বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলো ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। এটি মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। এই দিনে মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। দরিদ্র প্রতিবেশীদের মধ্যে এর মাংস বিতরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। এই ত্যাগ সমাজে সাম্য আর সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করার শিক্ষা দেয়। মানুষের জীবনে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের জন্য চরম ত্যাগ স্বীকারের প্রতীক এটি।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাম্প্রতিক সময়ে এদেশের অনেক মুসলমানের কাছে ধর্মের মতো আধ্যাত্মিক একটি বিষয়ও পরিণত হয়েছে লোক দেখানো ব্যাপারে। প্রতিযোগিতা করে মাংস খাওয়া এবং মাসের পর মাস ডিপফ্রিজে জমিয়ে রাখা তাদের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোরবানি কোনো লোক দেখানো বা প্রতিযোগিতার বিষয় নয়। কোরবানির অর্থ ত্যাগ বা উৎসর্গ। কোরবানির মাধ্যমে ভেতরের পশুশক্তিকে যেমন হত্যা করতে হবে, তেমনি সুদৃঢ় করতে হবে মানুষে মানুষে ভালোবাসা। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গরিব মানুষের জন্য দু-এক বেলা উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। কিছু পশু বিপন্ন কৃষকের মাঝেও দান করা যায়। সব ধর্মেই দানকে মহিমান্বিত করা হয়েছে। মানবতার সেবাই তো প্রকৃত ধর্ম।
নগরে পশু কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে রাস্তায়-বাড়িতে যেখানে-সেখানে পশু জবাই নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের সবকটি সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকায় এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু খোলা জায়গা বেছে নিয়ে সেখানে কোরবানি দেওয়ার মতো উপযোগী করে তুলতে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ, তারাও যেন কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হোন। রাস্তার ওপর বা যত্রতত্র কোরবানি দেওয়া অনুচিত। তাতে পরিবেশ দূষিত হয়, দুর্গন্ধ ছড়ায়। ঈদের পবিত্রতা সব ক্ষেত্রেই বজায় রাখা প্রয়োজন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বর্ধিত কলেবরে প্রকাশিত হলো এই সময়। আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।