সেলফি জ্বর এখন সর্বত্রই। এই জ্বরে আক্রান্ত খোদ হজযাত্রীরাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভরে ওঠে হজযাত্রীদের সেলফিতে। হজের প্রায় প্রত্যেকটি পর্যায়ে তারা সেলফি তুলছেন। এমনকি পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ ও কালো পাথরে চুমু খাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়েও তাদেরকে সেলফি নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
হজযাত্রীদের এ ধরনের আচরণকে ভালো চোখে দেখছেন না দেশি-বিদেশি আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদরা। এ ব্যাপারে আরব নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হজের মতো পুণ্যযাত্রায়ও সেলফি তোলার হার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কিন্তু আত্মত্যাগ, অহমিকা বর্জন, বিনয় ও নম্রতা শিক্ষা দেয়ার যে হজ সেখানে এ ধরনের কার্যক্রম কতোটুকু গ্রহণযোগ্য তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
‘হজে সেলফিকে না বলুন’ শীর্ষক এক কলামে হাজিদের এ ধরনের ছবি তোলার কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়ে বেশ কিছু সৌদি ইসলামি চিন্তাবিদ বলেন, "এ আচরণ পর্যটকদের মতো, পুণ্যার্থীদের নয়।"
জেদ্দার খ্যাতনামা ইসলামি চিন্তাবিদ শাইখ আসিম আল-হাকেম বলেন, "কারণ ছাড়া ছবি তোলা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু যখন হজের প্রসঙ্গ আসে তখন সেখানে কোনো ধরনের ছবি তোলার প্রসঙ্গই আসতে পারে না"।
তিনি বলেন, "মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) যখন হজ করতে আসেন, তখন তিনি বলেছিলেন, "হে আল্লাহ, গর্ব-অহংকার-লোক প্রদর্শন বর্জন করে আমি আপনার ডাকে হাজির।" তাই এ ধরনের সেলফি এবং ভিডিও ধারণ নবীর প্রদর্শিত পন্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ।
এজন্য দেশি-বিদেশি আলেমদের পরামর্শ হলো, হজ হলো আল্লাহর সঙ্গে বান্দার একান্ত মিলনের একটি মুহূর্ত। এই সময়ে এমন কোনো কর্মকাণ্ড সমীচীন নয় যা হজের ভাবগাম্ভীর্যকে নষ্ট করে। আপনি পর্যটনে গিয়ে যা করেন নিশ্চয় আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতে গিয়ে তা করতে পারেন না। এজন্য ‘হজ হোক সেলফিমুক্ত’ এই প্রতিজ্ঞা হোক প্রত্যেক হজযাত্রীর।