পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগাররে পরিত্যক্ত জায়গায় হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবারও ছাত্র ধর্মঘট এবং অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী রবি ও সোমবার তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।
শুক্রবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও জনসাধারণের সংহতি প্রকাশের সমাবেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের মুখপাত্র মাহিদুল ইসলাম মাহিম।
এর আগে পূর্ববর্তী কর্মসূচি অনুযায়ী বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারো শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদীর সামনে এসে জড়ো হন। সবার মুখে একটাই স্লোগান ‘জগন্নাথে হল চাই, কারাগারের জমিতে হল চাই।’
সমাবেশে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববদ্যিালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববদ্যিালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংহতি প্রকাশ করে এতে অংশ নেন।
সমাবেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবকে উপদষ্টো রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার কেন্দ্রে থেকেও জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা হল পাচ্ছে না বরঞ্চ পুলিশের গুলি, কাঁদানো গ্যাস খাচ্ছে। হল ছাত্রদের অধিকার, তাদেরকে সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আপনার সন্তানের মতো, আপনি আপনার সন্তানদের মৌলিক অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হন। শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার আবাসন সংকট সমাধান আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না। দরকার হলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত ছাত্র মিঠুন বলেন, ‘হলের জন্য কেন আমাকে গুলি খেতে হলো। এই হলতো আমাদের পাওনা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত একজন ছাত্রও পিছপা হবে না।’
নাজিমউদ্দিন রোড থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর থেকেই এই জায়গায় হল নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ১ আগস্ট থেকে পুরোটা সময় তারা ক্যাম্পাসে ধর্মঘট ডেকে পুরান ঢাকায় সড়কে নেমে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত বুধবার পল্টন মোড়ে অবস্থান শেষে শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
২০০৫ সালে অনাবাসিক হিসেবে যাত্রা শুরু করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১টি হল ও ছাত্রাবাস থাকলেও প্রশাসনের বেখেয়ালিতে সেগুলো বেদখল হয়ে যায়। এগুলো দখলমুক্ত করার দাবিতেও ২০০৭ সাল থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
(ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/ইসরাফিল/জেবি)