দুই বছর আগে ফিফা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্রাজিল ও জার্মানির মধ্যকার ম্যাচটির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। বেলো হরিজোন্তে স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ৭-১ ব্যবধানে হারিয়েছিলো খেদিরা, মুলার, ক্লোসারা। সেদিন অঝোরে কেঁদেছিলো ব্রাজিলের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা।
ব্রাজিলের মাঠে আবারও মুখোমুখি অবস্থানে ব্রাজিল-জার্মানি। তবে, সিনিয়র টিম নয়। রিও অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবল ইভেন্টের ফাইনালে আজ বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটায় স্বর্ণ জয়ের লড়াইয়ে জার্মানির মুখোমুখি হবে নেইমারের ব্রাজিল। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে মারাকানা স্টেডিয়ামে। আর বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় ব্রোঞ্জ পদক নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে নাইজেরিয়া-হন্ডুরাস।
পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতলেও এখনও অলিম্পিকের শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। তবে, জার্মানি একবার স্বর্ণ জয়ের স্বাদ পেয়েছে। ১৯৭৬ সালে মন্ট্রিলে পোল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিলা পশ্চিম জার্মানি।
শিরোপা জিততে না পারলেও ব্রাজিল ফাইনাল খেলেছে তিনবার। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে মেক্সিকোর কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে শিরোপা খোঁয়ায় ব্রাজিল। সেবার ব্রাজিল দলের হয়ে খেলেছিলেন নেইমার। এবারও আছেন তিনি।
ঘরের মাঠে এবার স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছে ব্রাজিল। শুরুতে তারা দর্শকদের কিছুটা হতাশ করলেও পরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইরাকের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করার পর শেষ ম্যাচে ডেনমার্ককে ৪-০ ব্যবধানে হারায় নেইমাররা।
আর কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারায় ২-০ ব্যবধানে। সেমিফাইনালে তো হন্ডুরাসকে পাত্তাই দেয়নি তারা। উড়িয়ে দিয়েছে ৬-০ ব্যবধানে। ওইদিন অলিম্পিকে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়েন নেইমার। ম্যাচ শুরুর মাত্র ১৫ সেকেন্ডেই হন্ডুরাসের জালে বল জড়ান তিনি।
ব্রাজিলের মতো জার্মানিও গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে ড্র করেছিলো। মেক্সিকোর বিপক্ষে ফলাফল ছিলো ২-২, আর দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ফলাফল ছিলো ৩-৩। তবে, শেষ ম্যাচে ফিজিকে ১০-০ ব্যবধানে হারিয়েছিলো তারা।
এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচ খেলে ২১টি গোল করেছে জার্মানি। গোল হজম করেছে ৫টি। অন্যদিকে, ব্রাজিল পাঁচটি ম্যাচে করেছে ১২টি গোল। কিন্তু একটিও হজম করতে হয়নি তাদের।
এবার অলিম্পিকের স্বর্ণ জেতার উদ্দেশ্যে অনেক আগে থেকেই নেইমারকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজিয়েছে ব্রাজিল। এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরে নেইমারকে খেলায়নি তারা। সেই পরিকল্পনায় এখন পর্যন্ত সফল ব্রাজিল অধিনায়ক। পাঁচ ম্যাচ তিনি নিজে করেছেন তিনটি গোল। অন্যদিকে, জার্মানির সার্জে জিন্যাবরি ও নিলস পিটারসেন ছয়টি করে গোল করে এখন পর্যন্ত গোলদাতাদের তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে আছেন। ফুটবল প্রেমীদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, আজ মারাকানায় কি বেলো হরিজোন্তের রাত ফিরে আসবে না ব্রাজিলিয় খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটবে।