logo ১৮ মে ২০২৫
চার অপহরণকারীসহ ভিকটিম উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২০ জুলাই, ২০১৫ ১৮:৩৩:০৭
image

ঢাকা: গাজীপুরের জয়দেবপুর থানা এলাকা থেকে অপহৃত ভিকটিম রুবেল হোসেনকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. রুমেন হোসেন ওরফে জীবন (২৪), মো. মাহবুব চৌধুরী (২২), মো. শাহিনুর আক্তার ওরফে সামিয়া (২৫) ও সুমি আক্তার (২৫)।


সোমবার ভোরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করা হয়। এ সময় আসামি জীবনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।


র‌্যাব সূত্র জানায়, সোমবার ভোর পাঁচটার সময় গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানা এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। ওই সময় তারা দিঘীরচালা সিটি মডেল স্কুলের একটি ভবনে ভিকটিম রুবেলসহ চার অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে।


গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ৫ জুলাই জয়দেবপুর নিবাসী হাজী মো. শামসুল হকের ছেলে রুবেল হোসেন শিববাড়ী মোড় থেকে অপহরণের শিকার হন। দীর্ঘ ১৫ দিন পর র‌্যাব-১ এর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। অপহরণের পরিকল্পনাকারী জীবন, অপহৃত রুবেলের প্রতিবেশী। প্রায় ৫/৬ মাস আগে অপহৃত রুবেলের জমিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের টোপ দিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী জীবন ভিকটিমের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে গাজীপুর জজ কোর্টের মোক্তার মাহবুবের সাথে রুবেলকে পরিচয় করিয়ে দেন। গত ২৫ মাহবুব ও জীবন, রুবেলকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৫ জুলাই দুপুর ১২টার সময় জীবন, রুবেলকে জমি বিক্রির কথা বলে ফোন দেন। জীবনের কথামতো রুবেল জমির কাস্টমারের সাথে দেখা করার জন্য ১ জুলাই ভাড়া করা মোক্তার মাহবুবের ফ্ল্যাটে যান। জীবন, মোক্তার মাহবুব, তার কথিত স্ত্রী সামিয়া ও সামিয়ার সহযোগী সুমি রুবেলের সাথে ইফতার করেন। ইফতারে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত জুস খেয়ে রুবেল অচেতন হয়ে গেলে মোক্তার মাহবুব ও জীবন মিলে ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। মাহাবুবের কথিত স্ত্রী সামিয়ার মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। অপহরণকারীরা জানান, অপহৃতকে সীমান্ত এলাকায় রাখা হয়েছে। টাকা না পেলে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে তাকে পাচার করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন। এ সময় ভিকটিমের বাবা তার ছেলের কণ্ঠ শুনতে চাইলে রেকর্ডকৃত কণ্ঠস্বর শোনানো হয়।  তখন ভিকটিমের বাবা র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করলে র‌্যাব এই ঘটনার দীর্ঘ অনুসন্ধান শুরু করে। আসামিরা অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির হওয়ায় তাদের অবস্থান শনাক্তে দীর্ঘ অনুসন্ধানের প্রয়োজন হয়।


র‌্যাব জানায়, আটক অবস্থায় অপহৃত রুবেলের সাথে অপহরণকারীরা নির্মম আচরণ ও মারধর করত। অপহৃত রুবেল উদ্ধার হওয়ার সময় তার হাত-পায়ে সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অসংখ্য ক্ষত দেখা যায়। গত ৬ দিন পূর্বে শিকলের বাঁধন খুলে রুবেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সুমি তা দেখে ফেলেন। এরপর থেকে অপহরণকারীরা নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন।


র‌্যাব আরও জানায়, গত ১৫ জুলাই দলের সদস্য সুমির সাথে রুবেলের বিয়ের ভুয়া কাবিন করে ব্লাকমেইলিংয়ের ব্যবস্থা করে। এভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের ফলে অপহৃত ভিকটিম অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েন।


আসামি সামিয়ার মোবাইল কল লিস্ট বিশ্লেষণ করে জানা যায়, তিনি বিভিন্ন মানুষের কাছে টাকার বিনিময়ে দেহপসারিনী সরবরাহ করে থাকেন। র‌্যাবের দল অভিনয়ের মাধ্যমে সামিয়ার অবস্থান নিশ্চিত করে ও সামিয়ার সাথে অপহরণকারী দলের অপরাপর সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।


(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এএ/জেবি)