সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনার অভিযোগে ২৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে এরা সংশ্লিষ্ট বলে সিঙ্গাপুর নিশ্চিত করেছে। এরা জঙ্গি মতাদর্শে বিশ্বাসী একটি গোপন পাঠচক্রের সদস্য ছিলেন। আল কায়েদা নেতা আনোয়ার আল-আওলাকির মতো ব্যক্তিদের প্রচার করা মতাদর্শের চর্চা করতেন। আল কায়েদা এবং ইরাক-সিরিয়ার উগ্রপন্থি দল আইএস সশস্ত্র জিহাদের মতাদর্শেও তাদের সমর্থন ছিল। এই দুষ্টচক্রকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সিঙ্গাপুর সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে, আইনের ফাঁক-ফোকর গলিয়ে এরা যেন কোনোভাবেই বেরিয়ে যেতে না পারে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে বসে জঙ্গিবাদীদের কানো চক্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে কি না, যেভাবেই হোক, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। জঙ্গিবাদকে বাংলার মাটি থেকে সমূলে উৎখাত করতে হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
দেশে খুনোখুনির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। নৃশংস পদ্ধতিতে ঘটানো হচ্ছে এসব হত্যাকণ্ড। প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, বাসায় ঢুকে গুলি চালিয়ে হত্যা, গলা কেটে হত্যা, হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলা, পুড়িয়ে মারার মতো অনেক নৃশংসতার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকায় মা ও দুই শিশু সন্তানসহ পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে। অহরহ এই খুনের ঘটনা উদ্বেগজনক। নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া, সমাজকে অপরাধমুক্ত রাখা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত তার রহস্য উদঘাটন করা এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনাই বাঞ্ছনীয়। আমরা দেখতে চাই নারায়ণগঞ্জের ৫ খুনের হত্যাকারীদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে অভিযান চালিয়ে একটি ট্রলার থেকে সাড়ে ২৮ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় দুই ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে আরো ৫০ হাজার ইয়াবাসহ আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পুলিশের দাবি, এটি এ যাবৎ দেশে আটক সবচেয়ে বড় ইয়াবা চালান, যার বাজার মূল্য ১১৩ কোটি টাকা। আমরা লক্ষ করছি, সম্প্রতি কিছুদিন পরপরই দেশে বড় বড় ইয়াবার চালান আটক হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। তবে বহনকারী পাচারকারীরা ধরা পড়লেও গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ইয়াবার নীল দংশন থেকে পুরো দেশ তথা তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে হবে। তাই সক্রিয় এই গডফাদারদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হবে, নতুন বছরে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।