বেনাপোল: ১৬ হাজার গ্রাহকের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর গ্রাহকদেরকেই প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে যশোরের ‘এহসান ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ’এবং ‘এহসান এস রিয়েল এস্টেট সোসাইটির কর্মকর্তারা। বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত না পেয়ে পথে বসেছেন গ্রাহকরা। টাকা আদায়ে কর্মকর্তাদের নামে ১৮টি মামলা করে প্রাণনাশের আশংকায় নিজেরাই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
সোমবার সন্ধ্যায় যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা। তবে মানববন্ধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া মফিজুর রহমান ইমন নামে একজনকে মোবাইলফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় গ্রাহকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
সূত্র মতে, গত কয়েক বছর আগে যশোরের ‘এহসান ইসলামী মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ’ এবং ‘এহসান এস রিয়েল এস্টেট সোসাইটি’ বিনিয়োগে অতিরিক্ত লভ্যাংশ দেয়ার প্রলোভন দেখালে প্রায় ১৬ হাজার গ্রাহক দুই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি বিনিয়োগ করেন। প্রথম দিকে দুই-একবার লভ্যাংশ দিলেও পরে কথা রাখেনি বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।
এক পর্যায়ে গ্রাহকরা টাকা আদায়ে তাদের চাপ দিলে অনেক কর্মকর্তারা গা-ঢাকা দেন। এ পরিস্থিতিতে তাদের নামে মামলা করেন প্রতারিত গ্রাহকরা। তারা একে একে কোম্পানির কর্মকর্তাদের নামে ১৮টি মামলা করেন।
সর্বশেষ ২৭ জুলাই সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের বসু মিয়ার ছেলে হানিফ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় এহসান সোসাইটির সভাপতি ও প্যানেল এমডি মুফতি ইউনুছ আলী, পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, আতাউল্লাহ, আইউব আলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুনায়েদ, পরিচালক মনিরুজ্জামানসহ ১৮ কর্মকর্তাকে।
বাদী হানিফ মিয়া অভিযোগ করেন, ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি দুই লাখ টাকা জমা করেন। জমা টাকার লভ্যাংশ হিসেবে প্রতিমাসে তাকে তিন হাজার ২০০ টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু লভ্যাংশ ও বিনিয়োগের কোনো টাকাই এখন ফেরত পাচ্ছেন না।
এছাড়াও ২২ জুলাই শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে মফিজুল ইসলাম ইমন কোতোয়ালি মডেল থানায় এহসান মাল্টিপারপাস সোসাইটির শীর্ষ কর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রীসহ ৯ জনের বিরদ্ধে মামলা করেন।
ইমন জানান, তার বাবা ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জমা দেন। এ টাকা আদায়ে তিনি তিনটি মামলা করেছেন। এরপর থেকে তাকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। সোমবারও তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। অব্যাহত হুমকিতে তিনি শংকায় ভুগলেও প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্কাস আলী ঢাকাটাইমসকে জানান, মামলার আসামিরা অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। আবার অনেকে জামিনে রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গ্রাহক মফিজুর রহমান ইমনকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য এহসান এস কর্তৃপক্ষ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস/জেবি)