logo ২৬ মে ২০২৫
সরকারি দায়িত্ব শুরুই করেননি এরশাদ, অফিস প্রস্তুত
তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
২৪ মার্চ, ২০১৪ ২২:৪৬:২৫
image


ঢাকা: নয় বছর ছিলেন রাষ্ট্রপতি। এবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। তার দায়িত্ব মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। ১২ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার শপথের দিনই এই দায়িত্ব পান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরপর পেরিয়ে গেছে আড়াই মাস। এ সময়ের মধ্যে দূত হিসেব কী দায়িত্ব পালন করেছেন এরশাদ?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সোজাসাপ্টা বলার মতো পাওয়া যায়নি কিছু। সরকারি দায়িত্ব কী আর তা পালনে এরশাদ কী চেষ্টা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন তার ঘনিষ্ঠজনরাও।

জানতে চাইলে এরশাদের মুখপাত্র ববি হাজ্জাজ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সব কিছু গোছানো হচ্ছে। গোছানো শেষ হলেই তিনি দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন দেশ সফর করবেন।’

এ সময়ের মধ্যে গত ১২ মার্চ হঠাৎ একদিনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান এরশাদ। কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে তার দায়িত্ব নিয়ে জানতে চেয়েছেন এরশাদ। মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়েও দুইজনের মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

দলীয় সূত্র জানায়, এরশাদের প্রথম লক্ষ্য উপসাগরীর অঞ্চল সৌদি আরব, কুয়েত, আরব আমিরাত, কাতার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারে আধিপত্য বিস্তার করা। এছাড়া এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার ধনী রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি তার অন্যতম লক্ষ্য ।

এরশাদকে কার্যালয় দিয়েছে সরকার

মন্ত্রী পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পাওয়ার পরও এতদিন এরশাদের বসার কোনো জায়গা ছিল না। এ সমস্যা মেটাতে সংসদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার জন্য কার্যালয় করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে তিনি সেখানে বসবেন বলে জানিয়েছেন সংসদ ভবনের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি সরকারিভাবে একজন একান্ত সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগও চলছে সমানতালে। তার ব্যক্তিগত গাড়িতে শোভা পাচ্ছে সরকারি পতাকা।

১২ মার্চ দুপুরে এরশাদ সংসদ ভবনে তার নতুন অফিস পরিদর্শন করেন। এ সময় কিছুক্ষণ তিনি সেখানে অবস্থান করেন।

মধ্যপ্রাচ্যে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে পরিচয়

সম্প্রতি এরশাদ তার নিজের বাসায় মধ্যপ্রাচ্যের সব রাষ্ট্রদূতের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন।

জানতে চাইলে এরশাদের বিশেষ দূত ববি হাজ্জাজ এই সময়কে বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্যার (এরশাদ) কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে মধ্যেপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’

সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে খুব শিগগির সৌদি আরব যেতে পারেন। সেদেশের বাদশাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির নেতারা। এই ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরালো করার বিষয়ে এরশাদ চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন দলের নেতারা। এরপর তিনি ধারাবাহিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী সব মুসলিম রাষ্ট্র সফর করবেন।

বিশেষ দূত হিসেবে সুবিধা

 প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মাসিক ভাতা পাবেন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা। মন্ত্রী পদমর্যাদায় সুসজ্জিত অফিস, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে সবকিছুই সরকারি খরচে পাবেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হওয়ায় পর এরশাদ মন্ত্রী পদমর্যাদার সুযোগ-সুবিধার বাইরেও পাবেন কিছু বাড়তি সুবিধা। পাবেন সুসজ্জিত অফিস কক্ষ, বিদেশ ভ্রমণ, ভ্রমণের জন্য বিশেষ ভাতা, ইনস্যুরেন্স, নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা। তাকে ঘিরে থাকবে ১১ জন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারী।

দেশ-বিদেশে যোগাযোগের জন্য তার বাসা ও অফিসের ফোনের সব বিল দেবে সরকার। থাকবে সার্বক্ষণিক গাড়ি। পাবেন সুসজ্জিত সরকারি বাড়ি। বাড়ি না নিলে পাবেন ভাড়া আর রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ভাতা। এরই মধ্যে সরকারি সুযোগ- সুবিধার অংশ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে পুলিশ প্রোটোকল।

তবে সরকারের দেওয়া গাড়ি এরশাদ ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। তিনি বর্তমানে নিজের গাড়ি ব্যবহার করেন ।

(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/এআর)