পাকিস্তানি জঙ্গি দমনে জম্মু ও কাশ্মির সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ পরিচালনা করেছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চলা এই অভিযানে বেশ কয়েকটি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। খবর এনডিটিভি।
অভিযান চালানো পর বৃহস্পতিবার সকালে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সামরিক অভিযানের ডিরেক্টর জেনারেল রণবীর সিংহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বুধবার মাঝ রাত থেকে এই অভিযান শুরু হয়। সীমান্ত থেকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৫০০ মিটার থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিভিন্ন সেক্টরে ছয় থেকে আটটি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করা হামলা চালানো হয়েছে। স্থল বাহিনী এবং হেলিকপ্টার করে সেনা সদস্যরা এই অভিযানে অংশ নেয়। অভিযানে প্যারা কমান্ডো এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে।’
রণবীর সিংহ আরও বলেন, ‘হামলায় জঙ্গিদের ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব জঙ্গিরা কাশ্মির এবং অন্যান্য শহরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। জঙ্গি আস্তানাগুলো প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল।’
‘নিয়ন্ত্রণ রেখায় থাকা ভারতীয় বিমানবাহিনীসহ সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।’
সূত্র জানায়, সতর্কতা হিসেবে সীমান্তের নিকটবর্তী গ্রামের লোকজনদের তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের ডন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পাক সেনা নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) বিভাগের এক বিবৃতির বলা হয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত গুলি বিনিময় চলে। বিমবার, হটস্প্রিং কেল, লিপা সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ শুরু করলে পাক সেনারাও পাল্টা গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে দুজন নিহত হয়।
পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখতে চাই। আর এই বিষয়টিকে আমাদের দুর্বলতা ভাবা উচিত হবে না।’
সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৮ সেনা সদস্য নিহতের ঘটনায় দুই প্রতিবেশীর দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। হামলার পর থেকেই ভারত অভিযোগ করে পাকিস্তান এই হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তানের তরফ থেকে এই অভিযোগ প্রথম থেকে প্রত্যাখান করে আসছে।