বিএনপি কি আবারও ভাঙনের মুখে? দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীর ‘হঠাৎ’ অবসরের ঘোষণা নতুন সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে দলটিকে। এমনিতেই সাংগঠনিকভাবে বিপর্যয়ে আছে বিএনপি। তার ওপর দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতাদের সরে যাওয়া ভালো কিছুর ইঙ্গিত বহন করছে না। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতার মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। আসলে বিএনপি কার নেতৃত্বে চলছে তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা দলে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এসব নিয়েও দলের জ্যেষ্ঠ অনেক নেতার মধ্যেই অস্বস্তি রয়েছে। তাছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচার-আচরণ নিয়েও অসন্তুষ্ট দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে। তবে শমসের মবিন চৌধুরীর অবসরে যাওয়ার নেপথ্যে কী, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
গুলশানে খুন হওয়া ইতালীয় নাগরিক তাবেল্লা সিজার ও রংপুরে জাপানি নাগরিক হুশি কুনিও হত্যার পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্দেহের তালিকায় বিএনপির দুজন নেতার নাম উঠে এসেছে। একজন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুম, অন্যজন সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল। যদিও বিএনপি বলছে সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তাদের সন্দেহের পেছনে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণও হাতে আছে। এর মধ্যে এম এ কাইয়ুমের ছোট ভাই মতিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদেও তাবেল্লা হত্যার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এটিও বিএনপির রাজনীতির জন্য বড় ধরনের ধাক্কা। এম এ কাইয়ুম ছিলেন সামান্য বেতনের চাকরিজীবী, রাজনীতিতে এসে যেন পেয়ে গেলেন আলাদিনের চেরাগ, রাতারাতি হয়ে উঠলেন ধনকুবের। অথচ দৃশ্যত বড় কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল না তার। তার এত সম্পদের উৎস কী, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার বন্ধের সুপারিশের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের দাবি তুলেছে সংস্থাটি! তাদের যুক্তি, একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধীরা অপরাধ করলে মুক্তিযোদ্ধারাও অনেক অপরাধ করেছে, তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি ইতিপূর্বেও নানা অবান্তর বিতর্ক তুলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা এবং কামারুজ্জামানের ফাঁসি স্থগিত রাখার সুপারিশ করে একাধিকবার অনুরোধও করেছিল তারা। এবার জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানির আগে আবারও একই ধরনের আবদার জানাচ্ছে সংস্থাটি। নতুন এই ‘আবদারও’ অতীত বিরোধিতারই অংশ। রাষ্ট্রীয়ভাবে অ্যামনেস্টির বিবৃতির সমুচিত জবাব দেওয়া উচিত।