মসজিদ মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান এবং মুসলিম সমাজের প্রাণকেন্দ্র। সাধারণভাবে মসজিদ মুসলমানদের ইবাদতের স্থান হিসেবে পরিগণিত হলেও প্রকৃতপক্ষে এর কার্যক্রম ব্যাপক ও বিস্তৃত। মসজিদ একাধারে মুসলমানদের ইবাদত, শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং শক্তি-সাহসের উৎস। বস্তুত ইসলামি সমাজব্যবস্থা মসজিদকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের ইবাদত ও শাসনব্যবস্থা পরিচালনার মূল কেন্দ্রও ছিল মসজিদ। ইসলামি সমাজে মসজিদের ভূমিকা অপরিসীম।
প্রথমত মসজিদ আল্লাহর ইবাদতের সর্বোত্তম স্থান। রাসুল (সা.) বলেন, ‘উৎকৃষ্টতম বসার স্থান হলো মসজিদ।’ মসজিদে মুসলমানরা শুধু ইবাদতই করে না বরং ধর্মীয় আইন-কানুন, মাসয়ালা-মাসায়েল ও অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে এককাতারে সবাই দাঁড়ানোর কারণে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধের উন্মেষ ঘটে। এখানে বৈষম্যের কোনো সুযোগ থাকে না। মসজিদে পারস্পরিক সালাম, কুশল ও শ্রদ্ধা বিনিময় হয়। এতে পারস্পরিক আন্তরিকতা, স্নেহ ও ভালোবাসা জন্মায়। মানুষের মধ্যে সাম্য ও একতা সৃষ্টিতেও মসজিদের ভূমিকা অনন্য।
মসজিদকে কেন্দ্র করেই মুসলিম সমাজে মক্তব চালু হয়েছে। ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবেও মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম। মসজিদে প্রতিদিন পাঁচবার হাজির হওয়ার মাধ্যমে নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা লাভ হয়। মুসল্লিদের মধ্যে দায়িত্ববোধ জাগাতেও মসজিদের ভূমিকা রয়েছে। মসজিদকে কেন্দ্র করে সামাজিক নানা কল্যাণমূলক কাজও আঞ্জাম দেয়া হয়। সমাজের শান্তি, শৃঙ্খলা ও ভারসাম্য পরিবেশ বজায় রাখতে আহ্বান জানানো হয় মসজিদ থেকে। রাসুল (সা.) মসজিদে নববীতে মানবজীবনের সব দিকের মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকনির্দেশনাও দিতেন। মদিনা রাষ্ট্র পুরোটাই পরিচালিত হতো মসজিদে নববীকে কেন্দ্র করে। এমনকি রাসুল (সা.) মসজিদ থেকেই জেহাদের আহ্বান জানাতেন এবং দিকনির্দেশনা দিতে।