পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছেন। তবে ঘুরে ফিরেই আলোচনায় আসছে ঐশীর এই পরিণতি কেন হলো তা নিয়ে। ঐশী মাদকাসক্ত ছিল। ইয়াবার মতো ঘাতক নেশায় বুঁদ ছিল মেয়েটি। বাবা-মা তার এই উগ্রতায় বাধা দেওয়ায় সে চেয়েছিল স্বাধীন হতে। স্বাধীন হওয়ার চিন্তা থেকেই নিজের বাবা-মাকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে খুন করেছে বলে পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে সে উল্লেখ করেছে। এখানে স্পষ্টতই মাদকের ভয়াবহতার নজির ফুটে উঠেছে।
মাদক একজন নেশাগ্রস্ত মানুষকে এভাবেই নির্মমতার দিকে ঠেলে দেয়। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে মাদক সেবনের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। অসৎ সঙ্গ, উচ্চাভিলাষী জীবনাচরণ, বিলাসী ধ্যান-ধারণা, হতাশা কিংবা বিভিন্ন মানসিক সমস্যা থেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে তরুণ প্রজন্ম। সন্তান নেশার ফাঁদে পা দেওয়ার আগে হয়ত অনেক বাবা-মা বিষয়টি আঁচ করতে পারেন না। কিন্তু যখন জানতে পারেন তখন তাদেরকে মরণনেশা থেকে ফিরিয়ে আনা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য সন্তানের সঙ্গে বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তারা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সেগুলোও খেয়াল করা জরুরি। তা না হলে সন্তর্পণে এমন অনেক ঐশীর জন্ম হবে। অথচ আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
পুলিশের ওপর একের পর এক হামলা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঊর্ধ্বতন থেকে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যরাও এনিয়ে চিন্তিত। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুলিশের মনোবলকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্যই একটি বিশেষ মহল এই ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাই হয়ে থাকে তা হলে শিগগির এদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা ভবিষ্যতে এর চেয়ে বড় ঘটনা ঘটাতে পিছপা হবে না। পাশাপাশি পুলিশের আত্মনিরাপত্তার বিষয়টি আরও জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে এই বাহিনীর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার অন্যতম আসামি নূর হোসেন এখন দেশের কারাগারে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় দুই ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাত হত্যা মামলা সবচেয়ে আলোচিত। নিহত সাতজনের পরিবারের সদস্যরা এখন তাকিয়ে আছে বিচারের দিকে। সবারই প্রত্যাশা ন্যায়বিচার।