ঢাকা: প্লটের বদলে ফ্ল্যাট দিলে বেশি মানুষকে সুবিধা দেয়া যায়-এই চিন্তা থেকে ২০১০ সালে উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। পরিকল্পনা ছিল ২০১৪ সালের মধ্যে সাড়ে ছয় হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করে ২০১৬ সালের মধ্যে তা বুঝিয়ে দেয়া হবে গ্রাহকদের মধ্যে। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এনামুল হকের এনা প্রপার্টিজ সময় মতো ন্যূনতম কাজও শেষ করতে পারেনি। এ ব্যাপারে রাজউক এনাকে চার দফা চুক্তি বাতিলের চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু অগ্রগতি না দেখে সম্প্রতি এনা প্রপার্টিজ ও এর অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাবতীয় চুক্তি চূড়ান্তভাবে বাতিল করেছে রাজউক। তবে এনা প্রপার্টিজ এখনও রাজউককে মামলার ভয় দেখিয়ে আসছে।
চুক্তি অনুযায়ী সময় মতো কাজ করতে না পারায় তিনশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। কাজ করতে না পারলে জরিমানা ও প্রকল্প এলাকার মালামাল জব্দ করার কথা বলা আছে। কিন্তু রাজউকও এই ক্ষতিপূরণ আদায়ে ইতিপূর্বে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তবে এনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংসদ সদস্য এনামুল হকের দাবি, এক পক্ষের সিদ্ধান্তে চুক্তি বাতিল হতে পারে না। দুই পক্ষের সম্মতি লাগে। খুব শিগগির পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন বলেও জানান তিনি।
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এনার প্রপার্টিজের সঙ্গে রাজউকের চুক্তি হয়। প্রকল্পে ৪৯টি ১৬ তলা ভবন নির্মাণে কাজ পায় তারা। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছরে ৩৩ শতাংশ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র চার দশমিক ৫০ শতাংশ। কাজের অগ্রগতি না থাকায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরে এনা প্রপার্টিজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বিষয়ে নোটিশ দেয় রাউজক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকা ছেড়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু তারপরও কাজে অগ্রগতি হয়নি। বরং প্রকল্প এলাকা ছাড়েনি এনা প্রপার্টিজের লোকজন। উল্টো সংসদ সদস্য এনামুল হক গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মৌখিকভাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় নেন। এর মধ্যে তিনি আদালতে যান। যে কারণে রাজউক পুনঃদরপত্র আহবান করতে পারেনি। তবে সম্প্রতি চিঠির মাধ্যমে রাজউক কর্তৃপক্ষ এনা প্রপার্টিজ ও এর অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাবতীয় চুক্তি বাতিল করেছে।
রাউজক সূত্র জানায়, এনা প্রপার্টিজ মামলার ভয় দেখিয়েছে। তাই প্রকল্পের এ ব্লকের পরিবর্তে একই আয়তনে ‘বি’ ব্লকে ৫৯টি ১৬ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মামলা হলেও প্রকল্পটি যাতে আটকে না যায়, সে জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখন নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে যাবে। অতিরিক্ত খরচ হবে ৫৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান মো. নূরুল হুদা বলেন, কাজের ন্যূনতম (৮৭ শতাংশের স্থলে ১.১৫ শতাংশ) অগ্রগতি না হওয়ায় এনা প্রপার্টিজ ও অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ঠিকাদারদের সরঞ্জামাদিও সরিয়ে ফেলা হবে।
এতে গ্রাহকরা সময় মতো ফ্ল্যাট বুঝে পেতে দেরি হবে কিনা জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিকল্প হিসেবে ইতিমধ্যে ‘বি’ ব্লকে সমান আয়তনের ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগির দরপত্র আহবান করা হবে।’
রাজউক সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য এনামুল হকের প্রভাবের কারণে সময় মতো কাজ শেষ করতে না পারলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিল না রাজউক। উল্টো আদালতে রাজউকের বিরুদ্ধে মামলা করার ভয় দেখাচ্ছিল এনা প্রপার্টিজ। প্রকল্পের একজন কমকর্তা বলেন, ‘এমনিতেই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নেই। তার ওপর যদি এনিয়ে আদালতে যাওয়া হয় তবে প্রকল্পটি একেবারেই মুখ থুবড়ে পড়বে। এতে ফ্ল্যাট কেনার জন্য যারা জামানত এবং প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছেন তারা আরও ভেঙে পড়বে।’
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য এনামুল হক ঢাকাটাইমসে বলেন, ‘রাজউকের ভুলের জন্যই প্রকল্পটির কাজে দেরি হচ্ছে, আমাদের নয়।’
