বিজ্ঞানীরা সফলভাবে ‘ফ্যাট জিন’ দমন করার ওষুধ আবিষ্কারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সম্প্রতি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই সাফল্য পাওয়া গেছে। শরীরের চর্বি কমানোর এই ওষুধ প্রয়োগ করে পরীক্ষাগারে ফল পাওয়া গেছে। এই আবিষ্কারের মধ্যদিয়ে অদূর ভবিষ্যতে মানুষের দেহের ওজন কমানোর ওষুধ তৈরিতে নতুন আশার সঞ্চার হলো।
পূর্ববর্তী গবেষণায় র্যাপ১(Rap1) নামে এক ধরনের জিনের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা এবং এটি মস্তিষ্কে থাকে। এই জিনের সঙ্গে বিপাক প্রক্রিয়া, ওজন বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত খাওয়ার যোগসূত্র রয়েছে।
যাদের মস্তিষ্কে এই জিন যত বেশি থাকে তাদের উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা তত বেড়ে যায়। যাদের কম থাকে তাদের উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের ইচ্ছা কম থাকে। ফলে শরীরও থাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। তবে এখনো বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। বিজ্ঞানীরা সরাসরি এর যোগসূত্র খুঁজে পাননি। তবে গবেষণা চলছে পুরোদমে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বেইলর এবং টেক্সাস শিশু হাসপাতালের একদল গবেষক অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধের উপায় বের করতে গিয়ে প্রথমে ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালান। মাত্র একটি ওষুধ ব্যবহার করে তারা সফলতা পেয়েছেন। ওজন কমানোর এই যুগান্তকারী গবেষণা ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে।
ইঁদুরের ওপর এই জিনের ভূমিকা বের করতে বিজ্ঞানীরা হাইপোথ্যালামাসের(মস্তিষ্কের একটি অংশ। যা পুরো শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে) নিউরন গ্রুপে থাকা র্যাপ১ জিনকে শনাক্ত করেন।
বিজ্ঞানীরা কয়েকটি ইদুরকে ধরে দুটি গ্রুপে ভাগ করেন। এদের মধ্যে যেসব ইদুরে জেনেটিক্যালি র্যাপ১ জিনের উপস্থিতি কম তাদেরকে একটি গ্রুপে রাখা হয়। দ্বিতীয় গ্রুপে রাখা হয় যাদের র্যাপ১ এর উপস্থিতি বেশি। এরপর বিজ্ঞানীরা দুটি গ্রুপকেই উচ্চ চর্বিযুক্ত ডায়েট দেন।
পরে দেখা যায় প্রথম গ্রুপের ইদুরগুলোর ওজন তুলনামূলক কম বেড়েছে এবং দ্বিতীয় গ্রুপের প্রতিটি ইদুরের ওজন তুলনামূলক বেশি বেড়েছে। গবেষকরা বলছেন, ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ফ্যাট জিন অর্থাৎ র্যাপ১ কমিয়ে আনা এবং এটা করতে পারলেই মানুষের মধ্যে উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে আসবে।