logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
শিক্ষার্থীদের বিদেশে যাওয়াকে উৎসাহিত করি: জামিলুর
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ১৮:০০:৪৮
image


সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। শিক্ষকতার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অনেক দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির দায়িত্ব পালন করেছেন ৯ বছর। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্যের দায়িত্বে আছেন। কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ, এখনকার তরুণরা কতটা প্রত্যয়দীপ্ত আর দায়িত্বশীল, কোন পথে চলেছে এ সময়ের রাজনীতি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে এই সময়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মহিউদ্দিন মাহী

ঢাকাটাইমস: আপনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় দুটিতেই দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন, এখনো কাটাচ্ছেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে এই দুটির মৌলিক তফাতটা কোথায়?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: এ কথা তো সত্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত মেধাবী ছাত্ররা ভর্তি হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সে তুলনায় মেধাবী ছাত্র অনেক কম। পাবলিকে সেশনজট বেশি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূল নয়, এসব কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান না। তবে পাবলিকে কিন্তু নামেমাত্র বেতন নেয়া হয়। এমনকি হলে যারা থাকে, তারাও হাইলি সাবসিডি পায়। ওখানকার শিক্ষার্থীরা দ্রুত লেখাপড়া শেষ করতে চায়, এমনটাও মনে হয় না। বুয়েটে প্রতিটা পরীক্ষার আগে একটা করে আন্দোলন হয় পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌভাগ্যবশত এখনো এ রকম কোনো আন্দোলন শুরু হয়নি। সেখানে সব কিছু হয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। সেখানে নোটিশ দেয়া থাকে এ রকমÑ প্রথম সপ্তাহে যদি এক দিন হরতাল দেয়া হয়, তা হলে শনিবারে সেই ক্লাসগুলো হবে। যদি দুদিন থাকে তা হলে শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। সপ্তাহে দুদিন পর্যন্ত হরতাল আমরা মেকাপ করতে পারি। তার বেশি হলেও আমরা চেষ্টা করি ম্যানেজ করে নিতে।

ঢাকাটাইমস: প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত শিক্ষা নিয়ে তো ইউজিসি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কী?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অধিকাংশের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সত্যতাও রয়েছে। তবে এর মধ্যেও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় খুবই ভালো করছে। তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। যেমন- এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিচ্ছে। এভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও অনেকে সুযোগ পাচ্ছে।

ঢাকাটাইমস: তবে যেসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সনদ-বাণিজ্য করছে তাদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের কার্যক্রম শুরু হলে সনদ-বাণিজ্য অনেকটা কমে যাবে। কারণ তখন তো অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও খুঁজবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের অনুমোদন আছে।

ঢাকাটাইমস: অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের কাজটা কী?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান, সিলেবাস, দক্ষ শিক্ষক নিয়োগসহ সব বিষয় মনিটরিং করে গুণগত মান নিশ্চিত করে তারপর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্রেডিটেশন অনুমোদন দেবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্রেডিটেশন দেয়ার জন্য একটা অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড আছে। আমি সেই বোর্ডের সভাপতি। এখানে আমরা সরেজমিন টিম পাঠিয়ে সব বিষয় ভালোভাবে অনুসন্ধান করে অ্যাক্রেডিটেশন অনুমোদন দিই।

ঢাকাটাইমস: দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশ চলে যাচ্ছে। তারা আর ফিরছে না। বাংলাদেশ তো তাদের অবদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বলুন।

জামিলুর রেজা চৌধুরী: মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিদেশে যাওয়ার বিষয়টিকে আমি উৎসাহিত করি। তারা বিদেশে গিয়ে ইনভোটিভ চিন্তাভাবনা করছে। নতুন জ্ঞান সঞ্চয় করছে। নতুন নতুন আবিষ্কারও করছে। প্রাযুক্তিক উন্নয়নে তারা বিশেষ অবদান রাখছে, যা দেশের জন্যও মঙ্গলজনক। তারা এসব জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হয়ে আমাদের দেশে এসে একটা সময় বড় কিছু করবে। কিন্তু আমাদের দেশে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে সরকারকে। তারা বিদেশে গিয়ে কিন্তু অনেকেই দেশে ফিরছে না। এর কারণ, তারা যা শিখছে তার অ্যাপলিকেশন আমাদের দেশে নেই। যেটা ভারত ও চীন করছে। তাদের দেশের বড় বড় বিজ্ঞানীরা এখন দেশে ফিরছে। কারণ তারা ক্ষেত্র তৈরি করতে পারছে।

ঢাকাটাইমস: মাস্টার্স সবার জন্য রাখা হবে না- ইউজিসির এ রকম একটা সুপারিশ রয়েছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে আমি একমত। কারণ মাস্টার্স তারাই করবে যারা গবেষণা ও শিক্ষকতায় যাবে। এ ছাড়া চাকরি ক্ষেত্রে মাস্টার্স থাকা দরকার নেই।

ঢাকাটাইমস:কিন্তু বিভিন্ন চাকরির জন্য তো মাস্টার্স চাওয়া হয়।

জামিলুর রেজা চৌধুরী: যারা চাকরির অফার দেয় তাদের বুঝতে হবে মাস্টার্স দরকার নেই। চার বছরের অনার্স কোর্স পড়ে আবার মাস্টার্স লাগবে কেন?

