পৃষ্ঠপোষকতার নামে গ্রামীণফোন প্রতারণা করেছে: ডিআরইউ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২২ জুন, ২০১৫ ১৭:১০:৫৩

ঢাকা: বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডে পৃষ্ঠপোষকতার নামে গ্রামীণফোন প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়।
ডিআরইউর সদস্যদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ‘ডিআরইউ বেস্ট রিপোটিং অ্যাওয়ার্ড’ এ গ্রামীণফোন (জিপি) পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এ বছরও গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এই অ্যাওয়ার্ডটি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত গ্রামীণফোনের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অসহযোগিতার জন্য ‘ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ডিআরইউ জানায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ইতোপূর্বে রাষ্ট্রপতি, অর্থ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সৌজন্যে ‘ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করতো। গ্রামীণফোনের সাথে ডিআরইউর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই অ্যাওয়ার্ডটির নামকরণ করা হয় ‘ডিআরইউ-গ্রামীণফোন বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামীণফোন গত দুটি বছর এই অ্যাওয়ার্ডে পৃষ্টপোষকতা দেয়। কিন্ত হঠাৎ করেই গত ২৪ মে ২০১৫ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিকে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তারা এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য আর পৃষ্টপোষকতা করবে না। এই সিদ্ধান্ত গ্রামীণফোনের বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলেও ডিআরইউকে জানানো হয়। গ্রামীণফোনের মিডিয়া ও কমিউনিকেশন্সের দায়িত্বে নতুন যোগদান করা কর্মকর্তা তালাত মাহমুদ ডিআরইউকে আরও জানান, তাদের কোম্পানি লোকসানের কবলে পড়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপনারা জানেন-ডিআরইউর কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদকাল এক বছর। আর এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য আমরা লেখা আহ্বান করি আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। এক্ষেত্রে ডিআরইউর পক্ষ থেকে লেখা আহ্বানের সব প্রস্তুতি যেখানে নেয়া হচ্ছিল; ঠিক সেই মুহূর্তে ডিআরইউকে যে সিদ্ধান্ত গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে জানানো হলো এটাকে ডিআরইউ প্রতারণা বলে মনে করে। গ্রামীণফোনের এরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত এই সংগঠণের ১৪০০ সদস্যর সাথেও বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল বলে মনে করে ডিআরইউ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রামীণফোন তার পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিতেই পারে। কিন্ত এই ঘোষণা তারা ২০১৪ সালের বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদানের দিন কিংবা বর্তমান কমিটি দায়িত্বভার নেয়ার শুরুতেই জানাতে পারতো। এটি না করে এমন একটি সময়ে ডিআরইউকে এ নেতিবাচক সিদ্ধান্ত জানানোর অর্থই হচ্ছে-ডিআরইউর মতো একটি সংগঠনকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়া।
বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে এই অ্যাওয়ার্ডের পৃষ্ঠপোষকতা প্রসঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। সর্বশেষ এপ্রিল ২০১৫ ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ গ্রামীণফোন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেও গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এই অ্যাওয়ার্ড অব্যাহত রাখার কথা পুনঃব্যক্ত করা হয়েছিল। ডিআরইউ এই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও গ্রহণ করে। কিন্তু গত ২৪ মে ২০১৫ ডিআরইউর পক্ষ থেকে কার্যনির্বাহী কমিটি ২৬ মে সংগঠনের দুই দশক উদযাপন অনুষ্ঠানের দাওয়াত দিতে ফোন করলে আমাদের জানানো হয়, গ্রামীণফোন লোকসানের কবলে পড়ায় অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি অব্যাহত রাখতে পারবে না। ডিআরইউকে আরও জানানো হয়, এটি গ্রামীণফোনের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত।
ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটি গ্রামীণফোনের আকস্মিক নেয়া এমন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তাদের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স এর দ্বায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা তালাত মাহমুদের কাছে জানতে চান, কেন ডিআরইউকে বছরের শুরুতেই বিষয়টি জানানো হয়নি এবং কেনই বা ৬ মাস ঝুলিয়ে রেখে সাংবাদিকদের একমাত্র ঐক্যবদ্ধ সংগঠন ডিআরইউর ব্যাপারে এমন একটি নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এ বিষয়গুলো গ্রামীণফোনের সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা ডিআরইউকে স্পষ্ট না করে শুধু বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি লোকসানের কবলে পড়ায় আমাদের বোর্ড এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হয় এবং গ্রামীণফোনের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
একই সাথে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি মনে করে, অ্যাওয়ার্ড প্রদানের বিষয়ের সাথে সব সদস্যের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তা সবাইকে অবহিত করা প্রয়োজন। এ জন্যেই কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সব সম্মানিত সদস্যকে বিষয়টি অবহিত করা হলো।
(ঢাকাটাইমস/২২জুন/এইচআর/জেবি)