যদি প্রশ্ন করা হয় এই মুহূর্তে ঢাকা শহরের প্রধান সমস্যা কী? সহজে বলা যায়, যানজট। নগরবাসীর নিত্যদিনের জীবনযাত্রার বড় বাধা এটি। যানজটের কবলে পড়ে প্রতিদিন কত কর্মঘণ্টা অপচয় হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান খুঁজে পাওয়া কঠিন হলেও ক্ষতি অনুমান করতে খুব হিসাব করতে হয় না। মোটাদাগে যানজট দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ থেকে মুক্ত নয় মোট দেশজ উৎপাদনও (জিডিপি)। নগরবিদরা বারবারই বলে আসছেন, যানজট সমস্যার একটি সুষ্ঠু সমাধান করা গেলে ঢাকার নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরবে। কর্মক্ষেত্রেও আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা যানজট সমস্যা সমাধানে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়েছে উড়াল সেতু, এখনও হচ্ছে। সরু রাস্তা প্রশস্ত করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই স্বস্তি মিলছে না। এর মূলে রয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ন।
রাজধানী হিসেবে ঢাকার গুরুত্ব অনেক। গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত এমনকি চিকিৎসা-সেবা ঢাকাকেন্দ্রিক হয়ে ওঠায় এই গুরুত্ব আরও বেড়েছে। নানা কাজে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষকে ঢাকায় আসতে হয়। ভয়াবহ যানজটের পেছনে এটিও অন্যতম কারণ বটে। এজন্য বিভিন্ন সময় রাজধানী বিকেন্দ্রীকরণের দাবি উঠেছে। অথচ এ নিয়ে আলোচনা বেশিদূর এগোয়নি। সময় এসেছি বিষয়টি ভেবে দেখার। ঢাকার যানজট নিরসনে প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে নতুন একটি পদ্ধতির সন্ধান দিয়েছেন প্রকৌশলী কামরুল হাসান। তার উদ্ভাবিত ইউলুপ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে। তবে এখনও পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন হয়নি। ইউলুপ পদ্ধতি অনুসরণ করে ঢাকার যানজট স্বস্তিকর পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখতে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা যেতে পারে।
ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের চূড়ান্ত অর্জন এসেছিল এই মাসেই। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত বিহঙ্গের উল্লাসে মেতেছিল বাঙালি জাতি। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা এখনও অব্যাহত আছে। চার দশক বয়সী এই ভূখ- এখনও শত্রুমুক্ত হয়নি। একাত্তরের ঘাতক-দালালরা আজও নানা ষড়যন্ত্রে সক্রিয়। এদের ব্যাপারে রাষ্ট্র এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদের মূলোৎপাটনের মধ্য দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত আরো শক্তিশালী করতে হবে। এই দায়িত্ব নিতে হবে তরুণ প্রজন্মকেই। এবারের বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।