প্রকাশ : ২৫ আগস্ট, ২০১৬ ০৭:৩০:৫৬আপডেট : ২৫ আগস্ট, ২০১৬ ০৯:৪৬:০০
বৃক্ষমানব রিপনের রোগও বাজনদারের মতো
আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
ঠাকুরগাঁওয়ের শিশু রিপন বাবুর রোগ বৃক্ষমানব আবুল বাজনদারের মতো। তার চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে গঠন করা হতে পারে চিকিৎসা বোর্ড।
বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
বার্ন ইউনিটের ষষ্ঠ তলার শিশু ওয়ার্ডের ৬২১ নম্বর বিছানায় চিকিৎসাধীন সাত বছরের শিশু বৃক্ষমানব রিপন বাবু। তার সঙ্গে আছেন বাবা মহেন্দ্র রাম ও মা গোলাপী রানী।
রিপনের বাবা মহেন্দ্র রাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, জন্মের প্রায় তিন মাস পর থেকে এ রোগ দেখা দেয় রিপনের। এখন তার বয়স সাত বছর। স্থানীয়ভাবে নানা জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু সুস্থ করতে পারেননি চিকিৎসকরা। আর্থিক অভাবের কারণে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছিলেন না বলে জানান তিনি।
দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা মহেন্দ্র জুতা সেলাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
ঢাকা মেডিকেলে ছেলেকে নিয়ে আসার ব্যাপারে মহেন্দ্র রাম বলেন, “আমার বাড়িতে হৃদয় নামের অল্প বয়সী এক সাংবাদিক যায়। তার মাধ্যমেই আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সন্ধান পাই। এখানে এসে আমি স্বস্তিবোধ করছি। আমার আশা এখানে আমার ছেলে সুস্থ হয়ে উঠবে।”
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কেটগাঁও গ্রামে ‘বৃক্ষমানব’ এই শিশুর সন্ধান মেলে। কেটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র রিপন তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট।
রিপনের মা গোলাপী রাণী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘স্থানীয় চিকিৎসক দেখাইছি, কিন্তু সুস্থ হওয়ার নাম নাই। চিকিৎসকরা বলছে ঢাকা বা ভারত নিয়ে যান। কিন্তু আমার তো টাকাই নাই। কেমনে যাব?’
গত ২১ আগস্ট দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় বৃক্ষ শিশু রিপন বাবু।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশু রিপনের এ রোগকে হাইপারকেরাকোসিস নামের এক ধরনের চর্মরোগ বলা হয়। ধারণা করা হয়, এটা নিউরনসংক্রান্ত রোগ। এ জাতীয় রোগীদের হাত-পা গাছের শেকড়ের মতো হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ওর (রিপন) অবস্থাও আবুল বাজনদারের মতো। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না। আগামী সপ্তাহে হয়তো বোর্ড গঠন করা হবে।
খুলনার পাইকগাছার আবুল বাজানদার নামের এক যুবক হাতে-পায়ে ‘শিকড়ের মতো’ আঁচিল নিয়ে ‘বৃক্ষমানব’ নামে দেশজুড়ে আলোচিত হয়ে ওঠেন। পরে তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসে সরকার। ৩০ জানুয়ারি থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। নয়বার অস্ত্রোপচারের পর তার অবস্থা এখন বেশ ভালো। তার দুই হাতের ১০ কেজি আঁচিলের কিছুই এখন আর নেই। পায়ের অবস্থাও তা-ই।