প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে কাসেমের সামনে ‘সাত দিন’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
৩০ আগস্ট, ২০১৬ ১৫:৫৪:১৮

রিভিউয়ের আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর সামনে এখন রাষ্ট্রপতির করুণা ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। আর এই করুণা পেতে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে তিনি কত সময় পাবেন সেটা সুনির্দিষ্ট নয় আইনে। আইমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘তিনি যুক্তিসঙ্গত সময় পাবেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সাত দিন যুক্তিসঙ্গত সময় বলে তিনি মনে করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খুনি বাহিনী আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলী চট্টগ্রামে ডালিম হোটেলে নির্যাতনকেন্দ্র খুলে মুক্তিকামীদের নির্যাতন করতেন। এর কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমউদ্দিনকে হত্যার দায়ে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর কাসেম আলীর সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা প্রার্থনা ছাড়া কোনো উপায় খোলা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
মাহবুবে আলম জানান, এই আবেদনের নিস্পত্তি হওয়া পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর স্থগিত থাকবে। তবে তিনি এই আবেদন না করলে রাষ্ট্রপক্ষ যে কোনো সময় দণ্ড কার্যকর করতে পারবে।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে সরকার। সে আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর তাদের দণ্ড কার্যকর হয়। তবে কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও মতিউর রহমান নিজামী ক্ষমা চাননি। রিভিউ আবেদন নাকচের পর কাদের মোল্লাকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দিতে জেল কর্তৃপক্ষ বেশি সময় না দিলেও কামারুজ্জামান ও নিজামীকে এক সপ্তাহের বেশি সময় দেয়া হয়েছিল।
মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজের পর এই জামায়াত নেতাকে কতদিন সময় দেয়া হবে, সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে। তিনি বলেন,‘প্রাণভিক্ষার জন্য রিজনেবল টাইমের কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয় সাত দিন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত সময়। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রপতি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। মীর কাসেম আলী ক্ষমা চাইলে সেটা নিষ্পত্তিতে এ কারণে বেশি সময় লেগে যাবে কি না- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এমন তো কথা নেই যে তিনি বিদেশে থাকলে ফাইল দেখতে পারবেন না। এ রকম তো আইনের মধ্যে নেই। কেউ যদি ক্ষমা চেয়ে আবেদন করে সেটাকে ত্বড়িত নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা আইনে যেটা আছে সেটাই গ্রহণ করা হবে।’
রায় কার্যকরের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন,‘রায়ের কপিটা আপিল বিভাগ থেকে ট্রাইব্যুনাল হয়ে কারাগারে যেতে হবে। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ সে রায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাসেম আলীকে জানাবেন। এরপর তিনি ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের সকলের জন্য একটা স্বস্তির দিন। ১৯৭১ সালের ঘাতকের শেষ পর্যন্ত আমরা বিচার করতে পেরেছি। অনেকগুলো রায় আমরা কার্যকর করেছি, ইনশাআল্লাহ আমরা এটাও কার্যকর করব।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মীর কাসেমের টাকার কাছে অনেকেই জিম্মি ছিলেন। কিন্তু তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে আদালতে যে চূড়ান্ত রায় দেয়া হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। শোকের মাসের এই রায়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছি আমরা।’
বাংলাদেশের মাটিতে জামায়াতের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘শীগগির জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে তাদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে ।’
(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/বিইউ/ডব্লিউবি)