পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কলেজ ছাত্র রবেল আকনকে গলাকেটে হত্যার দায়ে ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় অপর ৪জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিল্লুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার বাদী ও নিহতের পিতা মো. হাবিবুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার উত্তর মিঠাখালী গ্রামের মৃত হোসেন আলী খানের ছেলে ফারুক (৫৫), ফারুক খানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে নিপুন (২০), মোতাহার খানের ছেলে আ. মান্নান (৫৫), মন্নান খানের শ্যালক ও বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত মোশাররফ হোসেনের ছেলে মো. রিয়াজ (৩৫)। রায় ঘোষণাকালে ৬ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মিরাজ জোমাদ্দার পলাতক আছেন।
মামলার বিবরণী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর মিঠাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমানের সঙ্গে প্রতিবেশী ফারুক খানের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।
অপরদিকে, একই গ্রামের আ. মান্নান খানের মেয়ের সঙ্গে হাবিবুর রহমানের কলেজ পড়ুয়া (একাদশ শ্রেণি) ছেলে রুবেল আকনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে মেয়েটির বাবা আ. মান্নান খান ও মেয়েটির মামা মিলে হত্যার ১৩দিন আগে রুবেলকে মারধর করে।
২০০৮ সালের ২২ জুন সন্ধ্যায় নিহত রুবেলের বন্ধু মিরাজ জোমাদ্দার পাওনা টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে (২৩ জুন) শাখারীকাঠি ভাড়ানি খালে স্থানীয় লোকজন রুবেলের গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহত রুবেলের পিতা হাবিবুর রহমান আকন বাদী হয়ে মিরাজ জোমাদ্দারকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা পরবর্তী কালাম ও আ. জলিল নামের ২জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মঠবাড়িয়া জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করলে আদালতে তারা স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০০৯ সালের ১৮ মার্চ পুলিশ মামলাটি তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত দুই আসামি ফারুক খান ও আঃ মান্নান খানকে বাদ দিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর পরবর্তীতে মামলার বাদী আদালতে নারাজি দিলে বিচারক বিচারক ফারুক খান ও আঃ মান্নান খানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে ১৩ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সরকারি কৌসূলি খান মো. আলাউদ্দিন। তবে আসামিপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসানুল কবির।