আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনে দলে বিশুদ্ধ রক্তের সঞ্চালন হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে আমরা স্লোগান দিচ্ছি প্রযুক্তির সঙ্গে নেতৃত্বে সমন্বয়ের। ট্রেডিশনের সঙ্গে টেকনোলজির সমন্বয় করে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলনে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বিশুদ্ধ রক্তের সঞ্চালন করবেন। অনেক পার্টি কত তরুণকে নেতৃত্বে দিয়েছেন সে বড়াই অনেকেই করেন। দূষিত রক্ত সঞ্চালন করে লাভ নেই। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন আওয়ামী লীগে হবে। নতুন রক্ত মানে বিশুদ্ধ রক্ত। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।’
সৈয়দ শামসুল হকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমাদের নেত্রীর অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এবং প্রিয় ব্যক্তি। তাঁকে স্বাধীনতা পদক দিতে গিয়ে নেত্রী বলেছিলেন, স্বাধীনতা পদক দিতে পেরে আমি নিজে সম্মানিত বোধ করছি।’
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা মিটিং যখন করবেন, একটু সাজিয়ে নেবেন। কারা কারা বক্তব্য দেবেন, কে কতক্ষণ বলবেন-এই বিষয়গুলোর আলাপ-আলোচনার দরকার আছে। আপনি আমাকে প্রধান অতিথি করলেন, আমি আসলাম। মাগরিবের আজান হয়ে গেছে, এখন আমি কী বলবো? এখন কি বক্তব্য দেয়া আমার সমীচীন? এর আগেও আমি আপনাদের মিটিংয়ে আসিনি। তাহলে প্রধান অতিথি হয়ে আমার লাভ কী হলো? এই ট্রেডিশনগুলো যদি বাদ না দেন, এই ট্রেডিশন থেকে যদি বেরিয়ে না আসেন তাহলে পার্টি এগুবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন-অগ্রগতিতে নেত্রী ডিজিটালাইজেশন করেছেন। আমাদের আচার-আচরণে ডিজিটাল হওয়ার প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য সিনিয়রদের সম্মান করা, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা। আচার-আচরণে এনালগ হতে হবে। উন্নয়ন-অর্জন ডিজিটালে থাক, আমাদের আচার-আচরণ এনালগ থাকুক।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। ক্ষমতা অহংকার কেউ দেখাবেন না। ক্ষমতা সাময়িক। এটা মনে করেন বলেই প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিনয়ের জন্য তিনি এগিয়ে। আমি তো বলবো বাংলাদেশে গত ৪১ বছরে সব চেয়ে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা। সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।’
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বীরকন্যা শেখ হাসিনা দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে, ক্ষমতার রাজনীতিতে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ তার জীবনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাহসী সিদ্ধান্ত। এই পরীক্ষা অগ্নিপরীক্ষা। ৩৮ শতাংশ পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। আজকে সারা দুনিয়া শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আরেক ধাপ উপরে নিয়ে গেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৩০ হাজার কোটি টাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ নদী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন আমরাও পারি। বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে চোর আখ্যা দিয়ে পদ্মা সেতু থেকে চলে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা আজ প্রমাণ করে দিয়েছেন আমরা চোর নই, আমরা বীরের জাতি।’
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কাদের বলেন, ‘৩০ হাজার কোটি টাকায় যে নেত্রী পদ্মা সেতু করতে পারেন তিনি মরে গেলেও তাঁর এই লিগাসি কোনো দিনও হারিয়ে যাবে না। পলিটিক্যাল লিগাসির জন্য বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। যতদিন লাল-সবুজের পতাকা উড়বে, যতদিন আমার সোনার বাংলা জাতীয় সঙ্গীত ধ্বনিত হবে অগণিত বাঙালির হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে শেখ হাসিনার ৭০ তম জন্মদিনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু কন্যা ৭০ বছর উন্নয়ন-অর্জনে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই লিগাসির কোনো দিনই মৃত্যু হবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।