logo ২৯ এপ্রিল ২০২৫
নারী নির্যাতন-৪
স্ত্রীর টাকা নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করে লাপাত্তা কামাল
বিলকিছ ইরানী, ঢাকাটাইমস
২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ ১৯:৩৯:১৮
image

ঢাকা: ঘরে ৪ সন্তান।তবে সবই মেয়ে।এ কারণে স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী কামাল হোসেনের (৪০)বনিবনা হচ্ছিল কমই।স্বামীর পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে নানা কটূ কথা সহ্য করতে হতো প্রায়ই। এতো কিছুর পরও স্বামীর মন পাওয়ার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্ত্রী রীনা।এরই অংশ হিসাবে রীনার বাপের বাড়ির এটা/সেটা বিক্রি করে সে টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিতেন।সবশেষে স্ত্রীর ২০ হাজার টাকা নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করে বসলেন কামাল হোসেন।আর বিয়ে করেই লাপাত্তা কামাল।শ্বশুর বাড়িতেও এখন ঠাঁই হচ্ছে না রীনার।


১৫ বছরের কিশোরী মেয়েসহ চার চারটি মেয়ে নিয়ে রীনার এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।তিনি এখন তার শ্বশুড় বাড়ির কারো কেনো সহযোগিতাই পাচ্ছে না।থানায় জিডি করার পর সম্প্রতি তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে অভিযোগও দায়ের করেছেন। 


অধিদপ্তর থেকে কামাল হোসেনকে বারবার নোটিশ দিলেও তাতে তিনি গা-করছেন না। রীনা ননদের স্বামী বাবুল এই প্রতিবেদকের কাছে কামালের বিয়ের কথাই অস্বীকার করছেন। বলছেন কামাল রীতিমতো রীনা ও তার সন্তানদের ভরণপোষণ দিচ্ছেন।কামাল হোসেন রাজধানীর মিরপুরে থাকেন।


জানা যায়, গত ৮ মাস আগে স্ত্রী রীনা বেগমের (৩৫) কাছ থেকে তার বাপের বাড়ির জমি বিক্রির ২০ হাজার টাকা কামাল ছিলচাতুরি করে নেয়।এর পর থেকেই উধাও তিনি। জানা গেছে ৬ বছরের সন্তানসহ এক নারীকে বিয়ে করে অন্যত্র সংসার করছেন। আগের মোবাইল ফোনটিও বন্ধ। কোথায় থাকেন তা জানা যায়নি।


ঢাকাটাইমসের সাথে আলাপকালে রীনা বলেন, ‘১৮ বছর হলো বিয়ে হইছে। আমার ঘরে কোন ছেলে সন্তান হয় নাই বলে শ্বশুড়-শাশুড়িও কটুকথা বলতো। প্রায়ই দেশের বাড়ির জমিজমা ঠিক করার কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিত।কিছু জিগাইলে মারধর করত।এর আগে কিস্তি থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়া দিছি। এইবার ২০ হাজার টাকা নিয়া আর ফিরে নাই।’


অন্য আত্মীয়-স্বজন কামালের বিয়ের কথা স্বীকার না করলেও রীনার শ্বশুড় কুদ্দুস অস্বীকার করেননি। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ছেলের তো ২/৩ মাস ধরে কোন খোঁজ খবরই নেই। মাইনসের মুখে শুনছি আরেকটা বিয়া করছে। আমি রীনাকে কইছিলাম এইডার একটা ব্যবস্থা করব। কিন্তু হেয় না শুনে মামলা করছে।এ সম্পর্কে কুদ্দুস বলেন, পোলারেতো খুইজ্জাই পাইনা। পাইলে যেভাবেই হোক এর একটা মিমাংসা করবো।


এদিকে রীনার ননদের স্বামী বাবুল সব কিছু অস্বীকার করে বরং উল্টো কথা বলছেন।তিনি বলেন, কামাল হোসেন বিয়ে করেননি।তিনি বলেন, ‘রীনা মিথ্যা বলছে। কামাল হোসেন তাদের সব খরচ দিচ্ছে, মেয়ে গিয়ে প্রতিদিন টাকা নিয়ে আসে।’


এসময় তার কাছে কামালের নম্বর ও ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান। নম্বর ও ঠিকানা না জানলে কামাল বাচ্চাদের খরচ দিচ্ছে এ খবর কিভাবে পেলেন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।


জানা যায়, কামাল হোসেনর গ্রামের বাড়ি শেরপুরে। আর রীনার বাবার বাড়ি শরীয়তপুরে। কামাল হোসেন একজন বাস চালক। তিনি মিরপুরের ১২ নম্বর রুটে ৯ নম্বর বাস চালান।


রীনা তার শ্বশুড়-শাশুড়িকে বিষয়টি জানালেও কোন ব্যবস্থা নিতে না দেখে মিরপুর পল্লবী থানায় গত রোজার ঈদের পর স্বামীর বিরুদ্ধে জিডি করেন। এরপর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন।


মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে কামাল হোসেনকে কয়েকদফা নোটিশ পাঠানো হলেও এর কোন জবাব দিচ্ছেন না কামাল। বরং রীনাকে কামাল হোসেন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফোন করে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে জানান রীনা।


এদিকে কামাল হোসেনর দ্বিতীয় স্ত্রীর ভাই কালাজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে আক্ষেপের সুরে ঢাকাটাইমসকে জানান, পরী নামে আমার কোন বোন নেই। যে বোন ভাইয়ের কথা শোনে না সে আমার বোন না।


বোনের প্রতি এমন বিদ্বেষের বিষয়ে তিনি বলেন, সে বিয়ে করেছে আমাদের না জানিয়ে। এর আগে তাকে আমরা বিয়ে দিয়েছিলাম। সে ঘরে ৬ বছরের সন্তানও আছে। ওই সংসার ছেড়ে কামাল হেসেনকে বিয়ে করে। আমাদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নাই। ওরা দুজনেই অন্যায় করেছে, তাদের শাস্তি হোক তাই আমি চাই।


এ ব্যপারে কামাল হোসেনের মোবাইল ০১৭৭৫০১৬৭৬৭ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।


(ঢাকাটাইমস/ ২৫ ডিসেম্বর / ইরা /এআর / ঘ.)