ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সহিংসতায় আবার প্রাণ ঝরল। বগুড়ার আজিজুল হক কলেজ শাখায় সংগঠনের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন। পরে সহিংসতা কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। আর পুলিশের একটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয় ছাত্রলীগের একাংশের কর্মীরা।
বেলা আড়াইটার দিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ (পুরাতন ভবন) ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। এর একটি বেনজীর গ্রুপ এবং অপরটি নুরু গ্রুপ নামে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রিকশা ভাড়া নিয়ে বেনজীর গ্রুপের কর্মী সবুজের সঙ্গে নূরু গ্রুপের কয়েকজন কর্মীর সাথে কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেটি সংঘর্ষে রুপ নেয়। তার নুরু গ্রুপের কর্মীরা বেনজীর গ্রুপের কর্মী ইবরাহিম হোসেন সবুজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এতে গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সবুজ। তিনি সরকারি আজিজুল হক কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
এই ঘটনায় পরে জেলা ছাত্রলীগ শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রেখে গাড়ি ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে শহরের স্টেডিয়াম ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক মামুনের মটর সাইকেলে আগুন দেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
ছাত্রলীগের এই সহিংসতায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো শহরেই। মোতায়েন হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। গোটা শহর জুড়েই টহল দিচ্ছে পুলিশ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরণের অভিযোগ উঠেছে। প্রায়ই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হানাহানির ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিককালে সহিংসতা কমে আসলেও গত পাঁচ বছরে বগুড়ায় ক্ষমতাসীন দল ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আত্মকলহে ৩০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এমদাদ হোসেন জানান, এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আগুন দেয়া মোটর সাইকেলটি পুলিশের না কি অন্য কারও, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।