প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১২:৫০:০৫আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৩:০১:২৭
কিশোর ছাব্বির হত্যা সালিশে মীমাংসার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম কিশোর সাব্বির আহমেদের নৃশংস হত্যাকা-ের বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে স্থানীয় মাতবররা জিম্মি করে রেখেছে সাব্বিরের পরিবারকে। এরই মধ্যে ওই পরিবারটিকে গ্রাম ছাড়াসহ বিভিন্ন মামলায় ফেলার হুমকিও দিচ্ছে মহলটি। ফলে পরিবারটি এখন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি’ অবস্থা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুরের তিস্তার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গঙ্গাচড়ার মহিপুরের একটি বিচ্ছন্ন চড় শংকরদহ গ্রাম। তিস্তার কোল ঘেষে ভাঙনের শিকার নিঃস্ব আব্দুল জব্বারের পরিবার। সাতজনের পরিবারে পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে কিশোর ছাব্বির ছিল অসহায় এই পরিবারের একমাত্র উপার্জনের অবলম্বন। প্রতিবেশী লেবার সর্দার ও টিউবওয়েল মিস্ত্রি আব্দুর রশিদ কাজের কথা বলে গত ১ আগস্ট সাব্বিরকে নেত্রকোনার কমলাকান্দা থানার কেশবপুরে নিয়ে যায়। পরে লাশ পাওয়া যায় রংপুরের গংগাচড়ার মহিপুর ঘাটে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ আশরাফী বলেন, সে বাড়ি থেকে যাবার পর এক সপ্তাহ পর ছাব্বিরের অর্ধগলিত মৃতদেহ গঙ্গাচড়ার মহিপুর ঘাটে আসামিরা ফেলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন দিয়ে শালিস মীমাংসার কথা বলে লাশ দাফন করা হয়।
সালিশ বৈঠকে মাতব্বররা বলেন, ‘অন্য কোন ঝামেলার প্রয়োজন নেই। যেহেতু দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গেছে এটা একটা দুর্ঘটনা। তাই নিহতের পরিবারকে কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিষয়টা সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। তখন আমি এর বিরোধিতা করি এবং রাগ হয়ে সেখান থেকে চলে আসি। পরে জানতে পানি সাব্বিরের পরিবার যাতে কোন মামলা না করে সে জন্য পরিবারটিকে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছে স্থানীয় এবং পার্শ¦বর্তী কিছু মাতবর।
প্রতিবেশীরা বলেন, শতাধিক পরিবারের বসতি ছোট্ট এই গ্রামে আসামিদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
সরেজমিনে ওই মাতব্বরদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিন্নাত আলী এসপির দোহাই দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা নিষেধ আছে। কথা বলতে হলে এসসি স্যারের সাথে কথা বলবে হবে।
পরে জানা গেলো, তিনি এ নিয়ে একটি অভিযোগপত্র নিয়েছেন মাত্র।
কিশোর ছাব্বির হত্যার প্রায় দুমাসের কাছাকাছি বিচার না পেয়ে আসামিদের হুমকিতে দিশেহারা কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা-মাতা। সেই সাথে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছে পরিবারটি দাবি সাব্বিরের বাবা আব্দুল জব্বারের।
তিনি দ্রুত মানবাধিকার কর্মীসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।