সম্পন্ন হয়েছে এবারের হজ। ইতোমধ্যে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন হাজিরা। যারা আল্লাহর ঘর ও প্রিয় নবীজির রওজা মোবারকের স্পর্শে ধন্য হয়ে আসছেন তাদের চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কেউ হতে পারে না। সদ্য যারা হজফেরত তাদের মর্যাদা অনেক বেশি। তাদের গায়ে এখনও লেগে আছে মক্কা-মদিনার সুবাস। দেশে ফেরার পরও দীর্ঘদিন পর্যন্ত সে সুবাস অব্যাহত থাকে। এজন্য হাদিসে হাজিদের সঙ্গে সালাম-মুসাফাহার প্রতি তাগিদ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘কোনো হাজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তাকে সালাম দেবে। তার সঙ্গে মুসাফাহা ও মুআনাকা করবে এবং দোয়ার আবেদন করবে যেন তিনি বাড়িতে যাওয়ার আগে তোমার জন্য দোয়া করেন। কারণ কবুল হজকারীর সব পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। যিনি হজ থেকে ফিরেছেন তিনি যেন আজই মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন।
যেহেতু হজ পালনকারীরা এত সম্মানী এজন্য তাদের বিশেষ কিছু করণীয় রয়েছে। হজে একপ্রস্ত সাদা কাপড় পরার মানে হচ্ছে দুনিয়ার সব সম্পর্ক ছিন্ন করে পরকালের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাওয়া। হজ থেকে ফিরেও যেন কাফনসদৃশ সেই কাপড় পরার কথা স্মরণে থাকে। হজ হলো ত্যাগের একটি ইবাদত। এই ত্যাগের কথা পরবর্তী জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে স্মরণ রাখতে হবে। আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) প্রিয় ভূমির ধূলিবালি মেখে আসতে পারা অনেক মর্যাদা ও ফজিলতের বিষয়। জীবনের প্রতিটি পদে পদে সে কথা স্মরণ রেখে সেই অনুযায়ী চলার চেষ্টা করতে হবে। হজের পরবর্তী জীবনে যদি কোনো পরিবর্তন না আসে তাহলে সে হজ কবুল হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে।
একজন হাজিকে সব সময় সব কাজে অন্যের চেয়ে আলাদা একটি অবস্থান ধরে রাখতে হবে। নানা ঝামেলা সামনে আসবে, তবুও তাতে জড়ানো যাবে না। হাজি সাহেবকে একথা মনে রাখতে হবে, ওয়াদা অনুযায়ী আল্লাহ তাকে নিষ্পাপ করে দিয়েছেন। সেই নিষ্পাপতায় কোনো পাপের ছোঁয়া যেন না লাগে এ ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। কখনও কোনো অন্যায় কাজ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে নিতে হবে। বাকি জীবন আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) দেখানো পথে চলাই হলো হজের সার্থকতা। হজের শিক্ষা ও অনুভূতি ধরে না রাখতে পারা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।