logo ০৪ মে ২০২৫
মঞ্জুর হত্যা মামলা নতুন করে শুনানির নির্দেশ
আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ১১:২২:৩৫
image


ঢাকা: বহুল আলোচিত মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় আজ সোমবার হলো না। বিচারক নতুন করে শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদের উপস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে মামলার নতুন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ মামলার অধিকতর শুননির জন্য নতুন তারিথ ধার্য করেন । বিচারক আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেন। এর আগে বেলা ১১টার পর মামলার প্রধান আসামি এইচ এম এরশাদ আদালতে হাজির হন।এ সময় এরশাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদেরসহ বেশ কয়েকজন জাপা নেতা উপস্থিত ছিলেন।এরশাদ আদালতে হাজির হওয়ার ২০ মিনিট পর বিচারক ফিরোজ এজলাসে হাজির হন। এর পর শুরু হয় শুনানি। এ সময় আদালত বলেন, মামলা সম্পর্কে আমি বিশেষ কিছু জানি না, তাই এব্যাপারে ফের শুনানি শুরু করা দরকার।তবে মামলাটি কবে নাগাদ শেষ হবে সে বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করে  কিছু বলা যাচ্ছে না।বিষয়টি পুরোটাই আদালতের এখতিয়ার। শুনানির নতুন তারিখ ঠিক হওয়ার পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ আদালত চত্বর ত্যাগ করেন।



রায়ের তারিখ ঘোষণার পর মামলার বিচারক বদল হওয়ায় মামলার রায় আজ সোমবার হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। রায়কে ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। গত ২২ জানুয়ারি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হোসনে আরা বেগম রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ ঠিক করেন।

কিন্তু এরই মধ্যে ওই বিচারক (হোসনে আরা বেগম) বদল হয়ে সেখানে খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ নামে নতুন বিচারক আসেন। তাই ১০ ফেব্রুয়ারি রায় হবে কি না এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল আগেই। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আসাদুজ্জামান খান রচিও এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না। এর আগে তিনি বলেছিলেন, এ অবস্থায় রায় হবে কিনা তা বলতে পারছি না।

এ সম্পর্কে এর আগে পিপি রচি বলেছিলেন বিচারক নতুন। সোমবার রায় হবে কি না, নাকি তিনি নতুন করে যুক্তিতর্ক শুনবেন এ সম্পর্কে আদালত থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তিনি জানান, আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেন, বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখি কি করা যায়।

এদিকে একটি সূত্র আগেই জানিয়েছিল, আজ সোমবার রায় হচ্ছে না। নতুন করে যুক্তিতর্ক শুনবেন বিচারক। বিচারক বদল সরকারের ইচ্ছার কারণে হয়েছে। জানা গেছে, সরকার এখনই মামলাটির রায় দিতে চাইছে না। মামলাটির প্রধান অভিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদকে আরেকটু ঝুলিয়ে রাখতে চাইছে সরকার।

উল্লেখ্য ১৮ বছর ধরে চলমান এ মামলায় গত ২৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের ওই যুক্তিতর্কের শুনানি শুরু হয়। এর আগে আসামি এরশাদসহ অপর আসামিদের পক্ষে বেশ কয়েকটি ধার্য তারিখে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবীরা।

মামলায় এরশাদ ছাড়াও মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক, লে. কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মেজর জেনারেল (অব) আব্দুল লতিফ ও লে. কর্নেল (অব) শামসুর রহমান শামসও আসামি।

মামলাটিতে আসামি আব্দুল লতিফ ও  শামসুর রহমান শামস বিষয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় এরশাদ, কাজী এমদাদুল হক ও মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বিরুদ্ধে বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৩২ বছর আগে সংগঠিত এ হত্যাকা-ের বিচার গত ১৮ বছরে প্রায় ১২ জন বিচারকের হাত ঘুরে বর্তমান বিচারক হোসনে আরা আক্তার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় আগে মামলাটির ৪৯ জন সাক্ষির মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সমাপ্ত করে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর গত বছর ২ অক্টোবর আত্মপক্ষের শুনানি হয়। এরপর শুরু হয় যুক্তিতর্ক।

১৯৮১ সালের ১ জুন জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।

১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মঞ্জুরের বড়ভাই ব্যারিষ্টার আবুল মনসুর আহমেদ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।

ওই বছরের ১৫ জুলাই তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

(ঢাকাটাইমস/ ১০ ফেব্রুয়ারি/আরজেড/এআর/ ঘ.)