পিরোজপুরের কাউখালীর ২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। জরাজীর্ণ এসব স্কুলে পাঠদান অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও শঙ্কা মাথায় নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। বিকল্প ভবন কিংবা ব্যবস্থা করতে না পারায় চরম আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। অতিরিক্ত ঝুঁকির আশঙ্কা থাকায় ইতোমধ্যে পাঁচটি বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১০নং আমরাজুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩নং গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৫নং পশ্চিম মাগুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮নং পূর্ব আমরাজুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১নং কেউন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪নং বাশুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৪নং দক্ষিণ-পূর্ব জিবগা সাতুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৬নং দক্ষিণ শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৫নং কেশরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৮নং দত্তেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৯নং উত্তর হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫নং কাঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৯নং জোলাগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪০নং সাপলেজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪১নং দক্ষিণ-পূর্ব জোলাগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪২নং পূর্ব শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫০নং জিবগা সাতুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫১নং মধ্য গোয়ালতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৪নং মধ্য জোলাগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৫নং আ. রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৭নং কাজী হারুণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬২নং মধ্য জোলাগাতী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৩নং মধ্য চিরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ঝুঁকিপূর্ণ অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সমস্যা, টয়লেট সমস্যা এবং বর্ষার মৌসুমে জোয়ারের পানিতে মাঠ তলিয়ে থাকে। এর ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নামমাত্র সংস্কার করে কিছু বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ জোড়াতালি দিয়ে পাঠদানের উপযোগী করা হলেও কিছুদিন পর সেগুলো আবার পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
এসব স্কুলের মধ্যে ৪১নং দক্ষিণ-পূর্ব জোলাগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নির্বাচনী সহিংসতার জেরে দুবৃর্ত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেও আজ পর্যন্ত তা সংস্কারের খুব একটা উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর ফলে ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান চালানো হচ্ছে।
শিয়ালকাঠী হাজীবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিরও একই দশা। দীর্ঘদিন পুকুরের সিঁড়িতে পাঠদানের পর বর্তমান একটি খোলা টিনসেট ঘরে পাঠদান করা হচ্ছে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীদের বইখাতা ভিজে যায়।
৬২নং মধ্য জোলাগাতী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের ঘরে নেওয়া হলেও স্বাভাবিক জোয়ারে পানিতেই তা তলিয়ে যায়।
এদিকে উপজেলার ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ৩৬জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে উপজেলা সদরের কাছাকাছি স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট না থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষক সংকট রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লেখাপড়া শহরের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়ছে।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাবেদ হোসেন জানান, যেসব স্কুলে শিক্ষক সংকট রয়েছে নতুন নিয়োগের মাধ্যমে সেই সংকট দূর করা হবে। এছাড়া যেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলো দ্রুত সংস্কার করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।