বছর ঘুরে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই আনন্দ উৎসব উদযাপনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়।
প্রিয়জনের জন্য উপহার কেনাকাটা সেরে তাই সবাই ছুটেছে বাড়ির পথে। স্বজন-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিলনের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস পথে পথে।
আনন্দের এই ক্ষণে আমাদের পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা।
ঘরে ঘরে ফিরনি-পায়েসের আয়োজন চলছে। ঈদের দিন সকালে মিষ্টিমুখ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নতুন জামা পরে দলে দলে ছুটবে ঈদগাহের দিকে। ছোট-বড়, ধনী-গরিব এক কাতারে দাঁড়িয়ে আদায় করবে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ। এরপর বুকে বুক মিলিয়ে কোলাকুলির মধ্য দিয়ে ঘোষণা করবে সৌভ্রাতৃত্বের বারতা।
এই বারতা ছড়িয়ে পড়বে সমাজের সব ক্ষেত্রে। ঈদের কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় তখন আর শুধুই মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই মিলিত হবে আনন্দ কোলাহলে।
কিন্তু দেশে জঙ্গি তৎপরতার কারণে এবারের ঈদ-আনন্দে একটা অস্বস্তির কাঁটা খচখচ করছে আমাদের মনে। সেই অস্বস্তি যেমন জঙ্গি হামলায় হতাহত মানুষের পরিবারের কথা ভেবে, তেমনি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার দিকটিও সামনে আসছে। জঙ্গিবিরোধী পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেই চলছে টার্গেট কিলিং। গুলশানের মতো নিরাপদ কূটনৈতিক এলাকায় ঘটেছে আর্টিজান ট্র্যাজেডি।
যারা ধর্মের নামে হত্যাযজ্ঞে মেতেছে, ঈদের এই ক্ষণে তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কিংবা কোনো ধরনের সহিংসতাকে সমর্থন করে না। ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষও শান্তিপ্রিয়। তারা যুগে যুগে অহিংস পথে ধর্ম রক্ষা ও প্রচার করে এসেছে। প্রতিটি ধর্মের উৎসবে শরিক হয়েছে সব ধর্মের মানুষ। তাই সর্বজনীন আনন্দের উপলক্ষ হয়ে ওঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরও।
সরকারের উচিত জনগণকে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া। দেশের মানুষের ঈদ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। এটিই এই মুহূর্তে সবার কামনা।
আমরা আশা করি, ধর্ম রক্ষার নামে যারা জঙ্গিবাদী হঠকারিতায় বুঁদ হয়ে আছে, ঈদুল ফিতরের পবিত্র ছোঁয়ায় তাদের চেতনা ফিরে আসবে। ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’- এ মহান বাণী উৎকীর্ণ পতাকা উড়বে সবখানে।