logo ১০ মে ২০২৫
ভুলে ভরা সার-সংক্ষেপ,ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
হাবিবুর রহমান ,ঢাকাটাইমস
০৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ১১:২৭:৩৮
image

ঢাক:বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সারসংক্ষেপে ব্যাপক ভুল থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ভুলভাবে সারসংক্ষেপ পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


গত ১৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক প্রশাসন দেওয়ান ড, হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত চিঠি সকল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।


প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের  চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিভিন্ন বিষয়ে সারসংক্ষেপ প্রেরণ করা হয়। কিছু সারসংক্ষেপ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় তা নিষ্পত্তিতে অনাকাক্ষিত বিলম্ব হয়। এ অবস্থায় সার-সংক্ষেপ প্রস্তুতকালে এ সংক্রান্ত সচিবালয়ের গাইডলাইন অনুসরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি এসেছে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সকল বিভাগে দেয়া হয়েছে। এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে প্রধানন্ত্রীকে পাঠানো সার-সংক্ষেপে যাতে ভুল ত্রুটি না থাকে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।আগামীতে স্ব স্ব মন্ত্রনালয় এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ নির্দেশনা নতুন কিছু নয় এর আগেও এ ধরণের সতর্ককতামূলক চিঠি দেয়া হয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিকাংশই দাফতরিক কাজের চেয়ে নিজের পদ-পদবি ঠিক রাখতে ব্যস্ত।


রুলস অব বিজনেসসহ সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই বিপুলসংখ্যক ঊর্ধ্বতন আমলার। এ কারণেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সার-সংক্ষেপগুলোতে প্রায়ই নানা ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ছে।


 কোনো কোনো সচিবের দক্ষতা ও উপস্থাপিত সারসংক্ষেপ দেখে কখনও কখনও খোদ প্রধানমন্ত্রীই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনে দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তার সংকটের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাবের কথা জানিয়ে সচিবদের সতর্ক করে এর আগেও একাধিক বার চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে এ পর্যন্ত তেমন কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি।


গত ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার কর্মকর্তাদের সাতটি বিষয়ে সতর্ক থেকে সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছিলেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল অধিকাংশ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তসহ সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক মতামত থাকে না। প্রস্তাবের ফরোয়ার্ডিংয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংযুক্ত থাকে না। প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোর হালনাগাদ কপি প্রেরণ করা হয় না। পদ সৃজন, সংরক্ষণ ও স্থায়ীকরণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাদি যথারীতি প্রতিপালন করা হয় না।


এমনকি প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি ও সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিব বা সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষর থাকে না।


এছাড়া ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সারসংক্ষেপ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম মো. জিল্লুর রহমান বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। এজন্য সারসংক্ষেপ তৈরিতে আরও সতর্কতা এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে নথি পাঠানোর অনুরোধ করে একটি আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন।


সম্প্রতি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি সভায় উপস্থাপনের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের একটি সারসংক্ষেপে ভুল-ভ্রান্তি থাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তা ফেরত পাঠানো হয়।


(ঢাকাটাইমস/৯ জানুয়ারি/এইচআর/এআর/ ঘ.)