কাজ না করেই টাকা কামানোর চিন্তা: রাজউকের সঙ্গে ফ্ল্যাট নির্মাণের চুক্তি করলেও খুব বেশি কাজ করার পরিকল্পনা কখনোই ছিল না এনা প্রপার্টিজের। বরং কাজ পাওয়ার পরই তা ভাগ করে চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে। ব্লক ‘এ’তে প্রায় দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকার কাজটি করতে শুরু থেকেই কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ডুঙ্গা ও ডিডিজেকে সামনে আনা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এনা ব্রাদার্স ইন্টারন্যাশনাল নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের কাজ ভাগ করে দেয়া হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ার এএলম বিল্ডার্স এবং গোমিল্যাং ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওএ) সই করে। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি সামিন রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে সাব-কন্ট্রাকে কাজ দেয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে রাজউককে কিছুই জানায়নি এনা প্রপার্টিজ।
সামিনের সঙ্গে এনা প্রপার্টিজের যে চুক্তি হয়েছে তাতে বিভিন্ন বিষয়ে ৩২টি চুক্তির কথা বলা আছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এনার বাকি কাজ সামিন নিজ খরচে শেষ করবে। এখানে সার্বিক তত্ত্বাবধান, নিজস্ব জনবল এবং যন্ত্রপাতি সবই সামিনকে দিতে হবে। সামিন এককভাবে এবং একক সিদ্ধান্তে নির্মাণ কাজ শেষ করবে। রাউজক বা গণপূর্ত অধিদপ্তর এনা প্রপার্টিজকে বিল পরিশোধ করলে সামিন রিয়েল এস্টেটের বিভিন্ন হিসাব নম্বরে দিয়ে দেয়া হবে।
জানতে চাইলে রাজউক বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা) শেখ আবদুল মান্নান বলেন, সামিনকে সাব-কন্ট্রাকে কাজ দেয়ার ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।
টাকা জমা দিয়ে হতাশ গ্রাহকরা : রাজউকের উত্তরা ফ্ল্যাটের জন্য তিন লাখ টাকা জামানত দিয়েছিলেন নওশের আলী। ২০১৪ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে, জামানত দেওয়ার সময় এমন কথাই শুনেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রকল্প এলাকা ঘুরে এখনও ধু ধু মাঠ পড়ে থাকতে দেখে আশাহত হয়েছেন তিনি। ঢাকাটাইমসকে নওশের বলেন, ‘সারাজীবন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে সংসার চালিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছুই করতে পারিনি। শেষ বয়সে এসে কম দামে সরকারি ফ্ল্যাট কেনার জন্য জামানত দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখে মনে হচ্ছে আগামী দশ বছরেও ফ্ল্যাট বুঝে পাবো কি না তার ঠিক নেই।’
প্রকল্পের কাজের এই মন্থরগতি ক্রমেই অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে বড় এই আবাসন প্রকল্পটি। এমন অনিশ্চয়তা পেয়ে বসেছে গ্রাহকদেরও। রাজউক জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪০ গ্রাহক তাদের জামানতের ও প্রথম কিস্তির টাকা তুলে নিয়েছেন। আবেদন করেছেন আরও অনেকে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে। আর হতাশ এক হাজার গ্রাহক। তারা কিস্তির টাকা পরিশোধই করেননি। এই প্রকল্পের মোট ছয় হাজার ৬৩৬টি ফ্ল্যাট লটারির মাধ্যম সাধারণ মানুষকে বরাদ্দ দেয়া হয়। এজন্য প্রত্যেক গ্রাহককে জামানত হিসেবে ৩ লাখ এবং প্রথম কিস্তির ৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে দিতে হয়েছে ৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
বাড়ছে প্রকল্প ব্যয় : রাজউক সূত্র জানায়, ‘এ’ ব্লকের ভবনগুলোর ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিল ২০০৮ সালের নির্মাণসামগ্রীর বাজার দর হিসাবে। এখন নতুন দরপত্রে ব্যয় ধরা হবে ২০১৪ সালের বাজার দর অনুযায়ী। ফলে বাড়তি খরচ হবে ৫৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাড়তি টাকা কে দেবে এখনো সে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, উন্নয়ন ফি হিসেবে তা বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের ঘাড়েই আসতে পারে।
ক্ষতিপূরণের বিধান আছে, বাস্তবায়ন নেই : রাজউক জানায়, দুটি ভবন অর্থাৎ একেকটি লটের খরচ ধরা হয়েছিল গড়ে ৭০ কোটি টাকা। চুক্তিতে বলা আছে সময় মতো কাজ শেষ করতে না পারলে ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। প্রতিটি লটের মোট খরচের ২০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা। সে হিসেবে ২৫টি লটের জন্য এনা প্রপার্টিজকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হবে ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এনাকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়নি। এমনকি ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য কোনো চিঠিও দেয়নি রাজউক।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শাহিনুর আলম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে বিব্রতবোধ করেন। প্রয়োজনে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। প্রকল্প পরিচালক প্রফুল্ল চন্দ্র ভৌমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে কল করতে বলেন।
আইন ভেঙে সরকারের সঙ্গে ব্যবসা : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ ধারা অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করা অবৈধ। তারপরও এনামুল হকের মালিকানাধীন এনা প্রপার্টিজ রাজউকের ৪০টি ভবন তৈরির কাজ নিয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর হামিদ রিয়েল এস্টেট নিয়েছে ১৬টি ভবনের কাজ। অবশ্য চুক্তির জন্য বেশ কৌশল করেছেন এনামুল হক। এনা প্রপার্টিজের তিনিই হর্তাকর্তা হলেও রাজউকের সঙ্গে চুক্তির আগেভাগে তিনি কোম্পানির সব পদ ছাড়েন। কিন্তু পদ না থাকলেও সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনিই।
এর আগে এনা প্রপার্টিজ লিমিটেড এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মধ্যে বহুতল সিটি সেন্টার নির্মাণের একটি চুক্তি হয়েছিল। সেখানে সংসদ সদস্য এনামুল হক নিজে সই করেছিলেন। এছাড়া রাজশাহীতে সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন আরেকটি প্রতিষ্ঠান নর্দান পাওয়ার সল্যুশন লিমিটেড সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে। বিষয়টিকে আমলে এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংসদ সদস্য এনামুল হকের বিরুদ্ধে আরপিও অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে অনরোধ করেছিল। কিন্তু তারপর এ ব্যাপারে কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।
তবে সংসদ সদস্য এনামুল হকের দাবি, যা কিছু করছেন আইন মেনেই করছেন। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে দরপত্রের মাধ্যমে যে কাজ পাই তা আমরা করি। এটা তো আমার দোষের কারণ হতে পারে না। ব্যবসা করে খাব, না হলে কী করে খাব?’
এনামুল হক বলেন, ‘এনা প্রপার্টিজ এবং নর্দান পাওয়ার সল্যুশন লিমিটেড সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে গেছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আমার অংশীদারিত্ব ২০ শতাংশের নিচে, ১৯ শতাংশের কিছু বেশি। চুক্তির আগেই আমি এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এখানে আমি একজন শেয়ার হোল্ডার মাত্র। আইন মেনেই সব করা হয়েছে। আমি একজন সংসদ সদস্য এবং আইন প্রণেতা। আমি আইন ভঙ্গ করতে পারি না।’
সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী সাবেক সাতজন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তালিকায় আছেন সংসদ সদস্য এনামুল হকও। তার সম্পদের অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপ-পরিচালক যতীন কুমার রায়। এরই মধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পিপলস লিজিং কোম্পানি, ব্যাংক আলফালাহ, ব্র্যাক-ডেল্টা হাউজিং, রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রার, বাগমারা, নওগাঁ, নওয়াবগঞ্জ এবং নাটোর সাব-রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে অর্থ ও স্থাবর সম্পত্তির তথ্য তলব করেছে দুদক।
দুদক মনে করছে, নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখের বাইরে এনামুল হকের বিপুল পরিমাণ সম্পদ আছে। এর মধ্যে লিমিটেড কোম্পানি, প্রোপ্রাইটারশিপ এবং পার্টনারশিপে তার অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে এনা প্রপার্টিজ, সালেহা-ইমারত কোল্ড স্টোরেজ, এনা-ডুঙ্গা লিজিং, নর্দান পাওয়ার সল্যুশন লিমিটেড, এনা ইন্টারন্যাশনাল, এনা কারস, এনা এনার্জি লিমিটেডের অবস্থান চিহ্নিতকরণের কাজ করছে দুদক।
তবে দুদকের অনুসন্ধানকে অকারণ বলছেন এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে তা একচুল পরিমাণ প্রমাণ হলে সেদিনই আমি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করব। সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে কোনো দিনও নির্বাচনের জন্য যাব না। আমি মনে করি দুদক তা প্রমাণ করতে পারবে না।’
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী যা বলেছেন : সম্প্রতি উত্তরায় প্রকল্প এলাকা ঘুরে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকের ফ্ল্যাট গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জনগণের আস্থার প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে। যেসব ঠিকাদার সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে, তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এসব ভবনের কাজ বরাদ্দের জন্য নতুনভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ফ্ল্যাট নির্মাণ করে অল্প স্থানে অধিক লোকের আবাসন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’
জানতে চাইলে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সাবেক সভাপতি এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আউয়াল বলেন, অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের কাজ রাজউকের নয়, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের। তার মতে, উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের জন্য আবার দরপত্র আহবান করা হলে তা যেন বৃহদাকারের না হয়ে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা হয়। তাহলে অনেকেই অংশ নিতে পারবে এবং প্রতিযোগিতাও বাড়বে।
(ঢাকাটাইমস/১২র্মাচ/এইচএফ/এমএম/এআর/ ঘ.)