logo ৩০ এপ্রিল ২০২৫
অনলাইন গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত!
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
১৬ জুন, ২০১৫ ১৬:৩৯:৪১
image


ঢাকা: খবর পড়ার জন্য স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব বাড়ায় অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর আর্থিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গবেষকরা। আজ মঙ্গলবার রয়টার্স ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজমের (আরআইএসজে) গবেষকদের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষকেরা বলছেন, স্মার্টফোনে কনটেন্ট সরবরাহ করে অনেক সংবাদমাধ্যমই লাভের মুখ দেখতে হিমশিম খাচ্ছে। মানুষ এখন নিউজ ওয়েবসাইটগুলোর ফ্রন্ট পেজের পরিবর্তে সার্চ ইঞ্জিনে খবর খোঁজে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করা খবর বেশি পড়ছে। এতে বিপাকে পড়ে গেছে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলো।

আরআইএসজের বার্ষিক ডিজিটাল নিউজ রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্মার্টফোনে খবর পড়ার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয় কমছে। এখন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা যতটুকু সময় স্মার্টফোনে কাটান তার অর্ধেকই কাটান স্মার্টফোনে খবর পড়ে। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে স্পন্সরড কনটেন্টের কারণেও বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ক্ষেত্রে হতাশা বাড়ছে।

আরআইএসজের গবেষণা পরিচালক রাসমাস ক্লেইস নিয়েলসেন বলেন, ‘অধিকাংশ মানুষ খবর পড়তে বা খবর কাজে লাগাতে পছন্দ করেন কিন্তু তাঁরা এর জন্য অর্থ খরচ করতে নারাজ। এমনকি খবরের আশপাশে কোনো বিজ্ঞাপন বা খবরের সঙ্গে কোনো স্পন্সর কনটেন্টও দেখতে চান না তাঁরা। এর ফলে যে অনলাইন সাইটগুলোতে বেশি পাঠক যান সেই সাইট কর্তৃপক্ষের কাছেও টেকসই ব্যবসায়িক মডেল অধরাই থেকে যায়।’

কোনো কোনো নিউজসাইটের ভক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা ওই সাইটের নিউজ অ্যাপ ব্যবহার করে খবর পড়ে থাকেন। বাকিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মেসেজিং অ্যাপ, ইমেইল ও মোবাইল নোটিফিকেশনের মতো ফিচারগুলো থেকে অনলাইনের খবর পড়েন।

যদিও দুই তৃতীয়াংশের বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীকে খবরের অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে দেখা যায়, তার মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারী সপ্তাহান্তে একবার তাতে ঢোকেন।

প্রতি দশজনে চারজন স্মার্টফোন গ্রাহক প্রতি সপ্তাহে ফেসবুককে খবর খোঁজা, পড়া, দেখা, বিনিময় করা ও মন্তব্য করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এরপরেই রয়েছে ইউটিউব। ইউটিউবের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ সময় ফেসবুক ব্যবহার করে কাটান স্মার্টফোন ব্যবহারকারী। তারপর রয়েছে টুইটার। খবর পড়ার কাজে টুইটারের চেয়েও চারগুণ বেশি ব্যবহার হয় ফেসবুক।

হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের মতো নতুন নেটওয়ার্কগুলোও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এখন গুরুত্ব পাচ্ছে।

রয়টার্সের গবেষকেরা বলছেন, যদিও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে খবর পাওয়ার জন্য প্রশংসা করেন তবুও খবরের যথার্থতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গায় তাঁদের মনে সন্দেহ থেকে যায়।

বিরক্তি আর প্রতারণা

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পপ-আপ ও ব্যানার বিজ্ঞাপন নিয়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিরক্তি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এই বিরক্তি থেকে প্রতি ১০ জন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে অন্তত চারজন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন না করার সফটওয়্যার (অ্যাড-ব্লকিং সফটওয়্যার) ব্যবহার করেন। এক-তৃতীয়াংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মত হচ্ছে, কোনো খবর পড়ার পর যখন তাঁরা বুঝতে পারেন যে সেটি ‘স্পন্সর করা খবর’ তখন তাতে বেশি বিরক্ত ও হতাশ হন তাঁরা। আর প্রতি চারজনের একজন ওই সংবাদ সংস্থার ওপর নেতিবাচক ধারণা করতে থাকেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইনের খবরের প্রতি মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতার বিষয়টি একেক দেশে একেক রকম। ফিনল্যান্ড, ব্রাজিল ও জার্মানিতে প্রতি ১০ জনের ছয়জন গণমাধ্যমের ওপর বিশ্বাস রাখলেও যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ইতালিতে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মানুষ গণমাধ্যমে আস্থা রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/এমএটি)