গত কিছুদিন ধরে নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বারবার সংবাদ শিরোণামে পরিণত হচ্ছে পুলিশ বাহিনী। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাটে চাঁদার টাকা না পেয়ে চা দোকানির গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় পুলিশ, এমন অভিযোগ করেছেন দগ্ধ চা দোকানি বাবুল মাতুব্বর ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা প্রদর্শনের ব্যাপারটি এখন সারা দেশে আলোচিত। আগুনে দগ্ধ হয়ে বাবুল মাতুব্বর মারা গেছেন বৃহস্পতিবার। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা রাব্বীকে হেনস্থাসহ নানা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশকে বলা হয় জনগণের বন্ধু। তাদের লোগোতে জ্বলজ্বল করে ‘সেবাই ধর্ম’ লেখাগুলো। সেবর নমুনা কি এমন? লেখা বাহুল্য, পুলিশের বাড়াবাড়ি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাদের বেপারোয়া আচরণে নাভিশ্বাস উঠছে জনজীবনে। রক্ষককে বিবেচনা করা হচ্ছে ভক্ষক হিসেবেই। এভাবে চলতে থাকলে পুলিশ বাহিনীকে একটি অস্ত্রধারী পেটোয়া বাহিনী ছাড়া আর কিছুই বিবেচনা করবে না সাধারণ মানুষ। যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। তাই অনতিবিলম্বে পুলিশ বিভাগে ব্যাপক সংস্কার আনা প্রয়োজন, যাতে জনগণের প্রতিপক্ষ না হয়ে সত্যিকারের বন্ধু হয়ে ওঠে পুলিশ। অত্যাচারী পুলিশ আমাদের প্রয়োজন নেই। নিয়ন্ত্রণহীন পুলিশের লাগাম টেনে ধরা দরকার।
দুই.
বাংলাদেশে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের অযাচিত বিরোধিতা এবং এর ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান একের পর এক কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে চলেছে। সর্বশেষ ঘটনা হলো, ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে কয়েক ঘণ্টা নিখোঁজ করে রাখা। সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মী পুলিশের হাতে আটকের পরপরই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দেখা গেছে, ঢাকার পাকিস্তান হাই কমিশনের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যখন কোনো অভিযোগ উঠে বা পদক্ষেপ নেয়া হয়, তখন দেশটি একটি পাল্টা অপ্রীতিকর আচরণ দেখায়। ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাকে নিখোঁজ করে রাখা একটি চরম ঔদ্ধত্যের কাজ, যা কোনোভাবেই স্বাভাবিক সম্পর্কের অনুকূল নয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপ, এদেশে পাকিস্তানি নাগরিক বা কূটনীতিকদের অসৌজন্য ও অপরাধমূলক কর্মকা- এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে পাকিস্তান বরাবর যে অশিষ্ট আচরণ প্রদর্শন করে আসছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। পাকিস্তান যদি এই ধারাবাহিক ঔদ্ধত্য বজায় রাখে, এ দেশের যুদ্ধাপরাধী, দেশবিরোধীদের পক্ষ নেয়া ও মদদ দেয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে এই রাষ্ট্রটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা নিয়ে আমাদের সরকারকে ভাবতে হবে।