চন্দ্রবর্ষের যে মাসগুলো অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ, এর অন্যতম হলো জিলহজ। এটি চন্দ্রবর্ষের দ্বাদশ মাস। এ মাসেই অনুষ্ঠিত হয় ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ। ঈদুল আজহা বা কোরবানিও এই মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল। এ মাসের প্রথম ১০ দিন অত্যন্ত ফজিলতের। হজের মাস হিসেবে এ মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য আরও অনেক বেশি। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা জিলহজকে তোমাদের জন্য ফজিলতরূপে দান করেছেন। অতএব, তোমরা এই ফজিলতময় মাসের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত তার ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটাও।
জিলহজ মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে আছে, যারা জিলহজ মাসের প্রথম দিন রোজা রাখবে, তাকে আল্লাহ তায়ালা দুই হাজার বছর জিহাদ করার সওয়াব দান করবেন। দ্বিতীয় দিন রোজা রাখালে দুই হাজার বছর আল্লাহর ইবাদত করার সমান সাওয়াব দেয়া হবে। তৃতীয় দিন যে রোজা রাখবে, সে হজরত ইসমাইলের (আ.) বংশধরদের মধ্য থেকে তিন হাজার দাস-দাসী মুক্তি দেয়ার সওয়াব অর্জন করবে। চতুর্থ দিন রোজা রাখলে চারশ’ বছর ইবাদতের সওয়াব পাবে। পঞ্চম দিন রোজা রাখলে পাঁচ হাজার বস্ত্রহীনকে কাপড় পরিধান করার সওয়াব পাবে। ষষ্ঠ দিন রোজা রাখলে ছয় হাজার শহীদের সমান সওয়াব দেয়া হবে। সপ্তম দিন রোজা রাখলে তার জন্য দোজখের সাত দরজা হারাম হয়ে যাবে। আর অষ্টম দিন রোজা রাখলে বেহেশতের আট দরজা তার জন্য খুলে দেয়া হবে। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি জিলহজের প্রথম দিন রোজা রাখবে, সে ৩৬ হাজার বার কোরান খতমের সওয়াব পাবে।
রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহর কাছে এই ১০ দিনের আমলের চেয়ে প্রিয় আর কোনো আমল নেই। এর এক দিনের রোজা এক বছরের রোজার সমান এবং প্রতি রাতের ইবাদত শবেকদরের ইবাদতের সমান। জিলহজ মাসের ৯ তারিখের রোজার মর্যাদা আরও বেশি। রাসুল (সা.) বলেন, আরাফার দিনের রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, আল্লাহ তার মাধ্যমে আগে ও পরের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। এই ১০ দিনের আরেকটি বিশেষ আমল হলো কোরবানি। সামর্থ্যবানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। তাই সাধ্যানুযায়ী নফল ইবাদতের পাশাপাশি নিষ্ঠার সঙ্গে কোরবানি করার পূর্ণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।