ঢাকা: ইসলামে মানুষের জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর নির্দেশনাও রয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় কিভাবে পথ চলতে হবে এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোরআন-হাদিসে রাস্তায় চলার কিছু নীতি উল্লেখ করা হয়েছে। রাস্তায় চলতে হবে স্বাভাবিকভাবে, কোনো দম্ভ-অহংকার প্রদর্শন করে নয়। পথ চলতে গিয়ে কোনো অহমিকা ও আত্মম্ভরিতা দেখানো যাবে না। এ ব্যাপারে কোরআনে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। পথ চলার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিটি হলো এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে অন্যের সামান্যতমও কোনো কষ্ট হয়। এই একটি মাত্র নীতির মধ্যে ইসলামের নির্দেশনার পুরোটা এক ঝলকে ফুটে উঠে।
বুখারি শরিফের এক দীর্ঘ হাদিসে রাসুল (সা.) পথ চলার কিছু নীতিমালা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে একটি হলো রাস্তায় চলতে গিয়ে হারাম কিছু দেখা যাবে না। হঠাৎ চোখের সামনে হারাম কোনো কিছু ভেসে উঠলে দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে এবং নিজেকে সংযত করতে হবে। রাস্তায় কোনো কষ্টদায়ক বস্তু দেখলে সম্ভব হলে তা সরিয়ে দেয়া। সম্ভব না হলে অন্তত অন্যকে অবহিত করা এবং সরানোর ব্যবস্থা করা। রাস্তায় চলতে গিয়ে কেউ সালাম দিলে এর জবাব দেয়া ওয়াজিব। তাছাড়া নিজে আগে সালাম দেয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। কেউ হাঁচি দিলে এর উত্তরে আলহামদুলিল্লাহ বলা, এটা ওয়াজিব। পথ চলার সময়ও সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে। কোনো অন্যায় দেখলে সম্ভব হলে হাতে প্রতিহত করবে, মুখে প্রতিবাদ জানাবে অন্তত অন্তর দিয়ে হলেও ঘৃণা করবে।
কেউ পথ হারিয়ে ফেলল, কেউ কোনো ঠিকানা খুঁজছে তাকে সহযোগিতা করা একজন পথচারীর দায়িত্ব। অন্ধ-অচল ব্যক্তিদের পথ চলতে সহযোগিতা করা। কেউ কোনো বিপদে পড়লে অথবা কারও দ্বারা অত্যাচারিত হলে তাকে উদ্ধার করা। রাস্তায় কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে উত্তম বাক্য বিনিময় করা। রাস্তায় কোনো দামি দ্রব্য কুড়িয়ে পেলে তা যথাযথ মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করা। সর্বোপরি জিকিরের সঙ্গে পথ চলা। কারণ হাঁটার সময়ও জিকির করতে কোনো বাধা নেই। তাছাড়া চারপাশের প্রকৃতি দেখতে মুগ্ধ হওয়া এবং আল্লাহর কুদরতের কথা চিন্তা করাও পথ চলার অন্যতম হক। হাদিসে উল্লিখিত হকগুলো আদায় করে কেউ পথ চললে প্রতি কদমে কদমে সওয়াব মিলবে।