ঢাকাটাইমস: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স চালু নিয়ে আপনার মতামত কী?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যদি শিক্ষার্থীদের অধিকার খর্ব না হয় তা হলে সান্ধ্য কোর্স চালুতে সমস্যা কোথায়? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ফ্যাকাল্টিতে তো এই কোর্স চালু আছে। সেখানে তো আন্দোলন হচ্ছে না।

ঢাকাটাইমস: আপনি একসময় বাংলাদেশকে নিয়ে তিনটি স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। আপনার সেই স্বপ্ন আর বর্তমানের বাংলাদেশের বাস্তবতা কতটা সাংঘর্ষিক বলে আপনি মনে করেন?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: দুঃখজনক হলেও সত্য, জাতি হিসেবে আমরা স্বপ্ন দেখার কথা ভুলে গেছি। অনেক দিন থেকে আমাদের যা কিছু হচ্ছে প্রকল্প, পরিকল্পনা সব বিদেশিরা এসে করে দিচ্ছিল। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ইউএনডিপি এরাই সব বলেছিল। মনে হচ্ছিল, এরাই আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ। এ কারণে প্রথম গণিত অলিম্পিয়াডে আমি মনে করেছিলাম, তরুণরা যাতে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে তার জন্য তাদের স্বপ্ন দেখানো জরুরি। তখন আমি ওই স্বপ্ন তিনটির কথা বলি। এগুলো ছিলÑ ক. ২০১০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত হবে। খ. ২০২২ সালের মধ্যে গণিতে ফিল্ডস পদক পাবে। গ. ২০৩০ সালের মধ্যে নোবেল পুরস্কার পাবে। মজার ব্যাপার, প্রথম স্বপ্নটা নির্দিষ্ট সময়ের এক বছর আগেই পূরণ হয়েছে। বাকিগুলোও হবে বলে আমার বিশ্বাস।

আমি তো আশাবাদী মানুষ, আশা কখনো ছাড়ি না। বর্তমান পরিস্থিতিকে আমি সাময়িক সংকট বলে মনে করি। এ অবস্থার শিগগিরই উত্তরণ ঘটবে বলে আমি আশাবাদী। স্বাধীনতার পরও তো আমরা এ রকম সংকটে পড়েছি এবং তা কাটিয়েও উঠেছি। ’৯০, ৯৬-এর উদাহরণ তো রয়েছেই।

ঢাকাটাইমস: রাজনৈতিক সংকট তো অনেক সময় শিক্ষাব্যবস্থার ওপরও পড়ে?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: বর্তমানের যে রাজনৈতিক সংকট তার একটা নেতিবাচক প্রভাব তো শিক্ষাঙ্গনের ওপর পড়ছেই। এমনিতেই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ে নানা রকম দুশ্চিন্তায় থাকে, তার ওপর যদি যোগ হয়, কালকে পরীক্ষা হবে কি হবে না। আর হলে পরীক্ষার কেন্দ্রে সময়মতো পৌঁছাতে পারবে কি না। এসব চিন্তা তাদের স্নায়ুর ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করে। এর বাইরে আমি যেটা মনে করি যে, এসব বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান আহরণের প্রচেষ্টাটা আগের চেয়ে অনেক বেশি। এখন কিন্তু বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে তরুণরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার খোঁজখবর রাখছে। রাজনীতি-অর্থনীতি থেকে শুরু করে সব বিষয়ে তরুণরা আমাদের সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল।

ঢাকাটাইমস: এ সংকট থেকে আমাদের মুক্তি কোথায়? আমরা কিছুদিন পর পর কি সংকটেই পড়তে থাকব?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: এই সংকট থেকে মুক্তির উপায় তো আমাদের কাছে নেই। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছি রাজনীতিবিদদের ওপর। তারা যদি নিজেদের মধ্যে মারামারি করেন তা হলে আমরা কিই বা করতে পারি। আমরা তো ভোট দিয়ে তাদেরই নির্বাচিত করি। এর বাইরে তো আমরা যেতে পারছি না। পাশ্চাত্যের যে গণতন্ত্রের মডেল, তাদেরও কিন্তু বহুদিন লেগেছে একটা পর্যায়ে আসতে। যদিও এমন উদাহরণ রয়েছে, আমাদের পরে গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে এসেও তারা একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে গেছে, যেখানটায় আমরা যেতে পারিনি। মালয়েশিয়াকেও উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়। ওরা আমাদের মতো নিজেদের মধ্যে মারামারি করে না।

ঢাকাটাইমস: আমাদের তো অনেক সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনার পথে আমরা কতটুকু এগোচ্ছি বলে আপনার মনে হয়?

