সরকারিভাবে লিজকৃত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন গাইবান্ধার বালাসী লঞ্চ ঘাটটি সন্ত্রাসী কায়দায় জবর দখল করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। বৈধ লিজ গ্রহীতাকে উচ্ছেদ করে ওই ঘাট এবং ঘাট সংলগ্ন এলাকায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী ও মালামাল পরিবহনকারী নৌকা থেকে টোল আদায় করছে সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশও উপেক্ষা করা হয়েছে। থানায় জিডি ও মামলা দায়ের করা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না কর্তৃপক্ষ। উপরন্তু ফুলছড়ি থানায় লিজ গ্রহীতার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা গ্রহণ করে পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
মঙ্গলবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার শেখ সরদার আসাদুজ্জামান হাসু এসব অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার দাবি করেছেন এবং দখলদার সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও ফুলছড়ি থানার দায়েরকৃত মামলাগুলো ডিবি পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে হাসু বলেন, ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উত্তরে গিদারি এবং দক্ষিণে কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের শেষ সীমানা (উড়িয়া পর্যন্ত) বালাসী লঞ্চ ঘাটটি সরকার ইজারা দেয়। অথচ বেআইনিভাবে ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক মুন্না ইজারাকৃত এলাকায় গত ২০ মার্চ ২০১৬ তারিখে টেন্ডার নোটিশের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশকে লিজ দেন। এ ব্যাপারে ইজারাদার হাসু গত ১১ এপ্রিল ২০১৬ একটি রিট পিটিশন (যার নং ৪০৯৫/২০১৬) দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রসুলপুর হালুয়াবাড়ি খেয়াঘাট ও সৈয়দপুর খেয়াঘাট দুটি কোনো ব্যক্তিকে ইজারা না দেয়ার আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান নোটিশের মাধ্যমে রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশের লিজ বাতিল করেন। তা সত্ত্বেও সব নির্দেশ অমান্য করে রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশসহ তার বাহিনী বৈধ ইজারাদার হাসুর আদায়কারীর কাছ থেকে একাধিকবার হামলা চালিয়ে আদায়কারীদের কাছ থেকে ঘাটে আদায়কৃত টাকা ও একটি মোটর সাইকেল ছিনতাই করে নেয়। এছাড়াও ধারাল অস্ত্র নিয়ে দুই দফা হামলা চালিয়ে তারা ইজারাদারের লোকজনদেরকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করাসহ ফুলছড়ি থানায় পলাশসহ সন্ত্রাসী বাহিনীদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। উপরন্ত জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ফুলছড়ি থানার তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ এর সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বৈধ ইজারাকৃত ঘাট থেকে রাজিবপুর, রৌমারি, কর্ত্তিমারি, কুড়িগ্রাম জেলা, মোল্লারচর, ফুলছড়ির এরেন্ডাবাড়ি, জিগাবাড়ি এবং সানন্দবাড়ি, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, জামালপুর জেলায় যাতায়াতকারী নৌকা থেকে বেআইনী টোল আদায় চালিয়ে যাচ্ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাদের সরকার, ময়নুল হক, মো. মোনা মিয়া প্রমুখ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।