একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তান একের পর এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে চলেছে। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পর তারা এর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছিল। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর তারা শুধু উদ্বেগই প্রকাশ করেনি, ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে একটি স্বাধীন- সার্বভৌম দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ায় অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না পাকিস্তান। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষাবলম্বনের সঙ্গে সঙ্গে তারা মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজেদের দায়ও অস্বীকার করেছে। এটা একটা চরম নির্লজ্জ মিথ্যাচার। চাইলেই এ ঘটনাগুলো ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। পাকিস্তান যতই অস্বীকার করুক, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় তাদের নিতেই হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যের, কূটনৈতিক নিয়মবহির্ভূত আচরণের, একাত্তরে সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে মিথ্যাচারের সমুচিত জবাব দিতে হবে বাংলাদেশকে। পাকিস্তান যদি গণহত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চায় তাহলে ভালো, আর যদি এভাবে তাদের ঔদ্ধত্য বজায় রাখে, এ দেশের যুদ্ধাপরাধী, দেশবিরোধীদের পক্ষ নেওয়া, মদদ দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে এই রাষ্ট্রটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা নিয়ে আমাদের সরকারকে ভাবতে হবে।
৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৫টি পৌরসভায় একদিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সারা দেশে নির্বাচনী আমেজ বইছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা জনসংযোগ শুরু করেছেন। এই নির্বাচনের আলাদা একটা তাৎপর্য আছে। প্রায় ৯ বছর পর নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের ভোটের লড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারেই প্রথম পৌরসভা নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে। তবে শুধু মেয়র প্রার্থীরাই দলীয় প্রতীকে লড়বেন, কাউন্সিলর ও অন্যরা আগের মতো নির্দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। আছে নির্দলীয় মেয়র প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব নির্মোহভাবে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনীত করা, ফলাফল পক্ষে নিতে কোনো অসদুপায় অবলম্বন না করা, সম্প্রীতি বজায় রাখা, আচরণবিধি মেনে চলা। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাজ হবে প্রচারণায় সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা। সংশ্লিষ্ট সর্বমহলের দায়িত্বশীলতায় একটি সুন্দর সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হতে পারে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি মর্যাদাপূর্ণ ম্যাগাজিনে বিশ্বের সেরা ১০০ জন চিন্তাবিদের অন্যতম হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ওঠে এসেছে। বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের তালিকায় ‘ডিসিশন মেকার্স’ হিসেবে তালিকায় স্থান পাওয়া ১৩ জনের মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য ‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনে বিশ্বের চিন্তাবিদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিনি। এই অর্জন শুধু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর নয়, পুরো জাতির। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন। কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি আরো এগিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা।