চীনকে নিজেদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু মনে করে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি। তাই গত বছর চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন তার সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাক্ষাৎ হবে বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। আসছে মধ্য অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য আগেভাগে তৎপর হয়েছে বিএনপি।
ইতিমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের চীনা দূতাবাসে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ফিরতি চিঠিতে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে আসছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ঢাকা-বেইজিং কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চলতি বছরে চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের ঢাকা সফরের আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরে। বছরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেন। সেই চিঠি এবং কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সফরটি নির্ধারিত হয়।
শি জিন পিং হচ্ছেন চীনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি, যিনি বাংলাদেশ সফর করছেন। এর আগে ১৯৮৬ সালে চীনের আরেক রাষ্ট্রপতি লি শিয়ানিয়ান ঢাকা সফর করেছিলেন।
এদিকে চীনা প্রেসিডেন্টের সফরটি সফল করতে সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। সেখানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সার্বিক সম্পর্ক পর্যালোচনা হয়। একই সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব পায় নিরাপত্তার বিষয়টি। এই সফরের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় বৈঠকে।
চীনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে দশম সংসদ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রীয় প্রটোকল হারানো বিএনপি প্রথম দিকে আসা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিদেশি নেতাদের সাক্ষাৎ পেলেও পরবর্তী সময়ে সময়ে এর ব্যতিক্রম ঘটে। তাতে দলটির মধ্যে আন্তর্জাতিক যোগাযোগে ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে সম্প্রতি সফর করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বিএনপি-প্রধানের বৈঠকের পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে বিএনপিতে।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও গত বছর মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসা চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ানদং খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করেই চলে যান। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন বিএনপির এমন নেতাদের তখন তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য এবার আগেভাগেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
দিন দুয়েক আগে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসে গিয়ে দলের একটি চিঠি দেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। পরে চীনের দূতাবাসের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎ হতে পারে এমন আশ্বাসের কথা শোনা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবিহ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি সম্পর্কে হ্যাঁ বা না কিছুই বলেননি। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জানেন।
আর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সময়মতো সব জানতে পারবেন।’