পৌরসভা নির্বাচন শুধু নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই নয়, লড়াইয়ে আছে নির্বাচন কমিশনও। তাদের প্রমাণ দিতে হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে কতটুকু সক্ষম তারা। যদিও সর্বশেষ রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচন বিতর্ক ছাড়া পার করতে পারেনি বর্তমান কমিশন। যে কারণে এই নির্বাচন তাদের অতীতের সব বিতর্ক ঘোচানোর মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আসলে নিজেদের কতটুকু দক্ষ বলে প্রমাণ দিতে পারবে নির্বাচন কমিশন? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে ৩০ ডিসেম্বর। তবে এবারই প্রথম স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে। শীতের মধ্যেও নৌকা, ধানের শীষের লড়াই বাড়তি উদ্দীপনা জুগিয়েছে ভোটার-সমর্থকদের মাঝে। এ কথা স্বীকার করতে হবে যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে এর আগে কখনো এত উত্তেজনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়ায়নি। দলীয়ভাবে নির্বাচন হচ্ছে বলেই এমন উৎসবমুখরতা তৃণমূলে। এই উৎসব ধরে রাখতে হবে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাদ সাধতে না পারে সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের একটি বাসা থেকে বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে হাতে তৈরি গ্রেনেড ও বিপুল বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনা প্রমাণ করে জঙ্গিরা এখনও সক্রিয় আছে, তারা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। রাজধানীর হোসেনি দালান এলাকায় গ্রেনেড হামলা, বগুড়ায় শিয়া মসজিদে গুলি, চুয়াডাঙ্গায় বাউল মেলায় হামলা, চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর মসজিদে ককটেল হামলা ভালো কিছুর চিহ্ন বহন করছে না। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখন থেকেই বাড়তি সতর্ক হওয়া উচিত। কাদের মদদে এখনও দেশে জঙ্গিবাদ টিকে আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে জঙ্গিবাদকে গোড়া থেকে নির্মূল করা সম্ভব হবে না।
জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে ঢাকা থেকে প্রত্যাহার করে নিল পাকিস্তান। এখানে থেমে গেলে হবে না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ, ফারিনা আরশাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কারা জড়িত ছিলেন তাদের খুঁজে বের করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, একাত্তরে পরাজিত পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র এখনও থামেনি। বরং তাদের মতো বাংলাদেশকেও ব্যর্থ ও জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করার সব ধরনের অপচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অনুসরণ করার বিকল্প নেই।