logo ১৯ এপ্রিল ২০২৫
মুদ্রিত বইয়ের কোনো বিকল্প নেই: আহমেদ মাহমুদুল হক
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১২:৫৬:৪৮
image




একুশে বই মেলার বাকি আর মাত্র একদিন। লেখক ও প্রকাশকরা এখন শেষ মুহূর্তের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত। কেমন ছিল মেলার পরিবেশ ও বই বিক্রিইবা কেমন ছিল। তাছাড়া এই শিল্পের নানা দিক নিয়ে মাওলা ব্রাদার্সের প্রকাশক আহমেদ মাহমুদুল হকের সঙ্গে কথা হয় সাপ্তাহিক এই সময়-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি ঢাকাটাইমসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-



মাওলা ব্রাদার্সের যাত্রা (প্রতিষ্ঠা) কবে শুরু হয়েছিল?



১৯৫৪ সালে মাওলা ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠিত হয়।



তখন প্রকাশনা জগতের অবস্থা কেমন ছিল?



সেই সময় শিক্ষামূলক বইয়ের চাহিদা ছিল প্রধান, সেই লক্ষ সামনে রেখে মাওলা ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যক্ষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ফার্সি বিভাগের অধ্যাপক খান বাহাদুর জিয়াউল হক। পরবর্তী সময়ে তার কনিষ্ঠপুত্র আহমেদ আতিকুল মাওলা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেন। জনাব মাওলা ১৯৬১ সালে সৈয়দ শামসুল হকের ‘সীমানা পেরিয়ে,’ ‘অনুপম দিন’ উপন্যাস ও আবদুশ শাকুরের ‘ক্ষীয়মাণ’ গল্পগ্রন্থ প্রকাশ করেন এবং সেই থেকে মাওলা ব্রাদার্সের সৃজনশীল প্রকাশনা যাত্রা শুরু হয়।



কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছিলেন?



পূর্বে ছাপার জন্য কাগজের দুষ্প্রাপ্যতা ছিল বেশ, যা বর্তমানে নেই। তবে সৃজনশীল ও মননশীল বইয়ের বিপণনের সমস্যা পূর্বে যেমন ছিল, বর্তমানেও আছে।



আপনার প্রকাশনার সবচেয়ে বড় সফলতা কী?



এ কথা অনস্বীকার্য যে, সৃজনশীল ও মননশীল বইয়ের পাঠক ও চাহিদা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানেরও পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের প্রকাশিত বই দেশি-বিদেশি পুরস্কার পেয়েছে যেমন ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা পুরস্কার, আজকের কাগজ (জেমকন) পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, দাউদ পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার, সুরমা পুরস্কার, অমিয়ভূষণ পুরস্কার ও গুরমান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। এছাড়া মাওলা ব্রাদার্স বাংলা একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পুরস্কার একাধিকবার লাভ করেছে।



বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প সম্পর্কে আপনার অভিমত?



বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশনা শিল্প বিশেষ করে শিক্ষামূলক প্রকাশনার ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, পাশাপাশি সৃজনশীল ও মননশীল প্রকাশনার প্রবৃদ্ধি হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক।



তথ্যপ্রযুক্তি দিন দিন উৎকর্ষ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রকাশনা শিল্পের ভবিষ্যৎ কী?



বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে প্রকাশনা শিল্প এখন বেশ উৎকর্ষ লাভ করেছে এবং আমরা মনে করি, মুদ্রিত বইয়ের কোনো বিকল্প নেই এবং তথ্যপ্রযুক্তি অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশনা শিল্পেও ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হবে।



বইয়ের পাঠক কমছে, না বাড়ছে?



বইয়ের পাঠক আগের তুলনায় অবশ্যই বেড়েছে বিধায় আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বাড়ছে।



একটি সমাজের জন্য বই কেন জরুরি?



মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে আছে শিক্ষা আর শিক্ষার বাহন বই।



প্রকাশনা শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কি কোনো করণীয় আছে?



সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া প্রকাশনাসহ সব শিল্পের কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি সম্ভবপর নয়।



আপনার প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা কী?



আমাদের প্রতিষ্ঠানের স্লোগান হচ্ছে ‘সৃজনশীলতা উৎকর্ষ বই’ অর্থাৎ সৃজনশীলতা ও মননশীলতার বিকাশে আমাদের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের আরো ব্যাপ্তি ঘটবে এবং প্রকাশনা শিল্পের কাক্সিক্ষত বিকাশ হবে।