পঁচিশ বছরের যুবক রাজেস(ছদ্মনাম)। ভারতের কোনো এক শহরে তার বসবাস। তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের মানসিক রোগ ‘অ্যাটেনশন ডিফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার(এডিএইচডি)’-এ আক্রান্ত। এই ধরনের রোগের কারণে নারীদের প্রতি অস্বাভাবিক যৌন চাহিদা তৈরি হয়। বর্তমানে রাজেস চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছুটা ভালো আছেন। কিন্তু এখনো এই বিষয়ে এলোমেলো চিন্তাভাবনা তার মনে প্রায়ই উঁকি দেয়। সম্প্রতি ভারতের প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের ডা: পারুল টাঙ্গের কাছে এই সমস্যার সমাধান চেয়েছেন রাজেস। চেয়েছেন সাহায্যও। চলুন বাকিটা জেনে নেয়া যাক রাজেসের নিজের লেখাতেই।
রাজেস বলেন, ‘অনেক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে ইচ্ছে হয়। এমনকী, আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর সঙ্গেও অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জড়ানোর ইচ্ছা জাগে আমার ভেতর। কিন্তু বন্ধু হিসেবে তাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করার সত্বেও এই আকাঙ্খা তৈরি হয় আমার মধ্যে।’
রাজেস আরও বলেন, ‘নারীদের দেখলেই আমার যৌন চাহিদা তৈরি হয়। আমার দৃষ্টি সবসময় নারীদেহ খুঁজে। আমার এমন অবস্থা হয় যে, অন্য কোনো দিকে মনোযোগ দিতে পারি না।’
‘চার বছর ধরে একটি মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক চলছে। তাকে ভীষণ ভালোবাসি। আমার ‘মেয়েবন্ধুটি’ স্থূলকায়। কিন্তু আমার ইচ্ছে হয় কোনো রোগা নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক(এই ধরনের আচরণ বিডিএসএম নামে পরিচিত) করতে। বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক জড়াতে আমার মেয়েবন্ধুটির আপত্তি রয়েছে। তার সিদ্ধান্তের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু এই নৈতিক দ্বিধা প্রায়ই আমাকে আনুগত্যের ব্যাপারে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ বিষয়টি কি অন্যান্য পুরুষদের ক্ষেত্রে ঘটে নাকি একমাত্র আমিই বিকারগ্রস্ত? দয়া করে সাহায্য করুন।’
ভারতের মুলুন্দ ফর্টিস হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: পারুল টাঙ্গ বলেন, ‘আপনার কথা শুনে হচ্ছে আপনি এক ধরনের অবসেশনে(আসক্তি) ভুগছেন। যৌনতা নিয়ে অত্যাধিক চিন্তা মানুষের মধ্যে আসতেই পারে। কল্পনার জগতে বিচরণ করা নারী-পুরুষের জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু এই ব্যাপারটি যখন অনেক সময় ধরে চলে সমস্যা সেখানেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে আপনার সামাজিক এবং পেশাগত অধঃপতন হতে পারে। আর এতেই অবসেশন তৈরি হয়। তাই আপনি যে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তা পুনর্বিবেচনা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’