জামিলুর রেজা চৌধুরী:পৃথিবীতে এ রকম হোমোজেনিয়াস দেশ খুব কম আছে। ভাষা, ধর্ম আমাদের এখানে ৯০ শতাংশেরও বেশি লোকের এক। যদিও বাঙালিকে বলা হয় একটি বর্ণ-শঙ্কর জাতি। তবে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে শঙ্করেরও একটি নিজস্ব চরিত্র দাঁড়িয়েছে। অথচ আমরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছি। যদিও আমি জানি, যারা মারামারি করছে, তারা সবাই একে অপরের আত্মীয়। প্রত্যেকেই ইন্টার-রিলেটেড। আমার তো মনে হয়, ১৬ কোটি মানুষের দেশে কয়েক হাজার পরিবার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার তারাই মারামারি করছে। এটা অবশ্য ক্ষমতার লোভ।

ঢাকাটাইমস: ঢাকা শহরের যানজট দূর করার জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে, বাস্তবতা হলো যানজট সেই অর্থে দূর হচ্ছে না, কেন?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: সরকারের এ ধরনের বেশ কিছু কাজের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত রয়েছি। যার একটা হলো, ২০২৫ পর্যন্ত ঢাকা নগরীর যোগাযোগব্যবস্থা। আমাদের জনসংখ্যা সেই সময় কত হবে, ট্রিপ জনসংখ্যা কত হবে এর ভিত্তিতে পরিকল্পনাটা করা। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভারটা ছিল না। এই দিক দিয়ে এলিভেটেড রেললাইন হওয়ার কথা ছিল। ফ্লাইওভার করাতে সেটা বন্ধ হয়ে গেল। আমাদের পরিকল্পনায় তিনটা ছিল বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট আর তিনটা ছিল রেল। মেট্রোরেলের কাজটা এত দিনে শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। একটা সিদ্ধান্তের জন্য আমরা পিছিয়ে পড়ি। সেটা তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দরের দক্ষিণ দিকে হওয়ার কথা ছিল, যা পরিবর্তন করে খামারবাড়ির সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটা কথা কিন্তু সত্য, ফ্লাইওভার দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমস্যার সমাধান দেয় না। ফ্লাইওভার মূলত প্রাইভেট গাড়ি যাওয়ার জন্য। প্রাইভেট গাড়ি যদি বাড়তে থাকে, তা হলে এটা নেভার এন্ডিং প্রবলেম। সবচেয়ে কার্যকর দিক হলো, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বাড়ানো। স্বল্প দূরত্বে মানুষের হাঁটার অভ্যাস বাড়াতে হবে।

ঢাকাটাইমস:বাংলাদেশ কতটা ভূমিকম্প ঝুঁঁকিতে রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: আমি যখন ছাত্র ছিলাম, তখন বাংলাদেশে যে ভূমিকম্প হতে পারে এই কথাটা কখনো বলা হয়নি। বলা হতো, নেপালে, বিহারে ভূমিকম্প হয়েছে। আমি পিএইচডি করার পর দেশে ফিরে বুয়েটে ভূমিকম্প বিষয়ে পড়াতে থাকি। পরে বিআইটিগুলোতেও বিষয়টি যুক্ত হয়। একসময় বলেছিলাম, আমাদের দেশের উত্তর-পূর্বতে ভূমিকম্প ঝুঁঁকি বেশি। নতুন ডাটা অ্যানালিসিসে ঝুঁঁকির মাত্রায় তারতম্য ঘটেছে। যেমন সর্বশেষ বিশ্লেষণ বলছে, চট্টগ্রাম এখন অধিক ঝুঁঁকিতে রয়েছে, যেটা আগে মাঝারি ঝুঁকিতে ছিল। বড় বড় ভূমিকম্প হয়, প্লেট বাউন্ড্রির কারণে। যেটা আমাদের দেশে নেই।

ঢাকাটাইমস: ভূমিকম্পজনিত কারণে ঢাকা কতটা ঝুঁঁকির মুখে রয়েছে?

জামিলুর রেজা চৌধুরী: ঢাকা ঝুঁঁকির মুখে রয়েছে মূলত তার ভবনের কারণে। এখানকার হাইরাইজড-মিডিয়াম রাইজড ভবনের অনেকগুলোই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। ঢাকাতে যদিও ঝুঁঁকি কম; কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি ঢাকায় হবে। ঢাকায় এখন ছয়তলা অ্যাপার্টমেন্ট খুব পপুলার। যার নিচের তলা খোলা, কার পার্কের জন্য। আর ওপরে রয়েছে পাঁচটা ফ্লোর। এ ধরনের ভবন খুবই ঝুঁঁকিপূর্ণ।

ঢাকাটাইমস: আপনি তো ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন, সেই অভিজ্ঞতার কথা যদি বলেন।

জামিলুর রেজা চৌধুরী: সবচেয়ে স্মরণীয় দিন হলো ১৯৯৬ সালের ২০ মে। সেদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আমরা সব উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক জায়গা থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছিলাম। কারণ সেদিন ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল।

(ঢাকাটাইমস/২৫ ফেব্রুয়ারি / এমএম/ এআর/ ঘ.)