালাম: এ বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর। কমিটি ভেঙে দিবেন কি দিবেন না এটা সম্পূর্ণ তার এখতিয়ার। কারা নেতৃত্বে আসবেন নাকি বর্তমান কমিটিতে যারা আছেন তাদেরই রেখে দেয়া হবে সেটা কেবলমাত্র তিনিই বলতে পারেন।
ঢাকাটাইমস: ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের পর আন্দোলন নাকি উপজেলা নির্বাচনের পর?
আবদুস সালাম: আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আন্দোলন করতে হবে। তবে আন্দোলন শুধু ঢাকা মহানগরের ওপর নির্ভর করে না। কেন্দ্রীয় কমিটির ওপরও নির্ভর করে। তাই ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের পর বিএনপি আন্দোলনে যাবে কি-না সেটা বলা মুশকিল। কারণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি যেভাবে চাইবে সেভাবেই রাজপথে থাকবে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
ঢাকাটাইমস: আপনারা সরকারকে অবৈধ বলছেন, তাহলে অবৈধ সরকারের কাছে নির্বাচন দাবি করছেন কেন?
আবদুস সালাম: যেহেতু তারা এখন ক্ষমতায় তাই আমরা তাদের কাছে নির্বাচনের দাবি করছি।
ঢাকাটাইমস: শোনা যাচ্ছে সরকারের সঙ্গে আপনার লেজুড়বৃত্তি ছিল, সে কারণেই আপনি গ্রেপ্তার হননি। এটা কতটুকু সত্য?
আবদুস সালাম: আসলে প্রকৃতপক্ষে শুধু আমি একা নই, বিএনপির অনেক নেতাকর্মীই গ্রেফতার হননি। তাহলে অন্য নেতারা যারা গ্রেফতার হননি তাদের সঙ্গেও কি সরকারের যোগাযোগ ছিল? তারা কি সরকারের লেজুড়বৃত্তি করত? আসলে যারা এ ধরনের কথা বলেন তারাই সরকারের সঙ্গে লেজুড়বৃত্তি করে চলেছেন। সরকারের সঙ্গে আদৌ আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। যারা এ ধরনের কথা বলছেন মূলত আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই তারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছেন।