logo ০৩ মে ২০২৫
রহমত আলী ও তাঁর গুণধর পুত্রের উপাখ্যান
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
১৮ মার্চ, ২০১৪ ১৮:৪৩:১২
image


ঢাকা: ‘নাম দুর্জয় হইলেও শ্রীপুরের মানুষ হেরে দুর্যোগ বইল্যা ডাহে। এমপির পোলা হইলেই এমন সন্ত্রাস করতে হইবো! লালবাহিনী, খোটাবাহিনী আরও যে কত কী। সিনামারেও হার মানায়।’ কথাগুলো গাজীপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের। বলছিলেন গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর-গাজীপুর সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য রহমত আলীর পুত্র জামিল হাসান দুর্জয় সম্পর্কে।

গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি জবরদখল, বালুমহাল, জুট ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, টিআর-কাবিখা লুট, বন কেটে উজাড় সবকিছুর পেছনেই সাংসদ রহমত আলীর ছেলেকে অভিযুক্ত করছেন আওয়ামী লীগেরই একাংশের নেতা-কর্মীরা। এসব নিয়ে সরকারি দলে বড় ধরনের ভাগাভাগি হয়ে গেছে। আর উপজেলা নির্বাচনে এলাকায় দুই ভাগ হয়ে গেছে দল। গত ১০ মার্চ দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন মারাও গেছে।

দুর্জয় এত খারাপ হলে প্রতিবাদ করেন না কেন, জানতে চাইলে শ্রীপুরের বহেরারচালা গ্রামের নাছির ফকির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিবাদ করি নাই আবার। কিন্তু এমপির পোলায় হের বাহিনী দিয়া আমারে ধইরা নিয়া জানের ভয় দেখাইয়্যা জমি রেস্টরি (রেজিস্ট্রি) কইরা নেয়। আমার ৯ বিঘা জমি এমনেই বেদখল হইয়া গেছে। বিচার পাই নাই।’ নাছির ফকির বহেরারচালা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা।

ব্যাংক থেকে আলোচিত বিসমিল্লাহ গ্রুপের হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জামিল হাসান দুর্জয়ের নাম এসেছে। বিসমিল্লাহ গ্রুপের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সময় ওই গ্রুপের একটি গাড়ি ছিল তার কব্জায়। এসব নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হয়েছেন তিনি।  

শ্রীপুরের স্থানীয়দের অভিযোগ, ছেলের নানা অপকর্মের ব্যাপারে সাংসদের কাছে অভিযোগ করা হলে বরাবরই তিনি নির্লিপ্ত ছিলেন।

তবে জানতে চাইলে সাংসদ রহমত আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এসব সত্য নয়। সব মিথ্যা। আমার পরিবারের কেউ কোনো অপকর্ম বা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন।’

রহমত আলীর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বয়সের কারণে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর এই সদস্যের। তাই তাঁর জায়গায় ছেলেকে বসিয়ে যেতে চান পাঁচবারের নির্বাচিত এই সাংসদ। কিন্তু তা মানতে নারাজ গাজীপুর জেলা ও শ্রীপুর আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীপুরের ছয়টি কলেজের প্রত্যেকটি কমিটিই রহমত আলীর কব্জায়। এর মধ্যে দুটিতে তিনি নিজে, তিনটিতে ছেলে এবং একটিতে মেয়েকে সভাপতি করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীপুর থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘সাংসদকে কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি করা হলে তিনি তাঁর ছেলেকে দেখিয়ে দেন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা যেখানে বিশেষ অতিথি সেখানে সাংসদের ছেলেকে প্রধান অতিথি করার আবদার অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়।’

তবে সাংসদ রহমত আলীর দাবি, তিনি কাউকে জোর করে তাঁর জায়গায় বসাতে চান না। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার মৃত্যুর পর কে আমার জায়গায় আসবে এটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। আমার দুই ছেলে, এক মেয়ে। আমি বিশেষভাবে কাউকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই না। যোগ্যতা দিয়ে যে জায়গা করে নিতে পারবে সেই থাকবে।’

সাংসদ রহমত আলীর বিতর্কিত রাজনৈতিক জীবন

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তিনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পাশে থাকেননি দলের মূল অংশের সঙ্গে। জাতির জনক খুনের পর রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মুশতাক আহমাদের স্বনির্ভর বাংলাদেশের সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। এমনকি গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রকাশ্য সভায় খোন্দকার মুশতাকের হাতে উপঢৌকনও তুলে দেন রহমত আলী।

জানতে চাইলে রহমত আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘খোন্দকার মুশতাকের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমি কখনই জড়িত ছিলাম না। তবে আওয়ামী লীগে আসার আগে জাসদের রাজনীতিতে ছিলাম।’

উপজেলা কার্যকর হয়নি তার জন্য

সরকারের গত মেয়াদে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন সাংসদ রহমত আলী। অভিযোগ আছে, উপজেলা পরিষদকে অকার্যকরের জন্য যে আইনকে দায়ী করা হয় তা হয়েছিল তাঁর কারণেই। কারণ, উপজেলা পরিষদের সংসদ সদস্যদের অযাচিত নিয়ন্ত্রণ ও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণেই উপজেলাকে কার্যকর করা যাচ্ছে না। উপজেলা পরিষদ আইনে সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টা করে তাদের পরামর্শ মানা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন সবুজের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে জয়ী হতে এ ধরনের আইন করেছিলেন। মূলত নিজ উপজেলার চেয়ারম্যানকে শায়েস্তা করার জেদই তাকে আইনে এমন সংশোধনী আনতে বাধ্য করেছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বর্তমান উপজেলা পরিষদ সম্পূর্ণরূপে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠান। উপজেলা পরিষদ কার্যকর করা না গেলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসঙ্গত হয় না। ’

সাংসদ রহমত আলীর দাবি, আইন সংশোধনের ফলে উপজেলা পরিষদ আরও কার্যকর হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরেছি। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আইন সংশোধন করা হয়েছে। এখন উপজেলা পরিষদ আগের চেয়ে অনেক কার্যকর।’

জমি দখলের মচ্ছব, বাদ যায়নি মুক্তিযোদ্ধাও

আওয়ামী লীগের সমর্থক হয়েও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন শ্রীপুরের বাসিন্দারা। এমনকি নিজ দলের লোকজনই জবরদখল করে নিয়েছেন তাদের ভূসম্পত্তি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহাজোট সরকারের গত মেয়াদে শ্রীপুরে দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছেন সাংসদ-পুত্র দুর্জয়। গাজীপুর ইউনিয়নের শৈল্য গ্রামের প্রায় ৮০০ বিঘা জমি ভুয়া কাগজপত্র ও দলিল করে দখল করে নেওয়ার অভিযোগ আছে দুর্জয়ের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বেদখল হতে বসেছিল তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের ভাগ্নের জমি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রশাসনের চাপে তা ফেরত দিতে বাধ্য হয় দখলদাররা।

মাওনা চৌরাস্তার আহম্মদ আলীর জমি জনৈক নজরুল ইসলামের নামে বায়ন করে লালবাহিনীর লোকজন। একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ছোট ভাই হায়দার আলীর দুই বিঘা জমিও দখলে নিয়েছিল দুর্বৃৃত্তরা। এই দুই বিঘা জমির দাম প্রায় দুই কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীর তিন বিঘা এবং মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুস মাস্টারের দেড় বিঘা জমিও রেহাই পায়নি তাদের হাত থেকে। এর মধ্যে মোবারক আলীর জমি দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। জমি দখলের প্রতিবাদ করায় ১২ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেওয়া হয়। পরে এ জন্য শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার বাদীকে তিরস্কার করে উচ্চ আদালত।

বেহাত হয়েছে এমন প্রায় অর্ধশত জমির মালিকের তালিকা এসেছে এখন ঢাকাটাইমসের হাতে। এর মধ্যে দেখা গেছে, শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আব্দুস সামাদের প্রায় পাঁচ বিঘা জমি অবৈধ দখলে নিয়েছে দুর্জয়ের লোকজন। সেখানে সীমানা প্রাচীরও তুলেছেন তারা। একই গ্রামের রহিজ উদ্দিনের দুই বিঘা জমি দখলে নিয়েছে সাংসদ-পুত্রের লোকজন। মাওনার কয়েদ আলীর প্রায় এক বিঘা জমি বেহাত হয়েছে।

কাওরাইদের আব্দুল হামিদ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, জামাল চৌধুরী, কামরুল চৌধুরীর আনুমানিক ১০ বিঘা জমি বেহাত হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। কেওয়া পূর্ব খ-ে অন্ধ নারী কুলসুম বিবির ৪০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কেওয়া পশ্চিম খ- গ্রামের আহম্মদ আলী, নজরুল ইসলাম এবং ফয়েজ উদ্দিনের ৫৫ শতাংশ জমিও বেদখলে আছে। একই গ্রামের সাবেক কমিশনার মোশারফ হোসেন বাবুলের ১০ বিঘা সম্পত্তি দখল করে তাতে সীমানা প্রাচীর তুলেছে অবৈধ দখলদাররা। এছাড়া কাওরাইদ গ্রামের সুলতান উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, আবু সাঈদ, মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম আজাদÑএই পাঁচ ভাইয়ের ৭৫ শতাংশ জমি দুর্জয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বেদখল হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

তবে সাংসদ-পুত্র জামিল হাসান দুর্জয়ের দাবি এসব দখলদারিত্বের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘নিজের কাজ করেই সময় পাই না, অন্যের জমি জবরদখল করার সময় কোথায়? কোনোদিন কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে, কারো সম্পদ অন্যায়ভাবে জবরদখল করেছি। আমাদের পারিবারিক ভাবমূর্তিকে ক্ষুণœ করার জন্যই এসব অপপ্রচার করা হয়।’  

চর দখল করে বালু উত্তোলন

শ্রীপুরের গ্রাম বরামার শীতলক্ষ্যার শাখানদী বানার থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগও আছে স্থানীয় রাজ্জাক ব্যাপারি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বালু তুলে তা কৃষিজমির ওপরে রাখায় কৃষক ফসল চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব নিয়ে থানায় মামলাও করতে পারেননি ভুক্তভোগীরা। এর পেছনেও সাংসদ রহমত আলীর ছেলে দুর্জয়ের নাম এসেছে।

কৃষিজমিতে বালু ফেলে রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত জালাল প্রধান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কওয়া নাই বলা নাই আমার ২৫ বিঘা জমিতে বালু তুইল্যা দুর্জয়ের লোকজন বালু মহাল বানাইছে। প্রতিবাদ করতে গেলে হের লোকজন আমারে ভয়ভীতি দেখাইছে। ’

জানতে চাইলে জামিল হাসান দুর্জয় বলেন, ‘বালুমহালের ব্যবসা আমার কোনোদিন ছিল না, এখনও নেই। এতকিছু রেখে আমি বালুর ব্যবসা করতে যাব কেন?’ তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অনৈতিকভাবে তার ব্যাপারে মিথ্যাচার করছে।

বনভূমি বেহাত

শ্রীপুরের সাতখামাইর বনবিট অঞ্চলে ১৫ নম্বর সাতখামাইর মৌজার সিএস ২৭৪১ দাগের প্রায় ৬৫ একর বনভূমি প্রায় বেহাত হওয়ার পথে। অভিযোগ আছে, ‘ভূমিহীন’ নামধারী একটি প্রভাবশালী চক্র তিন বছর আগে রাতারাতি বনবিট অঞ্চলে ঘর তুলেছেন। রাতের আঁধারে বনের গাছ কেটে কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ আছে সাংসদ-পুত্রের সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রীপুরের এক বাসিন্দা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এমপির ছেলের লোকজন সরকারি সম্পত্তি লোপাট করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ভূমি অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কমিশন বাণিজ্যের একটি অংশও নাকি পান তারা। এছাড়া এমপির জন্য বরাদ্দ সরকারের বিশেষ টিআর, কাবিখা কখনো চোখেও দেখেনি শ্রীপুরবাসী।’

জানতে চাইলে সাংসদ রহমত আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যারা এসব কথা বলে তাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়। এসবের কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারবে না।’

ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িত বিসমিল্লাহ গ্রুপের সঙ্গে দুর্জয়ের দহরম মহরম

এগারোশ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ গ্রুপের একটি গাড়ি ব্যবহার করছেন সাংসদ রহমত আলীর পুত্র জামিল হাসান। এ প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া এলিয়ন গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ ২৩-১২১২) গত তিন বছর ধরে তাদের কাছে।  এছাড়া দুর্জয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান শ্রীপুরের শাহরিজ কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড থেকে সাতটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র নিয়ে গেছেন।

শাহরিজ কম্পোজিটের একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে জানান, বিসমিল্লাহ গ্রুপের প্রধান কার্যালয় ছিল রাজধানীর হাতিরপুলের ডিকে টাওয়ারে। ওই টাওয়ারের চারটি ফ্লোরই কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হত। সেই কার্যালয়টি এখন বন্ধ, কার্যালয়ের সব আসবাবপত্র এনে রাখা হয়েছে শ্রীপুরের শাহরিজ কম্পোজিট লিমিটেডের কারখানায়।

সূত্র জানায়, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্জয়কে নোটিশ করে দুদক। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে দুর্জয় নিজেকে পরিচালক থাকার কথা লিখিতভাবে অস্বীকার করে। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্জয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ছিলেন এবং প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা বেতনও নিয়েছেন।

গ্রুপের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসেবেই ৬৫ কোটি টাকার চেক জালিয়াতির অভিযোগে দুর্জয়সহ আট জনের বিরুদ্ধে গত বছরের মার্চে প্রতারণার মামলা করে প্রিমিয়ার ব্যাংক। ওই মামলায় বিসমিল্লাহ গ্রুপের আলফা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

দুর্জয়ের দাবি বিসমিল্লাহ গ্রুপের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিসমিল্লাহ গ্রুপের সঙ্গে যদি আমার ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকতো তাহলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দুদক যত মামলা করেছে কোথাও না কোথাও আমার নাম থাকতো। দুদক আমার ব্যাপারে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। এ থেকে প্রমাণ হয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না।’

তবে বিসমিল্লাহ গ্রুপের গাড়ি ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে নেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে গাড়ি পাঠাতো। এখন ওই গাড়ি কোথায় আছে এটা আমার জানা নাই।’

৪৫ বছরের পুরনো কলেজ সাংসদের নামে

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ৪৫ বছরের পুরনো শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজের নাম পাল্টে ‘শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ করেছেন সাংসদ রহমত আলী। শ্রীপুর সদর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাঘমারা এলাকায় কালু ম-ল নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি শ্রীপুরের বাসিন্দাদের নিয়ে ১৯৬৮ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এর নাম রাখা হয় ‘শ্রীপুর কলেজ’। ২০১০ সালে কলেজে ডিগ্রি কোর্স চালু হলে নাম করা হয় শ্রীপুর ডিগ্রি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। হঠাৎ করেই গত বছর কলেজের নাম পাল্টে দেয় পরিচালনা পর্ষদ।

গাজীপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, ‘একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজের নাম পরিবর্তন কোনোভাবেই উচিত হয়নি। এতে সাংসদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/এইচএফ/এআর)